গাজীপুর থেকে ৩ স্কুলছাত্রীকে অপহরণ, রাজশাহীতে গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে রক্ষা একজনের
রাজশাহী ব্যুরো
১০ জুলাই ২০১৯, ২৩:১৬:৪২ | অনলাইন সংস্করণ

স্কুল যাওয়ার পথে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় মাইক্রোবাসে উঠিয়ে তিন স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে।
বুধবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার শান্তিনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অপহরণের পর সন্ধ্যার দিকে মাইক্রোবাসটি রাজশাহী পৌঁছে। রাতে নগরীর তালাইমারী এলাকায় তিন স্কুলছাত্রীর মধ্যে একজন মাইক্রোবাস থেকে লাফ দেয়।
এরপর একজন দোকানি তাকে উদ্ধার করে নগরীর মতিহার থানায় হস্তান্তর করেছে। ঘটনার পরই মাইক্রোবাসটির খোঁজে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
রাজশাহীতে উদ্ধার হওয়া মেয়েটির নাম মিতা আক্তার ওরফে বর্ষা। মেয়েটির বয়স ১৪ বছর। সে গাজীপুরের মাওনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাড়ি শ্রীপুরের শান্তিনগর এলাকায়। বর্ষার বাবার নাম মতিউর রহমান। তার সঙ্গে অপহরণ হওয়া ওপর দুই শিক্ষার্থীর নাম জ্যোতি ও মেঘলা। তারাও বর্ষার সঙ্গেই পড়ে। তাদের পুরো পরিচয় সে তাৎক্ষণিকভাবে বলতে পারেনি।
নগরীর বিনোদপুর এলাকার বাসিন্দা হাসিবুর রহমান চৌধুরী (৬৫) তালাইমারী মোড়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করেছেন।
তিনি বলেন, তালাইমারীর মোড়ে তার একটি ওষুধের দোকান রয়েছে। দোকানের সামনে একটি চেয়ার পাতা থাকে। রাত আটটার দিকে হঠাৎ স্কুলের ইউনিফরম পরা একটি মেয়ে দৌড়ে এসে ওই চেয়ারে বসে কান্নাকাটি করতে থাকে। তিনি তার পরিচয় নিয়ে তার কাছ থেকেই অপহরণের ঘটনাটি জানতে পারেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে মতিহার থানার ওসিকে বিষয়টি অবহিত করেন। ওসি থানা থেকে লোক পাঠাতে চান। কিন্তু পুলিশের দেরি হচ্ছিল দেখে তিনি নিজেই থানায় গিয়ে মেয়েটিকে দিয়ে আসেন।
মেয়েটির ভাষ্য অনুযায়ী, সকাল নয়টার দিকে তারা বাড়ি থেকে স্কুলে যাচ্ছিল। পথের মধ্যে তাদের তিনজনকে সাদা রঙের বড় মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। এরপর তার আর জ্ঞান ছিল না। জ্ঞান ফেরার পরে গাড়িটি এক জায়গায় দাঁড়ালে সে দরজা খুলে লাফ দিয়ে নেমে দৌড় দেয়। পরে সে জানতে পারে সে রাজশাহীতে। লাফ দেয়ার সময় তার দুই সহপাঠী অচেতন অবস্থায় ছিল। তাদের পরনেও স্কুল ড্রেস রয়েছে বলেও জানায় বর্ষা।
মতিহার থানার পুলিশ রাত সাড়ে নয়টার দিকে মিতা আক্তারকে মুঠোফোনে তার মা নাজমা বেগমের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়।
মুঠোফোনে তার মা নাজমা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি একটি গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করেন। সকাল আটটায় তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছেন। সন্ধ্যা ছয়টায় তাকে বাড়ি থেকে ফোন করে জানানো হয় যে, মেয়ে বাড়ি ফিরে যায়নি। এরপর রাজশাহীর মতিহার থানার একজন এসআই তাকে মেয়ের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলিয়ে দেন।
তিনি বলেন, ভাসুর তৌহিদুল ইসলামসহ তিনজন রাতেই মেয়েকে উদ্ধার করতে রাজশাহীতে রওনা দিয়েছেন। তিনি মেয়ের জন্য সবার দোয়া চান। একইসঙ্গে অপহৃত অন্য দুই স্কুলছাত্রীকে যেন দ্রুত উদ্ধার করা হয় তার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।
মতিহার থানার ওসি শাহাদত হোসেন খান যুগান্তরকে বলেন, মাইক্রোবাসটির সন্ধানে পুলিশ তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। রাজশাহীর প্রতিটি চেকপোস্টে সাদা রঙের মাইক্রোবাসকে থামাতে বলা হয়েছে। পাশের জেলাগুলোতেও খবর পাঠানো হয়েছে। তবে রাত ১০টা পর্যন্ত তারা গাড়িটির কোনো খোঁজ পায়নি। আর পালিয়ে আসা মেয়েটি তাদের হেফাজতে রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
গাজীপুর থেকে ৩ স্কুলছাত্রীকে অপহরণ, রাজশাহীতে গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে রক্ষা একজনের

স্কুল যাওয়ার পথে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় মাইক্রোবাসে উঠিয়ে তিন স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে।
বুধবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার শান্তিনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অপহরণের পর সন্ধ্যার দিকে মাইক্রোবাসটি রাজশাহী পৌঁছে। রাতে নগরীর তালাইমারী এলাকায় তিন স্কুলছাত্রীর মধ্যে একজন মাইক্রোবাস থেকে লাফ দেয়।
এরপর একজন দোকানি তাকে উদ্ধার করে নগরীর মতিহার থানায় হস্তান্তর করেছে। ঘটনার পরই মাইক্রোবাসটির খোঁজে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
রাজশাহীতে উদ্ধার হওয়া মেয়েটির নাম মিতা আক্তার ওরফে বর্ষা। মেয়েটির বয়স ১৪ বছর। সে গাজীপুরের মাওনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাড়ি শ্রীপুরের শান্তিনগর এলাকায়। বর্ষার বাবার নাম মতিউর রহমান। তার সঙ্গে অপহরণ হওয়া ওপর দুই শিক্ষার্থীর নাম জ্যোতি ও মেঘলা। তারাও বর্ষার সঙ্গেই পড়ে। তাদের পুরো পরিচয় সে তাৎক্ষণিকভাবে বলতে পারেনি।
নগরীর বিনোদপুর এলাকার বাসিন্দা হাসিবুর রহমান চৌধুরী (৬৫) তালাইমারী মোড়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করেছেন।
তিনি বলেন, তালাইমারীর মোড়ে তার একটি ওষুধের দোকান রয়েছে। দোকানের সামনে একটি চেয়ার পাতা থাকে। রাত আটটার দিকে হঠাৎ স্কুলের ইউনিফরম পরা একটি মেয়ে দৌড়ে এসে ওই চেয়ারে বসে কান্নাকাটি করতে থাকে। তিনি তার পরিচয় নিয়ে তার কাছ থেকেই অপহরণের ঘটনাটি জানতে পারেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে মতিহার থানার ওসিকে বিষয়টি অবহিত করেন। ওসি থানা থেকে লোক পাঠাতে চান। কিন্তু পুলিশের দেরি হচ্ছিল দেখে তিনি নিজেই থানায় গিয়ে মেয়েটিকে দিয়ে আসেন।
মেয়েটির ভাষ্য অনুযায়ী, সকাল নয়টার দিকে তারা বাড়ি থেকে স্কুলে যাচ্ছিল। পথের মধ্যে তাদের তিনজনকে সাদা রঙের বড় মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। এরপর তার আর জ্ঞান ছিল না। জ্ঞান ফেরার পরে গাড়িটি এক জায়গায় দাঁড়ালে সে দরজা খুলে লাফ দিয়ে নেমে দৌড় দেয়। পরে সে জানতে পারে সে রাজশাহীতে। লাফ দেয়ার সময় তার দুই সহপাঠী অচেতন অবস্থায় ছিল। তাদের পরনেও স্কুল ড্রেস রয়েছে বলেও জানায় বর্ষা।
মতিহার থানার পুলিশ রাত সাড়ে নয়টার দিকে মিতা আক্তারকে মুঠোফোনে তার মা নাজমা বেগমের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়।
মুঠোফোনে তার মা নাজমা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি একটি গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করেন। সকাল আটটায় তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছেন। সন্ধ্যা ছয়টায় তাকে বাড়ি থেকে ফোন করে জানানো হয় যে, মেয়ে বাড়ি ফিরে যায়নি। এরপর রাজশাহীর মতিহার থানার একজন এসআই তাকে মেয়ের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলিয়ে দেন।
তিনি বলেন, ভাসুর তৌহিদুল ইসলামসহ তিনজন রাতেই মেয়েকে উদ্ধার করতে রাজশাহীতে রওনা দিয়েছেন। তিনি মেয়ের জন্য সবার দোয়া চান। একইসঙ্গে অপহৃত অন্য দুই স্কুলছাত্রীকে যেন দ্রুত উদ্ধার করা হয় তার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।
মতিহার থানার ওসি শাহাদত হোসেন খান যুগান্তরকে বলেন, মাইক্রোবাসটির সন্ধানে পুলিশ তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। রাজশাহীর প্রতিটি চেকপোস্টে সাদা রঙের মাইক্রোবাসকে থামাতে বলা হয়েছে। পাশের জেলাগুলোতেও খবর পাঠানো হয়েছে। তবে রাত ১০টা পর্যন্ত তারা গাড়িটির কোনো খোঁজ পায়নি। আর পালিয়ে আসা মেয়েটি তাদের হেফাজতে রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।