শীতকালে গোসলের সহজ বুদ্ধি
jugantor
শীতকালে গোসলের সহজ বুদ্ধি

  হানিফ ওয়াহিদ  

১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:২৮:৫৩  |  অনলাইন সংস্করণ

সাবানও এত তাড়াতাড়ি গলে না, যত তাড়াতাড়ি আমি সুন্দরী মেয়েদের কথায় গলে যাই। সেদিন ফ্রেন্ডলিস্টের এক সুন্দরী মেয়ে আমাকে ফোন দিয়ে বলল, ‘ভাইজান, আমি কি একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি?’

‘অবশ্যই পারেন। আমি দুনিয়ার কারও কথাই শুনি না, শুধু সুন্দরী মেয়েদের কথা অতি মনোযোগ দিয়ে শুনি।’

‘আপনি নাকি বই লিখেছেন?’

শরম পেয়ে বললাম, ‘এই আর কী!’

‘আপনার বইয়ের নাম কী?’

‘শালিকা নিয়ে দুলাভাই উধাও।’

মেয়েটা অবাক হয়ে বলল, ‘কার শালিকা নিয়ে দুলাভাই উধাও হইছে? আপনার? হায় আল্লাহ!’

মিনমিনে গলায় বললাম, ‘‘না রে আপা! আমার বইয়ের নাম ‘শালিকা নিয়ে দুলাভাই উধাও’!’’

আরেকদিন অন্য এক মেয়ে লিখল, ‘ভাইজান, একটু কথা বলতে পারি?’

আমি লিখলাম, ‘লে হালুয়া! আপনি একটু কথা বলতে পারেন না বেশি কথা বলতে পারেন, আমি কী করে জানব? আমি কি এর আগে আপনার সঙ্গে কথা বলেছি?’

‘না মানে ভাইজান, আমি আপনার বন্ধু হতে চাই।’

‘মর জ্বালা! আপনি তো আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টে আছেনই। এতদিন কি তবে আমার শত্রু হয়ে ছিলেন?’

বুঝলাম না, মেয়েটা কেন দুঃখের ইমোজি পাঠাল। তারপর লিখল, ‘আমরা ভালো বন্ধু হতে চাই।’

মেয়ের কথা শুনে তার প্রোফাইল চেক করলাম। সেই লেভেলের সুন্দরী। সঙ্গে সঙ্গে মেসেজ দিলাম, ‘আপা, আমি রাজি। আসেন, লোকজন সাক্ষী রেখে আমরা বন্ধু হই। নাকি কাজি ডেকে বন্ধু হবেন?’

ভাবলাম মেয়ে আমাকে এবার লাভ ইমোজি পাঠাবে। ও মা! এই মেয়ে আমাকে ব্লক মেরে দিল!

আরেক মেয়ে কথা প্রসঙ্গে একদিন বলল, ‘সবসময় মানুষকে ভালোবাসবেন। এটা পুণ্যের কাজ।’

সুন্দরী মেয়ের কথা তো আর ফেলে দিতে পারি না। আমি ভালোবাসতে শুরু করলাম। ও মা! মেয়ের কথা শুনে তো আমার সংসার ভাঙার জোগাড়। বউ পারে তো আমার হাত-পা ভেঙে হাতে ধরিয়ে দেয়!

আমি সেই মেয়েকে দুঃখী দুঃখী গলায় লিখলাম, ‘বইন রে, মানুষকে ভালোবাসা পুণ্যের কাজ হলেও, বউ তো পছন্দ করে না!’

সেই মেয়ে লিখল, ‘ভাই, আপনার বউ কি পুলিশের মেয়ে? সে কী করে?’

আমি একটা দুঃখের ইমোজি পাঠিয়ে লিখলাম, ‘কী আর করবে, খালি সন্দেহ করে!’

‘ধুর মিয়া! বউকে নিয়ে কোথাও থেকে বেড়িয়ে আসেন। দেখবেন বউ খুশি হয়ে গেছে।’

আমি আঁতকে ওঠে বললাম, ‘না না, আমি ভয় পাই।’

‘কাকে ভয় পান? বউকে?’

‘আরে নাহ! গোসলকে। যা শীত! বাইরে কোথাও বেড়াতে গেলে গোসল করে যেতে হবে। আমি সপ্তাহে একদিন গোসল করি। বউ তো প্রতিদিন গরম পানি করে দেয় না।’

মেয়েটা বিরক্ত হয়ে লিখল, ‘ধুর মিয়া! আপনি এতো হাঁদারাম কেন? প্রতিদিন পানি গরম করার দরকারটা কী? একদিন বেশি করে পানি গরম করে ফ্রিজে রেখে দেবেন। ওখান থেকে প্রতিদিন ব্যবহার করবেন। এ যুগে একটু চালাক না হলে চলবে?’

মনে মনে ভাবলাম, আসলেই তো আমি একটা হাঁদারাম। এই সহজ বুদ্ধিটা এতদিন মাথায় আসে নাই কেন!

