‘প্রেমিকাকে’ ছাদে ডেকে এনে হত্যা করেন বিজয়-আদিবা দম্পতি
যুগান্তর প্রতিবেদন
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৯:৩২:১১ | অনলাইন সংস্করণ
স্কুলছাত্রী জেসিকা মাহমুদ জেসি হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব। তাকে বাসায় ডেকে এনে হত্যা করেন আদিবা আক্তার ও বিজয় রহমান। তারা স্বামী-স্ত্রী। এ ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন তারা দুজন।
শনিবার রাজধানীর ওয়ারী থেকে গ্রেফতার করা হয় বিজয়কে। এর আগে গ্রেফতার হন আদিবা। এই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
রোববার দুপুরে কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
নিহত জেসিকা মাহমুদ জেসি মুন্সীগঞ্জ সদর থানার কোর্টগাঁও এলাকায় থাকতেন। ২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। হত্যার ঘটনা ঘটে মুন্সীগঞ্জে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ২০১৯ সালে একই স্কুলছাত্রী আদিবা আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান বিজয়। এই সম্পর্কের মধ্যেই গত বছরের জানুয়ারিতে জেসির সঙ্গে প্রেম শুরু করেন বিজয়। এরপর দুজনের সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্ক বজায় রাখেন তিনি। এ অবস্থায় আদিবাকে গোপনে বিয়ে করেন বিজয়। বিষয়টি জানতে পেরে বিজয়ের সঙ্গে তার বিভিন্ন কথোপকথনের স্ক্রিনশট আদিবাকে মেসেঞ্জারে পাঠান জেসি।
তিনি বলেন, এর মধ্যে জেসিকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার পরিকল্পনা করেন আদিবা আক্তার ও বিজয় রহমান। এজন্য ১ জানুয়ারি বিকালে জেসিকে বিজয়ের বাসার ছাদে ডেকে নেন আদিবা। সেখানে গেলে জেসির সঙ্গে তাদের দুজনের বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে দুজনে মিলে জেসিকার গলাটিপে ধরেন। এতে শ্বাসরোধে অজ্ঞান হয়ে পড়েন জেসি।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ঘটনার পর জেসিকে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ার নাটক সাজান বিজয় ও আদিবা। এজন্য তাকে ধরে নিচে নামিয়ে আনেন তারা। পরে অজ্ঞান অবস্থায় জেসিকে রাস্তার পাশে ফেলে বাসায় চলে যান তারা।
পরে পাশের বাসায় থাকা বিজয়ের চাচা জেসিকে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় বিজয় এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাসা থেকে নেমে আসেন। একপর্যায়ে বিজয় এবং তার বাবাসহ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় জেসিকে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জেসিকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর ঘটনা শুনে বিজয় ও আদিবা কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যান।
খন্দকার মঈন বলেন, এরমধ্যে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে বন্ধুর বাড়িতে চারদিন আত্মগোপনে থাকেন বিজয়। এরপর সেখান থেকে ফরিদপুরের একটি মাজারে ছদ্মবেশে ২২ দিন আত্মগোপনে থাকেন। একপর্যায়ে গ্রেফতার এড়াতে ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওয়ারীতে তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাসায় চলে আসেন বিজয়। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
‘প্রেমিকাকে’ ছাদে ডেকে এনে হত্যা করেন বিজয়-আদিবা দম্পতি
স্কুলছাত্রী জেসিকা মাহমুদ জেসি হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব। তাকে বাসায় ডেকে এনে হত্যা করেন আদিবা আক্তার ও বিজয় রহমান। তারা স্বামী-স্ত্রী। এ ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন তারা দুজন।
শনিবার রাজধানীর ওয়ারী থেকে গ্রেফতার করা হয় বিজয়কে। এর আগে গ্রেফতার হন আদিবা। এই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
রোববার দুপুরে কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
নিহত জেসিকা মাহমুদ জেসি মুন্সীগঞ্জ সদর থানার কোর্টগাঁও এলাকায় থাকতেন। ২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। হত্যার ঘটনা ঘটে মুন্সীগঞ্জে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ২০১৯ সালে একই স্কুলছাত্রী আদিবা আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান বিজয়। এই সম্পর্কের মধ্যেই গত বছরের জানুয়ারিতে জেসির সঙ্গে প্রেম শুরু করেন বিজয়। এরপর দুজনের সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্ক বজায় রাখেন তিনি। এ অবস্থায় আদিবাকে গোপনে বিয়ে করেন বিজয়। বিষয়টি জানতে পেরে বিজয়ের সঙ্গে তার বিভিন্ন কথোপকথনের স্ক্রিনশট আদিবাকে মেসেঞ্জারে পাঠান জেসি।
তিনি বলেন, এর মধ্যে জেসিকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার পরিকল্পনা করেন আদিবা আক্তার ও বিজয় রহমান। এজন্য ১ জানুয়ারি বিকালে জেসিকে বিজয়ের বাসার ছাদে ডেকে নেন আদিবা। সেখানে গেলে জেসির সঙ্গে তাদের দুজনের বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে দুজনে মিলে জেসিকার গলাটিপে ধরেন। এতে শ্বাসরোধে অজ্ঞান হয়ে পড়েন জেসি।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ঘটনার পর জেসিকে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ার নাটক সাজান বিজয় ও আদিবা। এজন্য তাকে ধরে নিচে নামিয়ে আনেন তারা। পরে অজ্ঞান অবস্থায় জেসিকে রাস্তার পাশে ফেলে বাসায় চলে যান তারা।
পরে পাশের বাসায় থাকা বিজয়ের চাচা জেসিকে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় বিজয় এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাসা থেকে নেমে আসেন। একপর্যায়ে বিজয় এবং তার বাবাসহ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় জেসিকে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জেসিকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর ঘটনা শুনে বিজয় ও আদিবা কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যান।
খন্দকার মঈন বলেন, এরমধ্যে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে বন্ধুর বাড়িতে চারদিন আত্মগোপনে থাকেন বিজয়। এরপর সেখান থেকে ফরিদপুরের একটি মাজারে ছদ্মবেশে ২২ দিন আত্মগোপনে থাকেন। একপর্যায়ে গ্রেফতার এড়াতে ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওয়ারীতে তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাসায় চলে আসেন বিজয়। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।