কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীর মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
২০ নভেম্বর ২০২০, ২০:৩৪:৪৩ | অনলাইন সংস্করণ
কক্সবাজারের কলাতলীর সি-ক্লাসিক রিসোর্টের ৮ তলা থেকে পড়ে সোহাগ বাবু শেখের (১৯) মৃত্যু হয়েছে। তবে পরিবারের দাবি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিয়েছে হত্যাকারীরা।
শুক্রবার সকালে কক্সবাজার থেকে টাঙ্গাইলের নিজ বাড়িতে আনা হয় সোহাগের মরদেহ। এরপর শত শত নারী-পুরুষ এক নজর দেখতে আসেন মৃত সোহাগকে। এ সময় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
নিহত সোহাগ বাবু শেখ টাঙ্গাইল পৌর এলাকার ১৪নং ওয়ার্ডের মোনায়েম খান খানসুর ছোট ছেলে।
নিহতের বাবা মোনায়েম খান বলেন, এটা আত্মহত্যা না। দ্বীপ আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই। একটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর বিচার চাই আমি।
নিহতের ভাই নাছির বলেন, ঘটনার আগে আমার ভাই বাবু আমার বড় ভাইয়ের কাছে ৬০০ টাকা চায়। সে বিকালে দিতে চাইলে তাকে জরুরিভাবে পাঠাতে বলে। তা না হলে দ্বীপ তাকে মারবে বলে জানায়; কিন্তু টাকা পাঠানোর পরও বাবুকে মারধর করে। এটা আমরা পরে জানতে পারি।
তিনি বলেন, বাবু আরও বলেছিল- ওরা কেউ ফোন দিলে ওদের কথা না শুনতে। ওরা আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এরপর ওর কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নেয়। তারপর আর কোনো যোগাযোগ করতে পারিনি।
নাছির আরও বলেন, মঙ্গলবার রাতে আমরা খবর পাই ও নাকি আত্মহত্যা করেছে। আমরা এটা বিশ্বাস করি না। দ্বীপই আমার ভাইকে হত্যা করেছে। তা না হলে ৮ তলা থেকে কেউ পড়ে গেলে তার শরীরের অনেক হাড় ভেঙে যাওয়ার কথা। শরীরের অনেক অংশ থেঁতলে যাওয়ার কথা। কিন্তু তার কিছুই হয়নি। শুধু বাবুর শরীরে আঘাতের অনেক চিহ্ন রয়েছে।
তিনি বলেন, দ্বীপ যদি এর সঙ্গে জড়িত না থাকত তাহলে ওর মা শাহিন আরা মিষ্টু কীভাবে ঘটনার পরেই সেখানে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে। আর আমাদের জানায় রাতে। আমার বাবা কক্সবাজার থানায় গিয়ে মামলা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু থানা পুলিশ কোনো মামলা নেয়নি। পরে একটি সাধারণ অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। ওরা প্রভাবশালী বলে সব জায়গা ম্যানেজ করেছে। এখন আমাদের কথা কেউ শুনবে না। আমার ভাইকে যারা হত্যা করছে তার বিচার চাই। তাদের সর্ব্বোচ শাস্তি দাবি করছি।
নিহতের ফুপু রানু সুলতানা বলেন, বাবু অনেক ভালো ছেলে ছিল। ওর বাবার সঙ্গে রঙের কাজ করত। কয়েক দিন আগে এলাকার অনেকের সঙ্গেই কক্সবাজার ঘুরতে যায়। আমরাই বাবুকে কিছু টাকা দিয়েছিলাম ঘুরতে যাওয়ার জন্য। ওর সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নেই। তাহলে কেন বাবুকে হত্যা করল। আমরা এর বিচার চাই।
উল্লেখ্য, গত শনিবার টাঙ্গাইল থেকে ১৪নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের (আদালতপাড়া বয়েজ) আয়োজনে ৫২ জনের একটি দল কক্সবাজারে ভ্রমণে যায়। সেখানে কলাতলীর সি-ক্লাসিক রিসোর্ট হোটেলে ওঠে। সবাই যে যার মতো করে হোটেলে অবস্থান করে। বাবু হোটেলের ৮০২ নম্বর রুমে ছিল। হঠাৎ বাবু শেখ ৮ তলা থেকে নিচে পড়ে যায় বলে খবর আসে। তখন সবাই তাকে উদ্ধার করে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে বাবুর লাশ দাফন করা হয়।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীর মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা
