অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আগেই কৃষি কর্মকর্তাকে বদলি
যশোরে সার কেলেঙ্কারি
যশোর ব্যুরো
১৬ নভেম্বর ২০২০, ২২:৪৯:১০ | অনলাইন সংস্করণ
যশোরের চৌগাছায় বিসিআইসির সার কালোবাজারির প্রমাণ পাওয়ায় তিন ডিলারের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করে উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটি। এরপর নানামুখী চাপে পড়েন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দিন। তাকে নানাভাবে হুমকি ধমকিও দেয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
এই ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আগেই গত ১২ নভেম্বর চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দিনকে মেহেরপুরের গাংনীতে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানির পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সোমবার জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ও জেলা সার, বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, মন্ত্রণালয় কোন বিবেচনায় কৃষি কর্মকর্তাকে বদলি করেছেন জানি না। তবে কর্মকর্তা বদলি হলেও অনিয়মে জড়িত কোনো ডিলার ছাড় পাবে না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা যায়, গত ৯ নভেম্বর এই অফিস আদেশ হলেও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. আসাদুল্লাহ আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ১২ নভেম্বর।
আদেশে লেখা হয়েছে এটি স্ট্যান্ড রিলিজ বলে গণ্য হবে। একই আদেশে চৌগাছায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দিনকে মেহেরপুরের গাংনীতে বদলি করা হয়েছে। তার স্থলে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম শাহাবুদ্দিন আহমেদকে বদলি করা হয়েছে।
রইচ উদ্দিনের আগে চৌগাছায় কর্মরত ছিলেন কেএম শাহাবুদ্দিন। গত ১৩ অক্টোবর উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় চৌগাছা উপজেলা ফার্টিলাইজারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ইউনুছ আলী দফাদারের মালিকানাধীন মেসার্স ইউনূচ আলী, ফরিদুল ইসলামের মালিকানাধীন মেসার্স ফরিদুল ইসলাম ও বিএনপি নেতা আতিকুর রহমান লেন্টুর মালিকানাধীন মেসার্স শয়ন ট্রেডার্সের ডিলারশিপ বাতিলের সুপারিশ গৃহীত হয়।
এরপর সুপারিশ পাঠানো হয় জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটিতে। জেলা কমিটি সভায় ফের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির তদন্ত চলমান রয়েছে। এরমধ্যে চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দিনকে নানাভাবে হুমকি ধমকি দেয়া হয়।
তিনি নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ডিলারদের অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকায় কৃষি কর্মকর্তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে।
এ প্রসঙ্গে চৌগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার রইচ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সরকারি চাকরি করি। আমাদের বদলি হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে ভালো কাজ করতে গিয়ে এমন বদলির আদেশে হতাশ হয়েছি। এতে অনিয়মে জড়িতরা উৎসাহিত হবে। আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
যশোরে সার কেলেঙ্কারি
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আগেই কৃষি কর্মকর্তাকে বদলি
যশোরের চৌগাছায় বিসিআইসির সার কালোবাজারির প্রমাণ পাওয়ায় তিন ডিলারের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করে উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটি। এরপর নানামুখী চাপে পড়েন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দিন। তাকে নানাভাবে হুমকি ধমকিও দেয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
এই ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আগেই গত ১২ নভেম্বর চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দিনকে মেহেরপুরের গাংনীতে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানির পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সোমবার জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ও জেলা সার, বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, মন্ত্রণালয় কোন বিবেচনায় কৃষি কর্মকর্তাকে বদলি করেছেন জানি না। তবে কর্মকর্তা বদলি হলেও অনিয়মে জড়িত কোনো ডিলার ছাড় পাবে না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা যায়, গত ৯ নভেম্বর এই অফিস আদেশ হলেও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. আসাদুল্লাহ আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ১২ নভেম্বর।
আদেশে লেখা হয়েছে এটি স্ট্যান্ড রিলিজ বলে গণ্য হবে। একই আদেশে চৌগাছায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দিনকে মেহেরপুরের গাংনীতে বদলি করা হয়েছে। তার স্থলে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম শাহাবুদ্দিন আহমেদকে বদলি করা হয়েছে।
রইচ উদ্দিনের আগে চৌগাছায় কর্মরত ছিলেন কেএম শাহাবুদ্দিন। গত ১৩ অক্টোবর উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় চৌগাছা উপজেলা ফার্টিলাইজারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ইউনুছ আলী দফাদারের মালিকানাধীন মেসার্স ইউনূচ আলী, ফরিদুল ইসলামের মালিকানাধীন মেসার্স ফরিদুল ইসলাম ও বিএনপি নেতা আতিকুর রহমান লেন্টুর মালিকানাধীন মেসার্স শয়ন ট্রেডার্সের ডিলারশিপ বাতিলের সুপারিশ গৃহীত হয়।
এরপর সুপারিশ পাঠানো হয় জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটিতে। জেলা কমিটি সভায় ফের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির তদন্ত চলমান রয়েছে। এরমধ্যে চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দিনকে নানাভাবে হুমকি ধমকি দেয়া হয়।
তিনি নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ডিলারদের অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকায় কৃষি কর্মকর্তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে।
এ প্রসঙ্গে চৌগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার রইচ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সরকারি চাকরি করি। আমাদের বদলি হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে ভালো কাজ করতে গিয়ে এমন বদলির আদেশে হতাশ হয়েছি। এতে অনিয়মে জড়িতরা উৎসাহিত হবে। আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে।