বিএসসির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
jugantor
বিএসসির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

  সংবাদ বিজ্ঞপ্তি  

০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১:৩৩:২৫  |  অনলাইন সংস্করণ

বিএসসির ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটির নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মো. জিয়াউল হক (ট্যাজ), ওএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, বিএন বলেন- ‘বর্তমানে বিএসসি সরকারের পরিবহন খাতে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিএসসি ২২৫ কোটি টাকা লাভ করেছে। আগামীতে আরও নতুন নতুন জাহাজ বিএসসির বহরে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে বিএসসির কার্যক্রম আরও অধিক ব্যপ্তিতে সম্প্রসারিত হবে; যার পরিপ্রেক্ষিতে অধিক মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি কর্মস্থান সৃষ্টিসহ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিএসসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে বিএসসির উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রেখে সমুদ্র পরিবহণে জনগণ ও সরকারের অংশীদারিত্ব নিশ্চিতকরণের জন্য তিনি সংস্থার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের আহবান জানান। কর্মসূচিটি তত্ত্বাবধান করেন মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন, উপ-সচিব ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন), বিএসসি, চট্টগ্রাম।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমুদ্র পরিবহণে জনগণ ও সরকারের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাত্র ২৫ দিনের মধ্যে তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির ১০নং আদেশমূলে প্রতিষ্ঠা করেন আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে বাণিজ্যিক জাহাজ পরিচালনাকারী একমাত্র রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন তথা বিএসসি।

উপকূলবর্তী একটি দেশে নৌবাণিজ্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করে সরকার গঠনের পর বৈদেশিক বাণিজ্যের যাবতীয় কর্মকাণ্ড যথাযথভাবে পালন করতে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিজের হাতে রাখেন তিনি। জন্মলগ থেকে আন্তর্জাতিক নৌপথে নিরাপদ ও দক্ষ হাতে পণ্য পরিবহণ নিশ্চিত করে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে বিএসসি।

দেশের আমদানি-রপ্তানির এক বিশাল অংশ বিএসসির জাহাজের মাধ্যমে পরিবহন করা হয়। এর মাধ্যমে বিএসসি পরিবহন খাতে জাতীয় অর্থনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পাশাপাশি জাতির যেকোনো দুর্যোগ মুহূর্তে বিএসসির জাহাজগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া বৈদেশিক পণ্য পরিবহন করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।

১৯৭২ সালে অর্থাৎ বিএসসির যাত্রা শুরুর সময় প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কোনো জাহাজ ছিল না। বঙ্গবন্ধুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ইন্দিরা গান্ধীর সহায়তায় বিএসসির প্রথম জাহাজ হিসেবে যুক্ত হয় কার্গো জাহাজ ‘বাংলার দূত’।

১৯৯১ সালে ‘বাংলার শিখা’ সংস্থার জাহাজ বহরে যুক্ত হওয়ার পর দীর্ঘ ২৭ বছরে আর কোনো জাহাজ যুক্ত হয়নি। এই দীর্ঘ ২৭ বছর পর বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানন্ত্রীর প্রচেষ্টায় চীন সরকারের ঋণ সহায়তায় ছয়টি নতুন জাহাজ (প্রতিটি প্রায় ৩৯,০০০ ডিডব্লিউটি সম্পন্ন তিনটি নতুন অয়েল-ক্যামিকেল ট্যাংকার এবং তিনটি নতুন বাল্ক ক্যারিয়ার) বিএসসির জাহাজ বহরে যুক্ত হয়। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রথম জাহাজ ‘বাংলার জয়যাত্রা’ এবং অবশিষ্ট পাঁচটি জাহাজ ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। জাহাজগুলো আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের পতাকা স্বগৌরবে বহন করে চলছে।

২০০৮ সালের শেষের দিকে শুরু হওয়া বিশ্ব মন্দার বিরূপ প্রভাবে আন্তর্জাতিক শিপিং ট্রেডে ধস নামে এবং সেই সঙ্গে জাহাজ ভাড়া সর্বনিম্ন পর্যায়ে হ্রাস পায়। এছাড়া জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি জাহাজি কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাজারে যন্ত্রাংশের দুষ্প্রাপ্যতা ও উচ্চমূল্য, জাহাজ মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ এবং আন্তর্জাতিক শিপিংয়ে নিত্যনতুন বিধি সংযোজিত হওয়ায় করপোরেশনের জাহাজ পরিচালনা ব্যয় অত্যধিক বৃদ্ধি পায়।

এই প্রতিকূল পরিবেশে অতি পুরাতন জাহাজ বহর দিয়ে শিপিং বাণিজ্যে সফলভাবে বাণিজ্যে টিকে থাকার স্বীকৃত স্বরূপ স্পেনের মাদ্রিদের গ্লোবাল লিডারস ক্লাব কর্তৃক বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনকে ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে “ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড ফর লিডারশিপ ইন ইমেজ অ্যান্ড কোয়ালিটি” সম্মাননা দেওয়া হয়।

