কুড়িগ্রামে পানিবন্দি ৫০ হাজার মানুষ
টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে। ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এ দুটি নদীর অববাহিকায় দুই শতাধিক চরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকালে ধরলার পানি বিপদসীমার ১৩ ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ছে তিস্তা ও দুধকুমারেও। ফলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। দুপুর ১২টায় এ দুটি নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে তা অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, পানি যে হারে বাড়ছে তাতে জেলার বন্যা পরিস্থিতির মারত্মক অবনতি ঘটতে পারে। কুড়িগ্রামের শহর রক্ষা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সাম্প্রতিক সময়ে সংস্কার করায় এবার ধরলার পানি শহরে প্রবেশ করতে পারবে না। আর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে নদী ভাঙনের মাত্রা কিছুটা কমেছে।
এ ছাড়া কিছু কিছু ভাঙনকবলিত এলাকায় আমরা জরুরিভিত্তিতে কাজ অব্যাহত রেখেছি। কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দুই শতাধিক চর ও দ্বীপচরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এ সব এলাকায় নিমজ্জিত হয়েছে ফসল ও গ্রামীণ সড়ক।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বন্যাকবলিত এলাকায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এ সব এলাকার পাট, সবজি ও বীজতলা নিমজ্জিত হয়েছে। গ্রামীণ সড়কগুলো ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে অনেক এলাকায়। যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে নৌকা ও কলাগাছের ভেলা ব্যবহার করছে চরবাসী।
শুকনো জায়গার অভাবে অনেকেই রান্না করতে পারছেন না। প্রবল বর্ষণেও রাস্তার ওপর চালা করে অনেকে আশ্রয় নিচ্ছেন। সারডোব বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ কয়েকটি এলাকায় বাঁধ ও সড়ক ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
ব্রহ্মপুত্রের চর মশালের চরের বাসিন্দা মুসা মিয়া, হায়দার আলী ও ভগবতির চরের জাহাঙ্গীর আলম, মানিক, ফয়জার রহমান জানান, চরের অধিকাংশ ঘর-বাড়িতে পানি উঠেছে। অনেকেই উঁচু ভিটায় থাকলেও নিচু ভিটার বাসিন্দারা নৌকা ও চৌকির ওপর আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্র ও স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান তারা। নওয়াবশ গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, গ্রামের রাস্তাগুলো ভেঙে গর্ত হওয়ায় চলাচল করা যাচ্ছে না।
জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজার রহমান জানান, ইতিমধ্যে চরাঞ্চলের নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। তলিয়ে গেছে পাট, ভুট্টা, সবজি ক্ষেত ও বীজতলাসহ তিল, আউশ ধান ও কাউনের ক্ষেত।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানিয়েছেন, বন্যার মোকাবেলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করে ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রামে পানিবন্দি ৫০ হাজার মানুষ
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
২৬ জুন ২০২০, ২২:২১:৩১ | অনলাইন সংস্করণ
টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে। ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এ দুটি নদীর অববাহিকায় দুই শতাধিক চরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকালে ধরলার পানি বিপদসীমার ১৩ ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ছে তিস্তা ও দুধকুমারেও। ফলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। দুপুর ১২টায় এ দুটি নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে তা অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, পানি যে হারে বাড়ছে তাতে জেলার বন্যা পরিস্থিতির মারত্মক অবনতি ঘটতে পারে। কুড়িগ্রামের শহর রক্ষা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সাম্প্রতিক সময়ে সংস্কার করায় এবার ধরলার পানি শহরে প্রবেশ করতে পারবে না। আর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে নদী ভাঙনের মাত্রা কিছুটা কমেছে।
এ ছাড়া কিছু কিছু ভাঙনকবলিত এলাকায় আমরা জরুরিভিত্তিতে কাজ অব্যাহত রেখেছি। কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দুই শতাধিক চর ও দ্বীপচরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এ সব এলাকায় নিমজ্জিত হয়েছে ফসল ও গ্রামীণ সড়ক।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বন্যাকবলিত এলাকায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এ সব এলাকার পাট, সবজি ও বীজতলা নিমজ্জিত হয়েছে। গ্রামীণ সড়কগুলো ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে অনেক এলাকায়। যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে নৌকা ও কলাগাছের ভেলা ব্যবহার করছে চরবাসী।
শুকনো জায়গার অভাবে অনেকেই রান্না করতে পারছেন না। প্রবল বর্ষণেও রাস্তার ওপর চালা করে অনেকে আশ্রয় নিচ্ছেন। সারডোব বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ কয়েকটি এলাকায় বাঁধ ও সড়ক ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
ব্রহ্মপুত্রের চর মশালের চরের বাসিন্দা মুসা মিয়া, হায়দার আলী ও ভগবতির চরের জাহাঙ্গীর আলম, মানিক, ফয়জার রহমান জানান, চরের অধিকাংশ ঘর-বাড়িতে পানি উঠেছে। অনেকেই উঁচু ভিটায় থাকলেও নিচু ভিটার বাসিন্দারা নৌকা ও চৌকির ওপর আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্র ও স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান তারা। নওয়াবশ গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, গ্রামের রাস্তাগুলো ভেঙে গর্ত হওয়ায় চলাচল করা যাচ্ছে না।
জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজার রহমান জানান, ইতিমধ্যে চরাঞ্চলের নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। তলিয়ে গেছে পাট, ভুট্টা, সবজি ক্ষেত ও বীজতলাসহ তিল, আউশ ধান ও কাউনের ক্ষেত।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানিয়েছেন, বন্যার মোকাবেলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করে ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023