কুমিল্লা-৪ আসন
বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী মঞ্জুরুল আহসানের সঙ্গে লড়বেন হাসনাত
মো. আক্তার হোসেন, দেবিদ্বার (কুমিল্লা)
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও চারবারের নির্বাচিত সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীর সঙ্গে লড়বেন জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) ও তরুণ রাজনীতিবিদ হাসনাত আব্দুল্লাহ।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকালে বিএনপি ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। এছাড়াও এ আসনে জামায়াতের হয়ে লড়বেন দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম শহীদ।
জানা যায়, কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহবায়ক, জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক ও তরুণ রাজনীতিবিদ হাসনাত আবদুল্লাহ প্রার্থী হবেন। এখানে তিনিও হেভিওয়েট প্রার্থী। এরই মধ্যে জনগণের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি এ আসনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে গণসংযোগ চালাচ্ছেন। ‘উঠানে রাজনীতি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় জনসাধারণকে জাগ্রত করার চেষ্টা করছেন। এনসিপির পক্ষে ভোট চাইছেন। আসনটিতে হাসনাত আবদুল্লাহর নির্দেশে নেতাকর্মীরা সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তদারকি ও জনসাধারণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করছেন।
অপরদিকে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনটি ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিএনপির দখলে ছিল। ওই সময় এ আসন থেকে টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও ন্যাপ প্রধান অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো এমপি হন তিনি। এরপর থেকে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন মঞ্জু মুন্সী এবং এ আসনটি বিএনপির ঘাঁটিতে পরিণত করেন।
১/১১ এর পরে কয়েকটি মিথ্যা মামলায় কারাবরণ করতে হয় এই বর্ষীয়ান বিএনপি নেতাকে। মামলা জটিলতার কারণে ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মঞ্জু মুন্সী অংশ নিতে না পারলেও ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন তার সহধর্মিণী বেগম মাজেদা আহসান মুন্সী। অপরদিকে জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন পান সাবেক মন্ত্রী ও সচিব এবিএম গোলাম মোস্তফা। ওই নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর সুনিশ্চিত বিজয় ঠেকাতে কৌশলী প্রচারণায় নামেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।
নির্বাচনের দিন সকাল থেকেই প্রচারণা চালানো হয় মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী গ্রেফতার। এমন সংবাদে বিএনপির দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দিনভর এমন নাটকীয়তার পর বিকাল সাড়ে ৩টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করেন মঞ্জু মুন্সীকে।
ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবিএম গোলাম মোস্তফা এবং বিএনপির হাতছাড়া হয় আসনটি। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনে আসনটি পুনরুদ্ধারের সুযোগ তৈরি হলেও জোটের প্রার্থী জেএসডি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতনকে ছেড়ে দেয় বিএনপি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী মনোনয়ন প্রাপ্তিতে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়েছে এবং নেতাকর্মীরা আশা করছেন দীর্ঘদিন পর তাদের হারানো আসনটি পুনরুদ্ধারে সক্ষম হবেন।
এ বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক ও তরুণ রাজনীতিবিদ হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৪ দেবিদ্বার আসন থেকে আমি নির্বাচন করব। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে আমি সাংগঠনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি দেবিদ্বারে ভোটারদের মধ্যে এনসিপির নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ব্যাপক সাড়া ফেলবে।
এ ব্যাপারে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী, সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী বলেন, ১৯৯১ সালে আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দেবিদ্বার আসনটিকে বিএনপির দুর্গে পরিণত করি এবং পরপর চারবার এ আসনে আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হই। আমার সময়কালে দেবিদ্বারে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। শুধু রাস্তা বা ব্রিজ কালভার্টই নয়, স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠায় সেই সময় আশপাশের উপজেলাগুলোকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। আমি বিশ্বাস করি দেবিদ্বারবাসী এখনো আমাকে আগের মতোই ভালোবাসেন। আগামী নির্বাচনেও এ আসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারুণ্যের অংহকার আগামী রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানকে উপহার দিব ইনশাআল্লাহ।