বিএসসির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

 সংবাদ বিজ্ঞপ্তি 
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:৩৩ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ

বিএসসির ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটির নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মো. জিয়াউল হক (ট্যাজ), ওএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, বিএন বলেন- ‘বর্তমানে বিএসসি সরকারের পরিবহন খাতে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিএসসি ২২৫ কোটি টাকা লাভ করেছে। আগামীতে আরও নতুন নতুন জাহাজ বিএসসির বহরে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে বিএসসির কার্যক্রম আরও অধিক ব্যপ্তিতে সম্প্রসারিত হবে; যার পরিপ্রেক্ষিতে অধিক মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি কর্মস্থান সৃষ্টিসহ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিএসসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে বিএসসির উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রেখে সমুদ্র পরিবহণে জনগণ ও সরকারের অংশীদারিত্ব নিশ্চিতকরণের জন্য তিনি সংস্থার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের আহবান জানান। কর্মসূচিটি তত্ত্বাবধান করেন মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন, উপ-সচিব ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন), বিএসসি, চট্টগ্রাম।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমুদ্র পরিবহণে জনগণ ও সরকারের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাত্র ২৫ দিনের মধ্যে তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির ১০নং আদেশমূলে প্রতিষ্ঠা করেন আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে বাণিজ্যিক জাহাজ পরিচালনাকারী একমাত্র রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন তথা বিএসসি। 

উপকূলবর্তী একটি দেশে নৌবাণিজ্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করে সরকার গঠনের পর বৈদেশিক বাণিজ্যের যাবতীয় কর্মকাণ্ড যথাযথভাবে পালন করতে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিজের হাতে রাখেন তিনি। জন্মলগ থেকে আন্তর্জাতিক নৌপথে নিরাপদ ও দক্ষ হাতে পণ্য পরিবহণ নিশ্চিত করে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে বিএসসি। 

দেশের আমদানি-রপ্তানির এক বিশাল অংশ বিএসসির জাহাজের মাধ্যমে পরিবহন করা হয়।  এর মাধ্যমে বিএসসি পরিবহন খাতে জাতীয় অর্থনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।  পাশাপাশি জাতির যেকোনো দুর্যোগ মুহূর্তে বিএসসির জাহাজগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া বৈদেশিক পণ্য পরিবহন করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। 

১৯৭২ সালে অর্থাৎ বিএসসির যাত্রা শুরুর সময় প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কোনো জাহাজ ছিল না।  বঙ্গবন্ধুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ইন্দিরা গান্ধীর সহায়তায় বিএসসির প্রথম জাহাজ হিসেবে যুক্ত হয় কার্গো জাহাজ ‘বাংলার দূত’। 

১৯৯১ সালে ‘বাংলার শিখা’ সংস্থার জাহাজ বহরে যুক্ত হওয়ার পর দীর্ঘ ২৭ বছরে আর কোনো জাহাজ যুক্ত হয়নি। এই দীর্ঘ ২৭ বছর পর বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানন্ত্রীর প্রচেষ্টায় চীন সরকারের ঋণ সহায়তায় ছয়টি নতুন জাহাজ (প্রতিটি প্রায় ৩৯,০০০ ডিডব্লিউটি সম্পন্ন তিনটি নতুন অয়েল-ক্যামিকেল ট্যাংকার এবং তিনটি নতুন বাল্ক ক্যারিয়ার) বিএসসির জাহাজ বহরে যুক্ত হয়।  এর মধ্যে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রথম জাহাজ ‘বাংলার জয়যাত্রা’ এবং অবশিষ্ট পাঁচটি জাহাজ ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন।  জাহাজগুলো আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের পতাকা স্বগৌরবে বহন করে চলছে।

২০০৮ সালের শেষের দিকে শুরু হওয়া বিশ্ব মন্দার বিরূপ প্রভাবে আন্তর্জাতিক শিপিং ট্রেডে ধস নামে এবং সেই সঙ্গে জাহাজ ভাড়া সর্বনিম্ন পর্যায়ে হ্রাস পায়। এছাড়া জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি জাহাজি কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাজারে যন্ত্রাংশের দুষ্প্রাপ্যতা ও উচ্চমূল্য, জাহাজ মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ এবং আন্তর্জাতিক শিপিংয়ে নিত্যনতুন বিধি সংযোজিত হওয়ায় করপোরেশনের জাহাজ পরিচালনা ব্যয় অত্যধিক বৃদ্ধি পায়। 

এই প্রতিকূল পরিবেশে অতি পুরাতন জাহাজ বহর দিয়ে শিপিং বাণিজ্যে সফলভাবে বাণিজ্যে টিকে থাকার স্বীকৃত স্বরূপ স্পেনের মাদ্রিদের গ্লোবাল লিডারস ক্লাব কর্তৃক বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনকে ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে “ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড ফর লিডারশিপ ইন ইমেজ অ্যান্ড কোয়ালিটি” সম্মাননা দেওয়া হয়।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন