নেত্রকোনায় ৫৯ বিদেশ ফেরতের মধ্যে হোম কোয়ারেন্টাইনে ১০
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
১৮ মার্চ ২০২০, ১৯:৪০:২৬ | অনলাইন সংস্করণ
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে সন্দেহে নেত্রকোনায় বিদেশ ফেরত ৫৯ জনের তালিকা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১০ জনকে ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ রাখা হয়েছে। বাকিদের তথ্য এখনও জানে না জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
তবে ৫৯ জনের তালিকা পেয়ে বিদেশ ফেরতদের খোঁজ-খবর নিচ্ছে সিভিল সার্জন অফিস। তারা ইতালি, চীন, ওমান, দুবাই, সিঙ্গাপুর, জর্ডান, মালয়েশিয়া, স্পেন ও বাহরাইন থেকে ফেরত। তাদের মধ্যে দুজন নারী রয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১০ জনের মধ্যে নেত্রকোনা শহরের আরামবাগ এলাকায় এক দম্পতি গত ৮ মার্চ ইতালি থেকে নিজ বাসায় আসেন।
কলমাকান্দায় চীন ফেরত ব্যক্তি গত ৯ মার্চ দেশে ফিরে ১১ মার্চ তার শ্বশুরবাড়ি কৈলাটি ইউনিয়নে বেড়াতে আসেন। দুর্গাপুর পৌর শহরের সাধুপাড়ায় ইতালি ফেরত ব্যক্তি গত ৯ মার্চ দেশে পৌঁছে পরদিন নিজ বাড়িতে আসেন। একই শহরের দক্ষিণপাড়ায় ওমান ফেরত ব্যক্তি গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজ বাসায় আসেন।
মদন পৌর শহরের জাহাঙ্গীরপুর এলাকায় ওই নারী জর্ডান থেকে গত ১৩ মার্চ এবং একই এলাকায় মালয়েশিয়া থেকে ওই যুবক ১৪ মার্চ বাড়িতে আসেন। পূর্বধলায় কলেজ রোড এলাকায় স্পেন থেকে দুই ব্যক্তি এবং হোগলা ইউনিয়নে বাহরাইন থেকে ওই যুবক নিজ এলাকায় আসেন।
এরপর তারা প্রথমে আত্মীয়-স্বজন ও শহরের বিভিন্ন এলাকায় চলাফেরা করেন। এতে এলাকার লোকজন করোনাভাইরাস আতঙ্কে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে খবর দেন। পরে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে তাদের পরিবারের লোক-জনদেরও বাইরে চলাফেরা ও মানুষের সঙ্গে মেলামেশা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে স্থানীয়রা জানান, বিদেশ ফেরত ব্যক্তিরা বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকলেও পরিবারের সদস্যরা এই নিষেধাজ্ঞা মানছেন না। স্বাস্থ্য বিভাগ এবং প্রশাসন তাদের ব্যাপারে তেমন কোনো জোরালো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না।
তবে জেলা সিভিল সার্জন মো. তাজুল ইসলামের দাবি, বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের শরীরে কোনো করোনাভাইরাসের লক্ষণ নেই। এখন পর্যন্ত তারা সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক রয়েছেন।
তারপরও সতর্কতা হিসেবে তাদের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। এর মধ্যে কয়েকজন প্রায় ১০ দিনের মতো সময়ের পর চলে গেছেন।
জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির লোকজন সার্বক্ষণিক বিদেশ ফেরত ও তাদের পরিবারের লোকজনের ওপর নজরদারিতে রাখছেন।
বিদেশ ফেরত লোকজনের পরিবারের সদস্যরা বাড়ির বাইরে মুক্তভাবে চলাফেরা না করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যদি কেউ এই নিষেধ না মানেন তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল-জরিমানা করা হবে।
তিনি আরও জানান, বুধবার সকালে বিমানবন্দর থেকে বিদেশ ফেরত ৫৯ জনের একটি তালিকা পাঠানো হয়। তাদের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন এলাকায়। তাদের অবস্থান ও বিভিন্ন বিষয়ে প্রশাসন খোঁজ-খবর নিচ্ছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
নেত্রকোনায় ৫৯ বিদেশ ফেরতের মধ্যে হোম কোয়ারেন্টাইনে ১০
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে সন্দেহে নেত্রকোনায় বিদেশ ফেরত ৫৯ জনের তালিকা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১০ জনকে ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ রাখা হয়েছে। বাকিদের তথ্য এখনও জানে না জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
তবে ৫৯ জনের তালিকা পেয়ে বিদেশ ফেরতদের খোঁজ-খবর নিচ্ছে সিভিল সার্জন অফিস। তারা ইতালি, চীন, ওমান, দুবাই, সিঙ্গাপুর, জর্ডান, মালয়েশিয়া, স্পেন ও বাহরাইন থেকে ফেরত। তাদের মধ্যে দুজন নারী রয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১০ জনের মধ্যে নেত্রকোনা শহরের আরামবাগ এলাকায় এক দম্পতি গত ৮ মার্চ ইতালি থেকে নিজ বাসায় আসেন।
কলমাকান্দায় চীন ফেরত ব্যক্তি গত ৯ মার্চ দেশে ফিরে ১১ মার্চ তার শ্বশুরবাড়ি কৈলাটি ইউনিয়নে বেড়াতে আসেন। দুর্গাপুর পৌর শহরের সাধুপাড়ায় ইতালি ফেরত ব্যক্তি গত ৯ মার্চ দেশে পৌঁছে পরদিন নিজ বাড়িতে আসেন। একই শহরের দক্ষিণপাড়ায় ওমান ফেরত ব্যক্তি গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজ বাসায় আসেন।
মদন পৌর শহরের জাহাঙ্গীরপুর এলাকায় ওই নারী জর্ডান থেকে গত ১৩ মার্চ এবং একই এলাকায় মালয়েশিয়া থেকে ওই যুবক ১৪ মার্চ বাড়িতে আসেন। পূর্বধলায় কলেজ রোড এলাকায় স্পেন থেকে দুই ব্যক্তি এবং হোগলা ইউনিয়নে বাহরাইন থেকে ওই যুবক নিজ এলাকায় আসেন।
এরপর তারা প্রথমে আত্মীয়-স্বজন ও শহরের বিভিন্ন এলাকায় চলাফেরা করেন। এতে এলাকার লোকজন করোনাভাইরাস আতঙ্কে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে খবর দেন। পরে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে তাদের পরিবারের লোক-জনদেরও বাইরে চলাফেরা ও মানুষের সঙ্গে মেলামেশা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে স্থানীয়রা জানান, বিদেশ ফেরত ব্যক্তিরা বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকলেও পরিবারের সদস্যরা এই নিষেধাজ্ঞা মানছেন না। স্বাস্থ্য বিভাগ এবং প্রশাসন তাদের ব্যাপারে তেমন কোনো জোরালো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না।
তবে জেলা সিভিল সার্জন মো. তাজুল ইসলামের দাবি, বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের শরীরে কোনো করোনাভাইরাসের লক্ষণ নেই। এখন পর্যন্ত তারা সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক রয়েছেন।
তারপরও সতর্কতা হিসেবে তাদের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। এর মধ্যে কয়েকজন প্রায় ১০ দিনের মতো সময়ের পর চলে গেছেন।
জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির লোকজন সার্বক্ষণিক বিদেশ ফেরত ও তাদের পরিবারের লোকজনের ওপর নজরদারিতে রাখছেন।
বিদেশ ফেরত লোকজনের পরিবারের সদস্যরা বাড়ির বাইরে মুক্তভাবে চলাফেরা না করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যদি কেউ এই নিষেধ না মানেন তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল-জরিমানা করা হবে।
তিনি আরও জানান, বুধবার সকালে বিমানবন্দর থেকে বিদেশ ফেরত ৫৯ জনের একটি তালিকা পাঠানো হয়। তাদের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন এলাকায়। তাদের অবস্থান ও বিভিন্ন বিষয়ে প্রশাসন খোঁজ-খবর নিচ্ছে।