১৩ মাস কারাবাসের পর দেশে ফিরলেন ৬ জেলে
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:২৫ পিএম
বিএসএফ তাদের আটক করে বন্দি করে রেখেছিল। সংগৃহীত ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার ৬ জন জেলে অবশেষে দেশে ফিরেছেন। অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ১৩ মাস ভারতে কারাভোগ করেন তারা।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় শেরপুরের নালিতাবাড়ী নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে তারা দেশে ফেরেন। এ সময় ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়ন ৩৯ বিজিবি, ভারতীয় পুলিশ ও বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।
কারামুক্ত হওয়া জেলেরা হলেন—চিলমারী উপজেলা হরিণের বন্দ এলাকার মো. রাসেল মিয়া (৩৫), ব্যাপারী পাড়া এলাকার বিপ্লব মিয়া (৪৫), মো. মীর জাহান আলী (৪৫), বকুল মিয়া(৩২), মো. আমের আলী (৩৫), রৌমারী উপজেলার বকবান্দা এলাকার মো. চাঁন মিয়া (৬০)।
২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর জিঞ্জিরাম নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ভুলবশত ভারতের জলসীমায় ঢুকে পড়লে ভারতীয় বিএসএফ তাদের আটক করে। পরে আদালতের নির্দেশনায় মেঘালয় আমপাতি জেলার মাহিন্দগঞ্জের ক্ষণস্থায়ী আটক কেন্দ্রে রাখা হয়। এরপর শুরু হয় দীর্ঘ ১৩ মাসের অনিশ্চয়তা, কষ্ট ও অপেক্ষার সময়।
আটকের প্রথম মাসগুলো পরিবারদের জন্য ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। কারও স্বামী, কারও বাবা আবার কারও একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তান নিখোঁজ হয়ে যায়। প্রায় ৭ মাস পর হঠাৎ আশা দেখা দেয়, যখন মেঘালয়ের এক অচেনা বাসিন্দার মাধ্যমে পরিবার জানতে পারে জেলেরা জীবিত এবং কারাগারে দিন গুনছেন।
দেশে ফেরার সময় সীমান্তে স্বজনদের কান্না ও আনন্দের মিশ্র আবেগ চোখে পড়ে। বকুল মিয়ার স্ত্রী আজেদা বেগম বলেন,‘প্রায় এক বছর ধরে আমরা পথের ধারে বসে বসে স্বামী ফিরে আসবে কিনা ভাবতাম। রাতে ঘুম হত না, দিন চলত না। আজ যখন তাকে নিরাপদে দেখি, চোখের জল থামছে না। আল্লাহকে ধন্যবাদ, আমাদের প্রার্থনায় সাড়া দিয়েছেন।’
রমনা ব্যাপারী পাড়ার মীর জাহানের স্ত্রী মোছা. ববিতা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীর খোঁজ না পেলে আমরা বাঁচার আশা হারিয়ে ফেলতাম। একেক দিন যেন একেকটি অশান্তির সাগর পেরিয়ে যাচ্ছিলাম। আজ সে ফিরে এসেছে, সব কষ্ট যেন এক মুহূর্তেই দূর হয়ে গেল। স্বজনের কাছে ফিরে আসা এই আনন্দ কখনো ভুলব না।’
