প্রাইমারি স্কুলে নিম্নমানের হাজিরা মেশিন
কুমিল্লার হোমনা ও তিতাসে কয়েক লাখ টাকা লোপাট
কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৪৯ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কুমিল্লার হোমনা ও তিতাস উপজেলার ১৮৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা মেশিন বসানো হয়েছিল ৬ বছর আগে। ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে এসব মেশিন কেনা হলেও বর্তমানে প্রায় সব মেশিন অকেজো পড়ে আছে। কিছু মেশিনের হদিসই পাওয়া যায়নি।
‘স্লিপ ফান্ড’ থেকে শিক্ষকদের অর্থ এবং সরকারের বরাদ্দের এ প্রকল্প এখন পুরোপুরি ব্যর্থ। সঠিক তদারকি বা রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ না নেওয়ায় মেশিনগুলো অকেজো হয়ে আছে।
তিতাস উপজেলায় ৯২টি এবং হোমনা উপজেলায় ৯২টি স্কুলে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী, বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। অর্থের উৎস স্লিপ ফান্ড। প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষককে স্লিপ ফান্ড থেকে ২০ হাজার টাকা করে দিতে বাধ্য করেন সাবেক সংসদ-সদস্য সেলিমা আহমাদ মেরী। মেশিনগুলো কেনা হয়েছিল তৎকালীন সংসদ-সদস্য সেলিমা আহমাদ মেরীর নির্দেশে নির্ধারিত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাজার যাচাই করে তাদের পছন্দমতো সাশ্রয়ী মূল্যের মেশিন কিনতে পারবেন। কিন্তু সেলিমা আহমাদ মেরীর নির্ধারিত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে মেশিন কিনতে বাধ্য করা হয়। এতে বাজার যাচাইয়ের সুযোগ পাননি শিক্ষকরা এবং সংসদ-সদস্যের দুই প্রতিনিধি হোমনার আকবর ও তিতাসের আতাউর রহমান শানুকে দিয়ে মেশিনগুলো প্রধান শিক্ষকের কক্ষের একপাশে স্থাপন করেন এবং টাকা সংগ্রহ করেন। বর্তমানে মেশিনগুলো মাকড়সার জালে আবৃত হয়ে আছে। সংযোগ না থাকায় এগুলো অকার্যকর হয়ে আছে।
শিক্ষকদের অভিযোগ, তৎকালীন সংসদ-সদস্যের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিম্নমানের মেশিন কিনে প্রকল্পের টাকা লোপাট হয়েছে। বাজারমূল্যের চেয়ে মেশিনগুলোর দাম ছিল তিনগুণ বেশি।
তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, মেশিনগুলোর কেনার আগে দাম যাচাই করে দেখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল; কিন্তু সম্ভব হয়নি। কথা ছিল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে সার্ভার বসানোর মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হবে। সেখান থেকে আমাদের মনিটরিং করবে। তা করা হয়নি, এখন সবকটি মেশিন অকেজো।
