Logo
Logo
×

শেষ পাতা

এস আলম পরিবারের ৮১৩৩ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

এবার এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মো. সাইফুল আলম, তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা আট হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন। দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, দুদকের উপ-পরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হকের শেয়ার অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। আদালত শুনানি শেষে সাইফুল আলম, তার পরিবার ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ২২৭টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নামে থাকা শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন। দুদকের আবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে একটি টাস্কফোর্স টিম গঠন করা হয়েছে। অনুসন্ধানকালে দেখা যায়, এস আলম গ্রুপ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে বেনামে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ করেছেন। অনুসন্ধানকালে বিভিন্ন সূত্র হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা অস্থাবর সম্পদসমূহ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। এসব অস্থাবর সম্পদ ও সব মুনাফা জরুরি ভিত্তিতে অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ দুই হাজার ২৭৪টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য পাঁচ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। এছাড়া গত ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত। তার আগে গত ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের তিন হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন একই আদালত। এছাড়া গত ৭ অক্টোবর এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

বিপুল অর্থ পাচার-এবার এস আলমকে দুদকে তলব : বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসাবে আলোচিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এছাড়া এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল আলম এবং এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোরশেদুল আলমকেও তলব করা হয়েছে। তাদেরকে ৫ মার্চ দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় এস আলমের ছেলে এবং ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলমকে আসামি করে তিনটি মামলা করা হয়েছে।

জানা যায়, সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সাইপ্রাস ও অন্যান্য দেশে এক বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।

দুদকের উপপরিচালক আবু সাঈদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে সাইফুল আলম ও মোরশেদুল আলমকে এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডের অনুকূলে ৮৫০ কোটি টাকা ঋণ বা বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে। চিঠিতে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট এবং টিআইএনসহ প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র সঙ্গে আনতে বলা হয়েছে। এর আগে এই অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসাবে ইসলামী ব্যাংকসংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

এছাড়া একই অভিযোগে ইসলামী ব্যাংকের ২৭ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ১ কর্মকর্তাকে আগামী ৬, ৯, ১০ ও ১১ মার্চ তলব করেছে দুদক। ৬ মার্চ যাদের তলব করা হয়েছে তারা হলেন-সাবেক এসভিপি ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখা প্রধান মোহাম্মদ কাইসার আলী, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদ হোসেন খান, সাবেক সিনিয়র অফিসার মো. মিজানুর রহমান, মো. সোহরাব হোসেন, সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মোহন মিয়া, সাবেক ইভিপি মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম ও সাবেক সদস্য মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ। ৯ মার্চ যাদের তলব করা হয়েছে তারা হলেন-ব্যাংকটির সাবেক সদস্য আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া, মোহাম্মদ আলী, মো. শফিকুর রহমান, মো. নাজিবুর রহমান, মো. শামসুজ্জামান, মো. আব্দুস সাদেক ভূঁইয়া ও রাফি আহমেদ বেগ।

এছাড়াও সাবেক সদস্য মো. হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া, মো. মাহবুব-উল-আলম, ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, সাবেক পর্যবেক্ষক জিএম বাংলাদেশ ব্যাংক মো. ইস্কান্দার মিয়া, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক বারিস্টার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, হুমায়ুন বখতিয়ার ও মো. আব্দুস সালামকে ১০ মার্চ তলব করা হয়েছে। তলবের তালিকায় আরও আছেন ইসলামী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক এএইচজি মহিউদ্দিন, মো. আবুল হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মো. ইস্কান্দার আলী খান, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর এনআরএম বোরহান, পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মুস্তাফা আনোয়ার, সাবেক মেম্বার সেক্রেটারি প্রফেসর ড. আবু বকর রফিক ও সাবেক ডিএমডি মোহাম্মদ আবুল বাশার।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম