কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের ডিজিটাল পুলিশি সেবা

  
১৯ এপ্রিল ২০২০, ১০:৪৩ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ

করোনাভাইরাসের ছুটিতে একটি পরিবার খাদ্য সংকটে ভুগছেন। ত্রাণের জন্য লাইন দিয়ে রাস্তায় দাঁড়াবেন সেটিও চক্ষুলজ্জায় পারছেন না বাড়ির কর্তা। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পুলিশ সুপার, কুড়িগ্রাম পেজে তার এই সমস্যা লিখে পাঠান। 

পুলিশ সুপারের দ্রুত পদক্ষেপে এই ব্যক্তির মতই যারা খাদ্য সংকটে ভুগছেন, আশেপাশের খাদ্য অভাবে ভোগা মানুষজনের তথ্য পৌঁছে যাচ্ছে পুলিশ সুপার কুড়িগ্রাম মহিবুল ইসলাম খান, বিপিএম-এর কাছে ফেসবুক এবং তার নাম্বারে। তার নির্দেশে ত্রাণ বিতরণ করে পুলিশ স্থাপন করছে অনন্য নজির। 

ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ এবং বিদেশ ফেরত কুড়িগ্রামে অবস্থানরত বা কুড়িগ্রামে এসে আত্মগোপন করেছেন এমন ব্যক্তিদের বিস্তারিত তথ্য পৌঁছে যাচ্ছে পুলিশ সুপারের ফেসবুক পেজ এবং ফোন নাম্বারের মাধ্যমে। এই ক্ষেত্রে পরিচয় গোপন রেখেও জনগণ তথ্য প্রদান করতে পেরে এবং এই সমস্যা একযোগে মোকাবেলা করে কুড়িগ্রামকে নিরাপদ করে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ। 

শুধু তথ্য গ্রহণই নয়; সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যাবহার করে কুড়িগ্রামবাসীকে সচেতন করতে দেশের স্বনামধন্য সেলিব্রেটিদের মাধ্যমে ভিডিও বার্তা প্রেরণ করে সচেতন করার উদ্যোগও নিয়েছে পুলিশ সুপার কুড়িগ্রাম পেজ। এতে জনগণের মধ্যে আইন ও চলমান করোনাভাইরাস মোকাবেলা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য থাকছে। কোন কোন ক্ষেত্রে এই সকল পোস্ট এবং ভিডিওর ভিউ ছাড়াচ্ছে প্রায় বিশ লাখ পর্যন্ত। 

পুলিশ সুপার কুড়িগ্রাম হিসেবে দায়িত্ব পাবার পর থেকেই মহিবুল ইসলাম খান এই ফেসবুক পেজটি পরিচালনা করছেন নিয়মিত পুলিশি দায়িত্বের পাশাপাশি জনবান্ধব ডিজিটাল পুলিশিং চালুর জন্য। এর ফলও পেয়েছে জনগণ দ্রুত। জনগণের সেবায় নিয়োজিত এই অফিসারের অক্লান্ত পরিশ্রমে,  দায়িত্ব নেবার পরপরই তিনি মাদক, জুয়া ও বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স ঘোষণা দেন। 

জনগণকে আহবান জানান কুড়িগ্রামের সমস্যাগুলো এবং অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত, প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ গোপনীয়তা রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পেজে ম্যাসেজ বা কল করতে। এই বিষয়টি কুড়িগ্রামবাসীকে পুলিশের প্রতি আস্থা বাড়িয়ে দিয়েছে হাজার গুনে। যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে, অন্যায়ে বা অপরাধে তারা সরাসরি সংযুক্ত হচ্ছেন পুলিশ সুপারের কাছে এবং পাচ্ছেন দ্রুত সমাধান। 

পুলিশ সুপার কুড়িগ্রাম এখন পর্যন্ত পেজের লাইক সংখ্যা ৫৪২৪৬। কিছুদিন পূর্বে পোস্টকৃত সচেতনতামূলক মাইকিং এর একটি ভিডিও দেশজুড়ে ভাইরাল হয় এবং এতে প্রায় ৪৫ লাখ ভিউ হয় যা ভারতের বিভিন্ন বাংলাভাষীরাও শেয়ার করেন এবং মেসেজ দিয়ে ও কল করে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে জনগণকে সেবা দেবার এই আধুনিক পদ্ধতির সঙ্গে জনগণকে পরিচিত করে এবং সেবা প্রদান করে আস্থার জায়গা সৃষ্টিকারী পুলিশ সুপার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে তরুণ প্রজন্মকে অডিয়েন্স হিসেবে টার্গেট করে এই পেজটি পরিচালিত হয়, যা দ্বারা মূলত মাদক ও বিভিন্ন অপরাধ বা অনিয়ম সংক্রান্তে তথ্য সংগ্রহ করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়। পাশাপাশি এই করোনা দুর্যোগের সময় সচেতনতা সৃষ্টিতে পেজটিকে নিত্যনতুনভাবে ব্যবহারের চেষ্টা করা হচ্ছে। 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জেলার খবর
অনুসন্ধান করুন