Logo
Logo
×

সারাদেশ

ভুলতে পারেননি প্রথম প্রেম, বাড়ি থেকে বেরিয়েই নদীতে লাফ শিক্ষিকার

Icon

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০৯ পিএম

ভুলতে পারেননি প্রথম প্রেম, বাড়ি থেকে বেরিয়েই নদীতে লাফ শিক্ষিকার

নিজের প্রতি হতাশা ক্ষোভ আর অভিমান ও যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে নদীতে ডুবে আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হলেন গাইবান্ধার স্কুলশিক্ষিকা তাসনিম আরা নাজ। মঙ্গলবার সকালে নিজের বাড়ি থেকে বেড়িয়ে সামনের ঘাঘট নদীতে লাফ দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

স্থানীয়রা ও তার পরিবারের লোকজন জানান, গাইবান্ধা শহরের পাশে ঘাঘট নদী লাগোয়া পূর্ব কোমরনই মিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নাসির উদ্দিনের মেয়ে তাসনিম আরা নাজ ছিলেন মেধাবী ছাত্রী। কলেজ জীবনে তার ক্লাস ফ্রেন্ডের সঙ্গে প্রেম করেন দীর্ঘদিন; কিন্তু প্রেম বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়নি। তখন থেকেই নাজ একটু অন্যরকম জীবন শুরু করেন।

পড়ালেখায় ভালো বলে প্রাইমারি শিক্ষিকার চাকরিতে যোগ দেন ১০ বছর আগে; কিন্তু প্রথম জীবনের প্রেমিকের কথা ভুলে যেতে পারেননি। তাই শিক্ষিকার চাকরি হলেও তিনি আর বিয়েতে রাজি ছিলেন না। পরিবার থেকে তাকে অনেকবার বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হলেও নাজ বিয়ে করতে রাজি হননি।

দিনে দিনে নিজের প্রতি হতাশা, ক্ষোভ আর অভিমানী হয়ে ওঠেন। শুধু স্কুল আর বাড়ি ছাড়া কোথাও যেতেন না। কারো সঙ্গে মিশতেন না কথাও বলতেন না। পুরুষ মানুষের প্রতি ছিল তার অনেক ঘৃণা। তাই নিজের যতো কষ্ট ক্ষোভ আর হতাশার জীবনকে সামলে নিয়ে অনেক দিন চলেন নিজের মতো।

কিন্তু এই জমানো কষ্ট আর বেশি দিন সইতে পারেনি। তাই মঙ্গলবার ভোরে মিয়াপাড়ার বাড়ি থেকে বের হয়ে সোজা খরস্রোতা ঘাঘট নদীতে লাফিয়ে পড়ে আত্মহননের পথ বেছে নেন তিনি। সাঁতার জানতে না বলে নদী থেকে আর উঠতে পারেনি। সকালে নদীতে দুই হাত উঁচু করে নারীর লাশ বাড়ির সামনে দিয়ে ভেসে যাওয়ার সময় লোকজনের নজরে আসে। ততক্ষণে অভিমানী নাজ মারা যান। লোকজন তার লাশ নদী থেকে টেনে তোলেন।

খবর পেয়ে গাইবান্ধা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। স্থানীয় লোকজন ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়- নাজ নিজের হতাশা, অভিমান ও ক্ষোভ নিয়ে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।

লিখিত দিয়ে পুলিশের কাছ থেকে তার পিতা নাসির উদ্দিন মেয়ের লাশ বাড়িতে নিয়ে বিকালে দাফন করেন। তিনি সাংবাদিকদের কাছে এসব ঘটনা তুলে ধরে বলেন, প্রেম ভালোবাসা ও পুরুষ মানুষ তার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আজ সে মুক্তি নিয়ে চলে গেল।

গাইবান্ধা সদর থানার ওসি শাহিনুর আলম জানান, তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। দেখে মনে হচ্ছে আত্মহত্যা করেছেন। স্বজনদের কোনো না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করেছি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম