Logo
Logo
×

সারাদেশ

ডিভোর্সের পরও সম্পর্ক রাখতে বাধ্য করায় সাবেক স্বামীর পরিণতি

Icon

আবুল খায়ের, কুমিল্লা ব্যুরো

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১১ পিএম

ডিভোর্সের পরও সম্পর্ক রাখতে বাধ্য করায় সাবেক স্বামীর পরিণতি

কুমিল্লায় চাঞ্চল্যকর দুলাল হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। ডিভোর্সের পরও সাবেক স্ত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে রাত্রিযাপন ও সম্পর্ক রাখতে বাধ্য করায় খুন করা হয় দুলাল হোসেনকে (৩৫)।

সাবেক স্ত্রী ফাতেমা আক্তার সিনথিয়া, তার বর্তমান স্বামী, বাবা-মা ও সহযোগী মিলে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত করে লাশ রেললাইনের পাশে ফেলে রাখেন। এ ঘটনায় জড়িত আরও সাতজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১। এর আগে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন।

তিনি জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার লালমাই উপজেলার পেরুল এলাকায় রেললাইনের পাশ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে লাকসাম রেলওয়ে পুলিশ। নিহতের মাথার ডান পাশে রক্তাক্ত জখম ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের পরিচয় মেলে। তিনি আদর্শ সদর উপজেলার ভল্লবপুর গ্রামের জব্বর মালের ছেলে দুলাল হোসেন।

র‌্যাবের অভিযানিক দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ১৫ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার দেবিদ্বার, লাকসাম ও ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পৃথক অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেফতার করে।

এ মামলায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন- দেবিদ্বার উপজেলার চুলাস গ্রামের মৃত আয়াত আলীর ছেলে মো. ফারুক (৪৫), আতাপুর গ্রামের মৃত ধনু মিয়ার ছেলে মো. মফিজুল ইসলাম (৪৫), একই গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে তাজুল ইসলাম (৪২), নুর মানিকচর গ্রামের ফারুকের স্ত্রী মরিয়ম (৩৭), একই গ্রামের আবুল হাসেমের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার সিনথিয়া (১৯), লালমাই উপজেলার জগতপুর গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের ছেলে রুবেল আহাম্মেদ (৩৯), লাকসাম উপজেলার পূর্ব বেরুল গ্রামের নুরুল হকের ছেলে আবুল হাসেম (৩৪)।

এর আগে লাকসাম রেলওয়ে পুলিশ কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বল্লভপুর গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে জহির ও একই গ্রামের ইউনুস মিয়ার ছেলে খোরশেদ আলমকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, প্রায় ছয় মাস আগে দুলালের সঙ্গে ফাতেমা আক্তার সিনথিয়ার বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকে দুলাল তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। এ সময় সিনথিয়ার পরিচয় হয় প্রবাসী আবুল হাসেমের সঙ্গে, যাকে পরে তিনি বিয়ে করেন; কিন্তু ডিভোর্সের পরও দুলাল সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে প্রায়ই ভয়ভীতি দেখিয়ে তার বাড়িতে যেতেন এবং রাত্রিযাপনে বাধ্য করতেন।

এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে সিনথিয়া তার বর্তমান স্বামী হাসেম ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দুলালকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন দুলালকে জুসে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। পরে ঘুমিয়ে পড়লে তাকে আঘাত করে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। লাশ গুমের জন্য ড্রাইভার রুবেল নোহা গাড়িতে করে মরদেহ লালমাই রেললাইনের পাশে ফেলে রেখে যায়।

লাকসাম রেলওয়ে থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়েরের পরই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে র‌্যাবের সহযোগিতায় বাকি ৭ জনকেও ধরা হয়েছে। তাদের এখনো থানায় হস্তান্তর করা হয়নি।

র‌্যাব জানায়, গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম