তিস্তা পুনঃখনন দাবিতে শত কিলোমিটারব্যাপী মানববন্ধন
রংপুর ব্যুরো
০১ নভেম্বর ২০২০, ২২:৪৭:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ
তিস্তা নদীর ভাঙন রোধ, নদী পুনঃখনন, তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা, ভাঙনকবলিত হাজার হাজার পরিবারকে পুনর্বাসনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তিস্তা পারের রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলার মানুষ।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই কালীগঞ্জ জিরোপয়েন্ট থেকে মানববন্ধনটি শুরু হয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিঘাট পর্যন্ত প্রায় শত কিলোমিটারব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার বেলা ১১টায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুরে কাউনিয়ায় তিস্তা ব্রিজসংলগ্ন পীরগাছা উপজেলার শিবদেব পাকার মাথাসহ ৭৫টি স্পটে মানববন্ধনে অংশ নেন তিস্তা বাঁচাও নদী রক্ষা কমিটির নেতারা।
বিভিন্ন স্থানে সমাবেশে বক্তব্য দেন- তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী, সফিয়ার রহমান, শফিকুল ইসলাম কানু, আমিন উদ্দিন বিএসসি, মোজফফর হোসেন, অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, মাহমুদ আলম, মাহাবুব আলম, আমিনুর রহমান, সাদেকুল ইসলাম দুলাল, আবদুন নুর দুলাল, বখতিয়ার হোসেন শিশির, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগীয় প্রধান ড. তুহিন ওয়াদুদ, রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুজ্জামান খান প্রমুখ।
রংপুর বিভাগের তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও আন্দোলনের রংপুর বিভাগীয় সম্পাদক সফিয়ার রহমান বলেন, সরকারের তিস্তা নদীর মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার তিস্তাপারের জনগণকে একত্র করতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। তিস্তাপারের জনগণ যে যেখানে আছেন বাড়ির পাশে এসে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি আরও বলেন, তিস্তা নদী রংপুর বিভাগের পাঁচটি জেলা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এসব এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন, উন্নয়ন কর্মী ও সুধীজন ওই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন, সরকার তিস্তা রক্ষায় যে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
নদী বিশেষজ্ঞ ড. তুহিন ওয়াদুদ মনে করেন, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি অভিন্ন পানি চুক্তি ও নদী খনন অবিলম্বে করতে হবে। অন্যথায় তিস্তাকে রক্ষা করা যাবে না। তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনায় মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানানো হয় সমাবেশ থেকে।
মানববন্ধন চলাকালে এক সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রতি বছর তিস্তা নদীর অব্যাহত ভাঙনে হাজার হাজার পরিবার বাস্তুভিটা ও জমি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার পানি একেবারে কমে যায়, ফলে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। ভারতের উজানে বাঁধ দিয়ে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে নদী পুনঃখনন না হওয়ায় তিস্তা মরা খালে পরিণত হচ্ছে। এ অবস্থায় জরুরিভিত্তিতে তিস্তা খনন করে পানির প্রবাহ অব্যাহত রাখলে বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের কবলে পড়তে হবে না।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তিস্তা নদী বাংলাদেশ অংশে ১১৫ কিলোমিটার প্রবাহিত। এ অংশে প্রতি বছর বন্যা আর ভাঙনে লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যা ও ভাঙনের হাত থেকে মুক্তি চান নদী তীরবর্তী মানুষ। তিস্তা নদীর সুরক্ষা, দুই তীরের বন্যা-ভাঙন রোধ ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিও জানান তারা।
ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত ক্ষতিপূরণ ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নদী তীরের ৭৫টি স্পটে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে তিস্তার দুই তীরে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
তিস্তা পুনঃখনন দাবিতে শত কিলোমিটারব্যাপী মানববন্ধন
তিস্তা নদীর ভাঙন রোধ, নদী পুনঃখনন, তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা, ভাঙনকবলিত হাজার হাজার পরিবারকে পুনর্বাসনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তিস্তা পারের রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলার মানুষ।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই কালীগঞ্জ জিরোপয়েন্ট থেকে মানববন্ধনটি শুরু হয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিঘাট পর্যন্ত প্রায় শত কিলোমিটারব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার বেলা ১১টায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুরে কাউনিয়ায় তিস্তা ব্রিজসংলগ্ন পীরগাছা উপজেলার শিবদেব পাকার মাথাসহ ৭৫টি স্পটে মানববন্ধনে অংশ নেন তিস্তা বাঁচাও নদী রক্ষা কমিটির নেতারা।
বিভিন্ন স্থানে সমাবেশে বক্তব্য দেন- তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী, সফিয়ার রহমান, শফিকুল ইসলাম কানু, আমিন উদ্দিন বিএসসি, মোজফফর হোসেন, অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, মাহমুদ আলম, মাহাবুব আলম, আমিনুর রহমান, সাদেকুল ইসলাম দুলাল, আবদুন নুর দুলাল, বখতিয়ার হোসেন শিশির, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগীয় প্রধান ড. তুহিন ওয়াদুদ, রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুজ্জামান খান প্রমুখ।
রংপুর বিভাগের তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও আন্দোলনের রংপুর বিভাগীয় সম্পাদক সফিয়ার রহমান বলেন, সরকারের তিস্তা নদীর মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার তিস্তাপারের জনগণকে একত্র করতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। তিস্তাপারের জনগণ যে যেখানে আছেন বাড়ির পাশে এসে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি আরও বলেন, তিস্তা নদী রংপুর বিভাগের পাঁচটি জেলা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এসব এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন, উন্নয়ন কর্মী ও সুধীজন ওই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন, সরকার তিস্তা রক্ষায় যে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
নদী বিশেষজ্ঞ ড. তুহিন ওয়াদুদ মনে করেন, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি অভিন্ন পানি চুক্তি ও নদী খনন অবিলম্বে করতে হবে। অন্যথায় তিস্তাকে রক্ষা করা যাবে না। তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনায় মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানানো হয় সমাবেশ থেকে।
মানববন্ধন চলাকালে এক সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রতি বছর তিস্তা নদীর অব্যাহত ভাঙনে হাজার হাজার পরিবার বাস্তুভিটা ও জমি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার পানি একেবারে কমে যায়, ফলে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। ভারতের উজানে বাঁধ দিয়ে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে নদী পুনঃখনন না হওয়ায় তিস্তা মরা খালে পরিণত হচ্ছে। এ অবস্থায় জরুরিভিত্তিতে তিস্তা খনন করে পানির প্রবাহ অব্যাহত রাখলে বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের কবলে পড়তে হবে না।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তিস্তা নদী বাংলাদেশ অংশে ১১৫ কিলোমিটার প্রবাহিত। এ অংশে প্রতি বছর বন্যা আর ভাঙনে লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যা ও ভাঙনের হাত থেকে মুক্তি চান নদী তীরবর্তী মানুষ। তিস্তা নদীর সুরক্ষা, দুই তীরের বন্যা-ভাঙন রোধ ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিও জানান তারা।
ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত ক্ষতিপূরণ ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নদী তীরের ৭৫টি স্পটে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে তিস্তার দুই তীরে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হন।