জাবিতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের মহড়া, সাংবাদিকদের ওপর হামলা
জাবি প্রতিনিধি
২৩ মার্চ ২০২৩, ০৯:৫২:২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছে। এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হল থেকে রড, রামদা, লাঠি, ছুরিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলার উদ্দেশ্যে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে বটতলায় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তাদের বাধা দেন। সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এদিকে হামলার ঘটনায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক একুশে টেলিভিশন অনলাইন ও দ্য বাংলাদেশ টুডের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জুবায়ের আহমেদ।
অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, বুধবার রাত পৌনে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার চার রাস্তার মোড়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থীরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পদধারী নেতা হাসান মাহমুদ ফরিদ (পরিবেশ বিজ্ঞান, ৪৪ ব্যাচ), আবুল কালাম আজাদ (মার্কেটিং, ৪৪ ব্যাচ) ও আব্দুল্লাহ আল ফারুক ইমরানের (ইতিহাস, ৪৪ ব্যাচ) নেতৃত্বে লাঠি, রামদা, চাপাতি, রড, কাচের বোতল, জিআই পাইপ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের শিক্ষার্থীদের মারধর করার উদ্দেশ্যে অবস্থান নেয়। এ সময় আমি সংবাদকর্মী হিসেবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলাম। একপর্যায়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি, মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট, নিরাপত্তাকর্মীদের উপস্থিতিতে মীর মশাররফ হোসেন হলের একাধিক শিক্ষার্থী আমার ওপর ও আমার সহকর্মী ডিবিসি নিউজের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের ওপর লোহার পাইপ, রামদা নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায়।
মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দাবি, বুধবার সন্ধ্যায় বটতলায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ও মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র আহমেদ গালিবকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের একদল শিক্ষার্থী মারধর করেন। এর জের ধরেই তারা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের দিকে যাচ্ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, আমি ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলাম। তাই ঘটনাস্থলে আসতে দেরি হয়েছে। ছাত্রলীগের কেউ দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যাম্পাসে দেশীয় অস্ত্র থাকলে নিরাপত্তাব্যবস্থায় তো একরকম শঙ্কা তৈরি হয়। আমরা এসবের বিরুদ্ধে রয়েছি। এ ক্ষেত্রে হল থেকে এসব নির্মূলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা সর্বাত্মক সহায়তা করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, আজকের ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত। আমরা এই ধরনের ঘটনাগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখে তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নিই। এ ক্ষেত্রেও সেটিই করা হবে। এর বাইরে কোনো ধরনের অভিযোগ পেলে সেগুলোও খতিয়ে দেখা হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
জাবিতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের মহড়া, সাংবাদিকদের ওপর হামলা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছে। এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হল থেকে রড, রামদা, লাঠি, ছুরিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলার উদ্দেশ্যে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে বটতলায় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তাদের বাধা দেন। সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এদিকে হামলার ঘটনায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক একুশে টেলিভিশন অনলাইন ও দ্য বাংলাদেশ টুডের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জুবায়ের আহমেদ।
অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, বুধবার রাত পৌনে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার চার রাস্তার মোড়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থীরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পদধারী নেতা হাসান মাহমুদ ফরিদ (পরিবেশ বিজ্ঞান, ৪৪ ব্যাচ), আবুল কালাম আজাদ (মার্কেটিং, ৪৪ ব্যাচ) ও আব্দুল্লাহ আল ফারুক ইমরানের (ইতিহাস, ৪৪ ব্যাচ) নেতৃত্বে লাঠি, রামদা, চাপাতি, রড, কাচের বোতল, জিআই পাইপ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের শিক্ষার্থীদের মারধর করার উদ্দেশ্যে অবস্থান নেয়। এ সময় আমি সংবাদকর্মী হিসেবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলাম। একপর্যায়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি, মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট, নিরাপত্তাকর্মীদের উপস্থিতিতে মীর মশাররফ হোসেন হলের একাধিক শিক্ষার্থী আমার ওপর ও আমার সহকর্মী ডিবিসি নিউজের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের ওপর লোহার পাইপ, রামদা নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায়।
মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দাবি, বুধবার সন্ধ্যায় বটতলায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ও মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র আহমেদ গালিবকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের একদল শিক্ষার্থী মারধর করেন। এর জের ধরেই তারা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের দিকে যাচ্ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, আমি ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলাম। তাই ঘটনাস্থলে আসতে দেরি হয়েছে। ছাত্রলীগের কেউ দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যাম্পাসে দেশীয় অস্ত্র থাকলে নিরাপত্তাব্যবস্থায় তো একরকম শঙ্কা তৈরি হয়। আমরা এসবের বিরুদ্ধে রয়েছি। এ ক্ষেত্রে হল থেকে এসব নির্মূলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা সর্বাত্মক সহায়তা করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, আজকের ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত। আমরা এই ধরনের ঘটনাগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখে তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নিই। এ ক্ষেত্রেও সেটিই করা হবে। এর বাইরে কোনো ধরনের অভিযোগ পেলে সেগুলোও খতিয়ে দেখা হবে।