কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি 

 কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি 
২৭ জুন ২০২০, ০৭:০৬ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটেছে। শনিবার দুপুরে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৩ সেমি এবং ব্রহ্মপূত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৩৮ সেমি এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৪ সেমি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। 

উজান থেকে নেমে আসা পানি প্রবাহ অব্যাহত থাকায় জেলার ২৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে প্রায় ৫শ’ হেক্টর জমির আউশ, পাট, ভুট্টা, কাউন, চিনা ও শাক-সবজির ক্ষেত। এ ছাড়াও নদী ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে ২ শতাধিক পরিবার। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায়, ধরলা নদীর পানি ৩৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

অপরদিকে চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৩৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৮ সেমি এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩১ সেমি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৪ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ২৭ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। 

সরেজমিন সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরযাত্রাপুর এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। করোনার কারণে এমনিতেই কাজ-কর্ম নেই, তার উপর বন্যার আঘাতে বিপর্যদস্ত হয়ে পড়েছে বানভাসিরা। 

এই গ্রামের আবুল হোসেন ও মোজাম্মেল হক জানান, চরের আবাদ সব নষ্ট হয়ে গেছে। বাড়ির চারপাশে যারা সবজি লাগিয়েছেন সেগুলো এখন পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়াও নিচু লেট্রিন ডুবে যাওয়ায় বিপদে পড়েছে নারী ও শিশুরা।

আরাজী পার্বতীপুর গ্রামের ছকিনা ও তাহেরা জানান, পুরুষ মানুষ বাইরে লেট্রিন সাড়লেও মহিলারা ও জোয়ান মেয়েরা দুর্ভোগে পড়েছে।

এ দিকে প্রচণ্ড নদী ভাঙনের মুখে পড়েছে উলিপুর উপজেলার হাতিয়া, থেতরাই, বুড়াবুড়ি, বেগমগঞ্জ এলাকার মানুষ। ভাঙছে রৌমারীর কর্ত্তিমারী, চিলমারীর নয়ারহাট, কুড়িগ্রাম সদরের মোগলবাসা ও সারডোব এলাকা। গত এক সপ্তাহের ভাঙনে বিভিন্ন উপজেলা মিলিয়ে ২ শতাধিক বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে গেছে। 

ব্রহ্মপুত্রের চর ও মশালের চরের বাসিন্দা মুসা মিয়া ও ভগবতির চরের জাহাঙ্গীর আলম জানান, চরের অধিকাংশ ঘর-বাড়িতে পানি উঠেছে। অনেকেই উঁচু ভিটায় থাকলেও নিচু ভিটার বাসিন্দারা নৌকা ও চৌকির উপর আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্র ও স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান তারা। নওয়াবশ গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, গ্রামের রাস্তাগুলো ভেঙে গর্ত পড়ায় চলাচল করা যাচ্ছে না। 

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ভাঙন কবলিতদের সড়িয়ে আনতে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন। এ ছাড়াও শুক্রবার ভাঙনকবলিত উপজেলাগুলোতে ৩০২ মে.টন চাল ও ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জেলার খবর
অনুসন্ধান করুন