কক্সবাজারের কলাতলীর সি-ক্লাসিক রিসোর্টের ৮ তলা থেকে পড়ে সোহাগ বাবু শেখের (১৯) মৃত্যু হয়েছে। তবে পরিবারের দাবি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিয়েছে হত্যাকারীরা।
শুক্রবার সকালে কক্সবাজার থেকে টাঙ্গাইলের নিজ বাড়িতে আনা হয় সোহাগের মরদেহ। এরপর শত শত নারী-পুরুষ এক নজর দেখতে আসেন মৃত সোহাগকে। এ সময় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
নিহত সোহাগ বাবু শেখ টাঙ্গাইল পৌর এলাকার ১৪নং ওয়ার্ডের মোনায়েম খান খানসুর ছোট ছেলে।
নিহতের বাবা মোনায়েম খান বলেন, এটা আত্মহত্যা না। দ্বীপ আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই। একটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর বিচার চাই আমি।
নিহতের ভাই নাছির বলেন, ঘটনার আগে আমার ভাই বাবু আমার বড় ভাইয়ের কাছে ৬০০ টাকা চায়। সে বিকালে দিতে চাইলে তাকে জরুরিভাবে পাঠাতে বলে। তা না হলে দ্বীপ তাকে মারবে বলে জানায়; কিন্তু টাকা পাঠানোর পরও বাবুকে মারধর করে। এটা আমরা পরে জানতে পারি।
তিনি বলেন, বাবু আরও বলেছিল- ওরা কেউ ফোন দিলে ওদের কথা না শুনতে। ওরা আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এরপর ওর কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নেয়। তারপর আর কোনো যোগাযোগ করতে পারিনি।
নাছির আরও বলেন, মঙ্গলবার রাতে আমরা খবর পাই ও নাকি আত্মহত্যা করেছে। আমরা এটা বিশ্বাস করি না। দ্বীপই আমার ভাইকে হত্যা করেছে। তা না হলে ৮ তলা থেকে কেউ পড়ে গেলে তার শরীরের অনেক হাড় ভেঙে যাওয়ার কথা। শরীরের অনেক অংশ থেঁতলে যাওয়ার কথা। কিন্তু তার কিছুই হয়নি। শুধু বাবুর শরীরে আঘাতের অনেক চিহ্ন রয়েছে।
তিনি বলেন, দ্বীপ যদি এর সঙ্গে জড়িত না থাকত তাহলে ওর মা শাহিন আরা মিষ্টু কীভাবে ঘটনার পরেই সেখানে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে। আর আমাদের জানায় রাতে। আমার বাবা কক্সবাজার থানায় গিয়ে মামলা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু থানা পুলিশ কোনো মামলা নেয়নি। পরে একটি সাধারণ অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। ওরা প্রভাবশালী বলে সব জায়গা ম্যানেজ করেছে। এখন আমাদের কথা কেউ শুনবে না। আমার ভাইকে যারা হত্যা করছে তার বিচার চাই। তাদের সর্ব্বোচ শাস্তি দাবি করছি।
নিহতের ফুপু রানু সুলতানা বলেন, বাবু অনেক ভালো ছেলে ছিল। ওর বাবার সঙ্গে রঙের কাজ করত। কয়েক দিন আগে এলাকার অনেকের সঙ্গেই কক্সবাজার ঘুরতে যায়। আমরাই বাবুকে কিছু টাকা দিয়েছিলাম ঘুরতে যাওয়ার জন্য। ওর সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নেই। তাহলে কেন বাবুকে হত্যা করল। আমরা এর বিচার চাই।
উল্লেখ্য, গত শনিবার টাঙ্গাইল থেকে ১৪নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের (আদালতপাড়া বয়েজ) আয়োজনে ৫২ জনের একটি দল কক্সবাজারে ভ্রমণে যায়। সেখানে কলাতলীর সি-ক্লাসিক রিসোর্ট হোটেলে ওঠে। সবাই যে যার মতো করে হোটেলে অবস্থান করে। বাবু হোটেলের ৮০২ নম্বর রুমে ছিল। হঠাৎ বাবু শেখ ৮ তলা থেকে নিচে পড়ে যায় বলে খবর আসে। তখন সবাই তাকে উদ্ধার করে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে বাবুর লাশ দাফন করা হয়।