জাবিতে ছাত্রলীগের বাধায় নিয়োগ স্থগিত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রলীগ নেত্রীকে শিক্ষক পদে নিয়োগ না দেওয়ায় উপাচার্য অফিসের সামনে অবস্থান নেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। রোববার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগ নেত্রীকে নিয়োগ না দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং অ্যান্ড জিআইএসের নিয়োগ স্থগিতের অভিযোগ পাওয়া যায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং অ্যান্ড জিআইএসের একটি পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১০টায়। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে প্রার্থীদের বের করে উপাচার্য অফিসের সামনে অবস্থান নেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্যের সচিব গৌতম কুমার বিশ্বাস এসে প্রার্থীদের জানান, আজকের মতো কার্যক্রম স্থগিত। প্রার্থীদের পরবর্তীতে চিঠির মাধ্যমে এ ব্যাপারে জানানো হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় রসায়ন বিভাগের তিন প্রভাষককে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নবনিযুক্ত প্রভাষকরা ইতোমধ্যে চাকরিতে যোগদান করেছেন। তবে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদিয়া আফরিন পাপড়িকে নিয়োগ না দেওয়ায় উপাচার্য অফিস অবরোধ করেন নেতাকর্মীরা।
রসায়ন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নবনিযুক্ত তিনজন প্রভাষক ৩৯, ৪২ ও ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তারা প্রত্যেকেই নিজ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম বা দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন। তবে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পাপড়ি স্নাতকে পঞ্চম ও স্নাতকোত্তরে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় নকল করে বহিষ্কৃত ও প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগের বেলায় কোনো প্রকার স্বজনপ্রীতি ও স্বাধীনতাবিরোধী কাউকে আমরা চাকরিতে দেখতে চাই না। স্বাধীনতার পক্ষের যোগ্য প্রার্থীরা নিয়োগ পাবেন- এটাই আমরা চাই।’
রসায়ন বিভাগের নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তো চাইলে ওই দিন সিন্ডিকেট সভা আটকে দিতে পারতাম। এ ঘটনার সঙ্গে রসায়ন বিভাগের নিয়োগের কোনো সম্পর্ক নাই।’
এদিকে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় অসুবিধায় পড়েছেন মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা পরীক্ষার্থীরা। প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পর পরীক্ষা না দিয়েই ফিরে গেছেন তারা। রাজধানীর খিলগাঁও থেকে পরীক্ষা দিতে আসা সুজন বলেন, ‘আমি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছি। লম্বা সময় অপেক্ষা করার পর শুনি ভাইভা হবে না। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিংয়ের পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিভাগের জন্য শিক্ষক নিয়োগ খুবই জরুরি ছিল। একটি শূন্য পদের বিপরীতে ২৩ জন প্রার্থী ছিলেন। তবে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হওয়া খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বলেন, ‘ছাত্রলীগ যে দাবি জানিয়েছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই দাবির সঙ্গে পুরোপুরি একমত। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা বিভাগের সর্বোচ্চ ফলাফলধারীকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছি। আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অন্তত ৪০ জন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এক্ষেত্রে স্বাধীনতার বিপক্ষের কেউ নিয়োগ পায়নি।’
জাবিতে ছাত্রলীগের বাধায় নিয়োগ স্থগিত
জাবি প্রতিনিধি
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:৩৯:৪০ | অনলাইন সংস্করণ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রলীগ নেত্রীকে শিক্ষক পদে নিয়োগ না দেওয়ায় উপাচার্য অফিসের সামনে অবস্থান নেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। রোববার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগ নেত্রীকে নিয়োগ না দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং অ্যান্ড জিআইএসের নিয়োগ স্থগিতের অভিযোগ পাওয়া যায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং অ্যান্ড জিআইএসের একটি পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১০টায়। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে প্রার্থীদের বের করে উপাচার্য অফিসের সামনে অবস্থান নেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্যের সচিব গৌতম কুমার বিশ্বাস এসে প্রার্থীদের জানান, আজকের মতো কার্যক্রম স্থগিত। প্রার্থীদের পরবর্তীতে চিঠির মাধ্যমে এ ব্যাপারে জানানো হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় রসায়ন বিভাগের তিন প্রভাষককে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নবনিযুক্ত প্রভাষকরা ইতোমধ্যে চাকরিতে যোগদান করেছেন। তবে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদিয়া আফরিন পাপড়িকে নিয়োগ না দেওয়ায় উপাচার্য অফিস অবরোধ করেন নেতাকর্মীরা।
রসায়ন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নবনিযুক্ত তিনজন প্রভাষক ৩৯, ৪২ ও ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তারা প্রত্যেকেই নিজ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম বা দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন। তবে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পাপড়ি স্নাতকে পঞ্চম ও স্নাতকোত্তরে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় নকল করে বহিষ্কৃত ও প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগের বেলায় কোনো প্রকার স্বজনপ্রীতি ও স্বাধীনতাবিরোধী কাউকে আমরা চাকরিতে দেখতে চাই না। স্বাধীনতার পক্ষের যোগ্য প্রার্থীরা নিয়োগ পাবেন- এটাই আমরা চাই।’
রসায়ন বিভাগের নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তো চাইলে ওই দিন সিন্ডিকেট সভা আটকে দিতে পারতাম। এ ঘটনার সঙ্গে রসায়ন বিভাগের নিয়োগের কোনো সম্পর্ক নাই।’
এদিকে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় অসুবিধায় পড়েছেন মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা পরীক্ষার্থীরা। প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পর পরীক্ষা না দিয়েই ফিরে গেছেন তারা। রাজধানীর খিলগাঁও থেকে পরীক্ষা দিতে আসা সুজন বলেন, ‘আমি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছি। লম্বা সময় অপেক্ষা করার পর শুনি ভাইভা হবে না। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিংয়ের পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিভাগের জন্য শিক্ষক নিয়োগ খুবই জরুরি ছিল। একটি শূন্য পদের বিপরীতে ২৩ জন প্রার্থী ছিলেন। তবে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হওয়া খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বলেন, ‘ছাত্রলীগ যে দাবি জানিয়েছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই দাবির সঙ্গে পুরোপুরি একমত। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা বিভাগের সর্বোচ্চ ফলাফলধারীকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছি। আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অন্তত ৪০ জন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এক্ষেত্রে স্বাধীনতার বিপক্ষের কেউ নিয়োগ পায়নি।’
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023