মুক্তা চাষে সাফল্যের স্বপ্ন রাজবাড়ীর তারেকের
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
২৪ নভেম্বর ২০২০, ২১:০৬:১২ | অনলাইন সংস্করণ
গহনা হিসেবে বিশ্বে মুক্তার কদর রয়েছে। প্রাকৃতিক মুক্তার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে পুকুরে মুক্তা চাষ শুরু হয়েছে। তেমনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের কালিচরণপুর গ্রামে মাছের চাষের সঙ্গে মুক্তা চাষ করে সাফল্যের স্বপ্ন দেখছেন সাজ্জাদুল রহমান তারেক।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তা রফতানি করা যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি। এরই মাঝে দেশের বেশ কিছু কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন।
সাজ্জাদুল রহমান তারেক বলেন, ২০১৮ সালের দিকে আমি ভারতের একটি মুক্তা গবেষণা কেন্দ্র (সেপা) থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। এরপর স্বপ্ন দেখি নিজের পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি মুক্তা চাষের।
২০১৯ সালে ১৪ হাজার ঝিনুকের মাঝে মুক্তা চাষ শুরু করি। প্রথমে স্থানীয় বিভিন্ন পুকুর থেকে ঝিনুক সংগ্রহ করি। এরপর ঝিনুকের মধ্যে ডাইজ স্থাপন করা হয়। এরপর টিস্যু প্রতিস্থাপন করে বিভিন্ন ধরনের নিউক্লিয়াস পদ্ধতিতে মুক্তা চাষ শুরু করছি।
তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে ২০ হাজার ঝিনুক সংগ্রহ করে বাইরের দেশ থেকে ডাইজ এবং নিউক্লিয়াস সংগ্রহ করে মুক্তার চাষ করছি। প্রথমে ৯ লাখ টাকা দিয়ে মুক্তার চাষ শুরু করি। আগামী ফেব্রুয়ারিতে আমার মুক্তা চাষে পরিপক্কতা পাবে।
তিনি জানান, ১৪ হাজার ঝিনুকের মধ্যে কিছু ঝিনুক মারা গেছে, যেখান থেকে মুক্তা তৈরি হয় না। পরিচর্যার ক্ষেত্রে দেখা যায় পুকুরের ১০ শতাংশ ঝিনুক মারা গিয়েছে। মুক্তার বাজার মূল্য- ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। তার প্রত্যাশা আগামী ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ২৫ লাখ টাকার মুক্তা বিক্রি করতে পারবেন তিনি।
আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শওকত হাসান বলেন, আমি খোঁজ খবর রাখছি সাজ্জাদুলের মুক্তা চাষ নিয়ে। এখন সে যে পর্যায়ে রয়েছে তাতে আগামী ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চে সে ব্যাপকভাবে লাভবান হবে। তাছাড়া সে আর্থিকভাবে লাভবান হলে আলীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন পুকুরে মৎস্য চাষের পাশাপাশি মুক্তারও চাষ শুরু করা যাবে।
রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল যুগান্তরকে বলেন, আমি এখানে যোগদানের পর সাজ্জাদুল রহমান তারেকের মুক্তা চাষের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে সার্বিকভাবে মৎস্য বিভাগ থেকে তাকে পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছি। তারেকের স্বপ্ন বাস্তবের পথে রয়েছে।
বিশ্বব্যাংক তাকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে রাজবাড়ী মৎস্য বিভাগের মাধ্যমে ইতিমধ্যে ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছে। আলীপুরসহ রাজবাড়ীতে বেশ কিছু পুকুরে দ্রুত সময়ে আরও মুক্তা চাষ শুরু করা হবে বলে জানান জেলার এই মৎস্য কর্মকর্তা।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
মুক্তা চাষে সাফল্যের স্বপ্ন রাজবাড়ীর তারেকের
গহনা হিসেবে বিশ্বে মুক্তার কদর রয়েছে। প্রাকৃতিক মুক্তার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে পুকুরে মুক্তা চাষ শুরু হয়েছে। তেমনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের কালিচরণপুর গ্রামে মাছের চাষের সঙ্গে মুক্তা চাষ করে সাফল্যের স্বপ্ন দেখছেন সাজ্জাদুল রহমান তারেক।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তা রফতানি করা যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি। এরই মাঝে দেশের বেশ কিছু কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন।
সাজ্জাদুল রহমান তারেক বলেন, ২০১৮ সালের দিকে আমি ভারতের একটি মুক্তা গবেষণা কেন্দ্র (সেপা) থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। এরপর স্বপ্ন দেখি নিজের পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি মুক্তা চাষের।
২০১৯ সালে ১৪ হাজার ঝিনুকের মাঝে মুক্তা চাষ শুরু করি। প্রথমে স্থানীয় বিভিন্ন পুকুর থেকে ঝিনুক সংগ্রহ করি। এরপর ঝিনুকের মধ্যে ডাইজ স্থাপন করা হয়। এরপর টিস্যু প্রতিস্থাপন করে বিভিন্ন ধরনের নিউক্লিয়াস পদ্ধতিতে মুক্তা চাষ শুরু করছি।
তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে ২০ হাজার ঝিনুক সংগ্রহ করে বাইরের দেশ থেকে ডাইজ এবং নিউক্লিয়াস সংগ্রহ করে মুক্তার চাষ করছি। প্রথমে ৯ লাখ টাকা দিয়ে মুক্তার চাষ শুরু করি। আগামী ফেব্রুয়ারিতে আমার মুক্তা চাষে পরিপক্কতা পাবে।
তিনি জানান, ১৪ হাজার ঝিনুকের মধ্যে কিছু ঝিনুক মারা গেছে, যেখান থেকে মুক্তা তৈরি হয় না। পরিচর্যার ক্ষেত্রে দেখা যায় পুকুরের ১০ শতাংশ ঝিনুক মারা গিয়েছে। মুক্তার বাজার মূল্য- ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। তার প্রত্যাশা আগামী ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ২৫ লাখ টাকার মুক্তা বিক্রি করতে পারবেন তিনি।
আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শওকত হাসান বলেন, আমি খোঁজ খবর রাখছি সাজ্জাদুলের মুক্তা চাষ নিয়ে। এখন সে যে পর্যায়ে রয়েছে তাতে আগামী ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চে সে ব্যাপকভাবে লাভবান হবে। তাছাড়া সে আর্থিকভাবে লাভবান হলে আলীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন পুকুরে মৎস্য চাষের পাশাপাশি মুক্তারও চাষ শুরু করা যাবে।
রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল যুগান্তরকে বলেন, আমি এখানে যোগদানের পর সাজ্জাদুল রহমান তারেকের মুক্তা চাষের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে সার্বিকভাবে মৎস্য বিভাগ থেকে তাকে পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছি। তারেকের স্বপ্ন বাস্তবের পথে রয়েছে।
বিশ্বব্যাংক তাকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে রাজবাড়ী মৎস্য বিভাগের মাধ্যমে ইতিমধ্যে ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছে। আলীপুরসহ রাজবাড়ীতে বেশ কিছু পুকুরে দ্রুত সময়ে আরও মুক্তা চাষ শুরু করা হবে বলে জানান জেলার এই মৎস্য কর্মকর্তা।