শীতকালে গোসলের সহজ বুদ্ধি

 হানিফ ওয়াহিদ 
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:২৮ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ

সাবানও এত তাড়াতাড়ি গলে না, যত তাড়াতাড়ি আমি সুন্দরী মেয়েদের কথায় গলে যাই। সেদিন ফ্রেন্ডলিস্টের এক সুন্দরী মেয়ে আমাকে ফোন দিয়ে বলল, ‘ভাইজান, আমি কি একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি?’

‘অবশ্যই পারেন। আমি দুনিয়ার কারও কথাই শুনি না, শুধু সুন্দরী মেয়েদের কথা অতি মনোযোগ দিয়ে শুনি।’

‘আপনি নাকি বই লিখেছেন?’

শরম পেয়ে বললাম, ‘এই আর কী!’

‘আপনার বইয়ের নাম কী?’

‘শালিকা নিয়ে দুলাভাই উধাও।’

মেয়েটা অবাক হয়ে বলল, ‘কার শালিকা নিয়ে দুলাভাই উধাও হইছে? আপনার? হায় আল্লাহ!’

মিনমিনে গলায় বললাম, ‘‘না রে আপা! আমার বইয়ের নাম ‘শালিকা নিয়ে দুলাভাই উধাও’!’’

আরেকদিন অন্য এক মেয়ে লিখল, ‘ভাইজান, একটু কথা বলতে পারি?’

আমি লিখলাম, ‘লে হালুয়া! আপনি একটু কথা বলতে পারেন না বেশি কথা বলতে পারেন, আমি কী করে জানব? আমি কি এর আগে আপনার সঙ্গে কথা বলেছি?’

‘না মানে ভাইজান, আমি আপনার বন্ধু হতে চাই।’

‘মর জ্বালা! আপনি তো আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টে আছেনই। এতদিন কি তবে আমার শত্রু হয়ে ছিলেন?’

বুঝলাম না, মেয়েটা কেন দুঃখের ইমোজি পাঠাল। তারপর লিখল, ‘আমরা ভালো বন্ধু হতে চাই।’

মেয়ের কথা শুনে তার প্রোফাইল চেক করলাম। সেই লেভেলের সুন্দরী। সঙ্গে সঙ্গে মেসেজ দিলাম, ‘আপা, আমি রাজি। আসেন, লোকজন সাক্ষী রেখে আমরা বন্ধু হই। নাকি কাজি ডেকে বন্ধু হবেন?’

ভাবলাম মেয়ে আমাকে এবার লাভ ইমোজি পাঠাবে। ও মা! এই মেয়ে আমাকে ব্লক মেরে দিল!

আরেক মেয়ে কথা প্রসঙ্গে একদিন বলল, ‘সবসময় মানুষকে ভালোবাসবেন। এটা পুণ্যের কাজ।’

সুন্দরী মেয়ের কথা তো আর ফেলে দিতে পারি না। আমি ভালোবাসতে শুরু করলাম। ও মা! মেয়ের কথা শুনে তো আমার সংসার ভাঙার জোগাড়। বউ পারে তো আমার হাত-পা ভেঙে হাতে ধরিয়ে দেয়!

আমি সেই মেয়েকে দুঃখী দুঃখী গলায় লিখলাম, ‘বইন রে, মানুষকে ভালোবাসা পুণ্যের কাজ হলেও, বউ তো পছন্দ করে না!’

সেই মেয়ে লিখল, ‘ভাই, আপনার বউ কি পুলিশের মেয়ে? সে কী করে?’

আমি একটা দুঃখের ইমোজি পাঠিয়ে লিখলাম, ‘কী আর করবে, খালি সন্দেহ করে!’

‘ধুর মিয়া! বউকে নিয়ে কোথাও থেকে বেড়িয়ে আসেন। দেখবেন বউ খুশি হয়ে গেছে।’

আমি আঁতকে ওঠে বললাম, ‘না না, আমি ভয় পাই।’

‘কাকে ভয় পান? বউকে?’

‘আরে নাহ! গোসলকে। যা শীত! বাইরে কোথাও বেড়াতে গেলে গোসল করে যেতে হবে। আমি সপ্তাহে একদিন গোসল করি। বউ তো প্রতিদিন গরম পানি করে দেয় না।’

মেয়েটা বিরক্ত হয়ে লিখল, ‘ধুর মিয়া! আপনি এতো হাঁদারাম কেন? প্রতিদিন পানি গরম করার দরকারটা কী? একদিন বেশি করে পানি গরম করে ফ্রিজে রেখে দেবেন। ওখান থেকে প্রতিদিন ব্যবহার করবেন। এ যুগে একটু চালাক না হলে চলবে?’

মনে মনে ভাবলাম, আসলেই তো আমি একটা হাঁদারাম। এই সহজ বুদ্ধিটা এতদিন মাথায় আসে নাই কেন!
 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন