কুড়িগ্রামে বন্যায় পানিবন্দি দেড় লাখ মানুষ

 কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি 
৩০ জুন ২০২০, ১০:১৭ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ

কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। নদ-নদীর পানি সামান্য কমলেও ধরলা, দুধকুমর ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি গত ৫ দিন ধরে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। 

শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি প্রায় দেড় লাখ মানুষ পড়েছে চরম দুর্ভোগে। ৬ দিন ধরে বন্যার পানিতে ভাসলেও এখন পর্যন্ত সরকারি কিংবা বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ তৎপরতা চোখে পড়ছে না। চলতি বন্যায় জেলায় নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ভিটেমাটি হারিয়েছে ৫০০ পরিবার।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার ধরলার পানি বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৭১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া দুধকুমর নদীর পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ভাঙন দেখা দিয়েছে নাগড়াকুড়ার টি-বাঁধ, সারডোব, নুনখাওয়া ও মোগলবাসা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ ১৫টি স্পটে। 

হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবিএম আবুল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নের ৩ হাজার পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ ৫ দিন ধরে বন্যার পানিতে ভাসছে। বানভাসি মানুষরা পড়েছে চড়ম দুর্ভোগে। শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। ৭ শতাধিক পরিবার বাড়ি-ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে বাঁধের রাস্তায়। 

তিনি জানান, সোমবার উপজেলা পরিষদে মিটিং করে হাতিয়া ইউনিয়নে ৩৫০ প্যাকেট ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হয়। যা এখনও হাতে পাইনি। আশা করি বুধবার হাতে পেলেই তা বিতরণ করা হবে। প্রতি প্যাকেটে রয়েছে ২০ কেজি চাল, ১ কেজি করে তেল, চাল, ডাল, লবণ ও চিনি। অপ্রতুল এই ত্রাণ নিয়ে তিনি বিপাকে পড়েছেন বলে জানান। 

কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা দিলীপ কুমার সাহা জানান, জেলার ৩টি পৌরসভা ও ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৫টি বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ৩৫৭টি গ্রাম বন্যার পানিতে ভাসছে। এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৯ দশমিক ৫০ কিমি বাঁধ। ৩৭ কিমি গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা। ভাঙনের শিকার হয়ে ভিটেমাটি হারিয়েছেন ৫শ' পরিবার। ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩ হাজার ৯২২ হেক্টর। 
 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জেলার খবর
অনুসন্ধান করুন