পঞ্চগড়ে কুয়াশায় ঢাকা প্রকৃতিতে এলো হেমন্তের বার্তা
এস এ মাহমুদ সেলিম, পঞ্চগড়
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৩০ এএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
হিমালয় কন্যা পঞ্চগড়ে অন্য জেলার তুলনায় আগেভাগেই শীত শুরু হয়। দেশের সর্ব উত্তরের জনপদ তেঁতুলিয়াসহ এ জেলায় এবার আশ্বিনের শেষ দিকেই শীতকে স্বাগত জানিয়ে হেমন্তের বার্তা দিচ্ছে চিরচেনা রূপে। শরতের বিদায়। রাতভর হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা সকাল পর্যন্ত চাদরের মত বিছিয়ে থাকছে দিগন্তজুড়ে। কমতে শুরু করেছে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও।
রাত থেকে সকাল পর্যন্ত অনুভূত হতে শুরু করেছে শীতের পরশ। ঘাসের ডগায় জমছে শিশির বিন্দু, পায়ের স্পর্শে অনুভূত হচ্ছে ঠাণ্ডা। হালকা শীতের আমেজে এই কূয়াশা উপভোগ্য হয়ে উঠেছে। ভোরের সূর্যোদয়ের মধ্য দিয়ে মিষ্টি রোদ আর সবুজ ঘাসের পাতার ওপর শিশির বিন্দু জানিয়ে দিচ্ছে দরজায় কড়া নাড়ছে শীত।
বৃহস্পতিবার দিনভর ভ্যাপসা গরম ছিল। তবে সন্ধ্যার পর থেকেই আকাশ হালকা মেঘলা হওয়ার পাশাপাশি রাতভর ঝরছিল হালকা কুয়াশা।
শুক্রবার ভোরে বিভিন্ন জায়গায় এই কুয়াশার দেখা মিলেছে। সকাল ৯টা পর্যন্ত কুয়াশায় ঘেরা থাকে জনপদ। বিকেলের পর থেকেই রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হালকা কুয়াশা রূপ নিতে শুরু করে মাঝারি কুয়াশায়। সকালে গাছের পাতায় শিশির বিন্দু জমে থাকছে অনেক বেলা অবধি। ফসলের মাঠে উঁকি দিচ্ছে নতুন বীজের প্রস্ফুটিত চারা। তাতে শিশির বিন্দু ছড়িয়ে দিচ্ছে মৃদু শীতলতা।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকালে তেঁতুলিয়ায় ২৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৮ শতাংশ। কয়েকদিন ধরে তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্ব নিম্ন তাপমাত্রা ২৩ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে।
পঞ্চগড় জেলা শহরের কদমতলা রোডের তুলা ব্যবসায়ী আজমত আলী জানান, তুলা ও কাপড়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার আগের বছরের তুলনায় লেপের দামও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপর উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন আগেভাগেই লেপ সেলাই করছেন। কেউবা আবার পুরোনো লেপ নতুন করে সেলাই করে নিচ্ছেন। তবে শীতের প্রস্তুতি নেই খেটে খাওয়া ও ছ্ন্নিমূল মানুষদের। হাতে কাজ কম ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে সংসার সামলানোই তাদের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। তবে শীত নিয়ে শংকায় রয়েছেন তারা। তাদের লেপ তৈরি করার সামর্থ্য নেই।
প্রচণ্ড শীতে কাহিল মানুষের জন্য প্রতি বছর সরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিরতণ করা হয়। এসবের পরিমাণ খুবই সামান্য। বেসরকারি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও শহরের আশপাশেই এর কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকে। প্রত্যন্ত এলাকার লোকজন এসব শীতবস্ত্রের দেখাই পান না।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, হিমালয় কন্যা হিসেবে পরিচিত আমাদের পঞ্চগড়ে অন্য জেলার তুলনায় আগেভাগেই শীত শুরু হয়। কয়েকদিন ধরে শীতের আমেজ অনুভূত হচ্ছে। শীত নিয়ে দুস্থ ও খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রতি বছরের মতো এবারও আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা শীতের কম্বলসহ পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের চাহিদা জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।
