তরুণরাই সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার: ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে রিতা রায়
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০৫ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
‘শিক্ষা সুযোগের দরজা খুলে দেয়, কিন্তু সমাজে প্রকৃত পরিবর্তন আনে তরুণরাই’— এমন অনুপ্রেরণামূলক বার্তায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখলেন মাস্টারকার্ড ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রিতা রায়।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর ২০২৫) রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রধান ক্যাম্পাসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তা ও নেতৃত্বের আহ্বান জানান।
রিতা রায় বলেন, ‘তোমরা কি নিজেদের কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে নতুন পথে যাওয়ার মতো সাহসী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত? সমাজে পরিবর্তন আনতে হলে সেই সাহসটাই সবচেয়ে বড় শক্তি।’ তিনি তরুণদেরকে প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে সৃজনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গিতে কাজ করার পরামর্শ দেন।
মাস্টারকার্ড ফাউন্ডেশনের এই প্রধান নির্বাহীর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সফর করে। সফরকালে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং তরুণ নেতৃত্ব, উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “নিজেদের ভবিষ্যৎ নিজেরাই গড়ে তুলতে হবে— কল্পনাশক্তি, নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধ দিয়েই পরিবর্তনের যাত্রা শুরু হয়।”
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রশংসা করে রিতা রায় বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় বৈশ্বিক নাগরিকত্ব, সামাজিক উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার চমৎকার উদাহরণ। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও মাস্টারকার্ড ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য এক— তরুণদের ক্ষমতায়ন।’
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘এই সফর দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ লক্ষ্য ও সহযোগিতার প্রতীক। শিক্ষা, উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মাধ্যমে তরুণদের ক্ষমতায়নই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর আরশাদ মাহমুদ চৌধুরী, ট্রেজারার আরিফুল ইসলাম এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শামেরান আবেদ।
মাস্টারকার্ড ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি দলে ছিলেন চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার ডগ কাসামবালা, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও গ্লোবাল কন্ট্রোলার লিটসা পপোভিচ, চিফ প্রোগ্রাম অফিসার পিটার মাতেরু এবং পিএএনএ প্রোগ্রামের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. সেগেনেট কেলেমু।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মনজুর হাসান ওবিই, বিআইজিডির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইমরান মতিন, বিআইইডির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. ইরাম মরিয়াম, ব্র্যাক জেমস পি. গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথের ডিন ড. লরা রাইখেনবাখ এবং অফিস অব কমিউনিকেশন্সের ডিরেক্টর খায়রুল বাশার।
প্রতিনিধি দলটি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির নতুন, পরিবেশবান্ধব ‘ইনার সিটি ক্যাম্পাস’ ঘুরে দেখেন। টেকসই ও জ্বালানি সাশ্রয়ী অবকাঠামো ব্যবহারের কারণে এই ক্যাম্পাসকে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণের এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মাস্টারকার্ড ফাউন্ডেশন একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা, যা আফ্রিকা ও কানাডার আদিবাসী যুবকদের উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানে সহায়তা করে। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য হলো তরুণদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ ও অর্থবহ কর্মসংস্থান তৈরি করা।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি জানায়, মাস্টারকার্ড ফাউন্ডেশনের সঙ্গে এই সহযোগিতা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা—এসডিজি-৪ (মানসম্মত শিক্ষা), এসডিজি-৮ (সম্মানজনক কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি), এসডিজি-১০ (বৈষম্য হ্রাস) এবং এসডিজি-১৭ (অংশীদারিত্বের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জন)— বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীকারকে আরও শক্তিশালী করবে।
