৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে নির্যাতিত শিশু গৃহকর্মীকে উদ্ধার করল পুলিশ
ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
৩০ নভেম্বর ২০২০, ২২:০০:২৮ | অনলাইন সংস্করণ
৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে নির্যাতনের শিকার গুরুতর জখম ১২ বছরের এক শিশু গৃহকর্মীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার বিকালে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের মেলাবর গ্রামের নিজ বাড়ি হতে ওই গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শিশুটির শরীরের গোপনাঙ্গের ক্ষত মারাত্মক হওয়ায় তাকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তাকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ও সেল (ওসিসি) ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।
শিশুটি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের মেলাবর গ্রামের তালিকাভুক্ত ভিক্ষুক মৃত বাছেদ আলী ফকিরের মেয়ে আঁখি মনি।
আঁখি মনির মা শিরিনা খাতুন অভিযোগে জানান, ডালিম চন্দ্র রায় নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে তার মেয়ে দুই বছর থেকে গৃহকর্মীর কাজ করত রংপুর শহরের আদর্শপাড়া মহল্লার দন্ত চিকিৎসক কান্তা বেগম এবং রেজাউল বারী দম্পতির বাসায়। রেজাউল বারী সরকারি চাকরি করেন নওগাঁয়। শনিবার ডালিম চন্দ্র রায় আমাকে নিয়ে যান রংপুরের দন্ত চিকিৎসক কান্তা বেগমের বাসায়। সেখানে গেলে তারা জানায়- আমার মেয়ে টাকা চুরি করেছে। তাই তারা তাকে আর বাসায় রাখবে না।
তিনি জানান, এ সময় তার মেয়ে সেখানে বলে সে টাকা চুরি করেনি। তবুও বাড়ির লোকজন তাকে শারীরিক নির্যাতন ও গোপনাঙ্গে গরম ছ্যাঁকা দিয়েছে। এ অবস্থায় ওই দন্ত চিকিৎসক কান্তা বেগম ও তার স্বামী রেজাউল বারী ৩০০ টাকার একটি সাদা স্ট্যাম্পে আমার স্বাক্ষর নিয়ে মেয়েকে আমার হাতে তুলে দেন। আমি মেয়েকে নিয়ে গ্রামে ফিরে আসি। এখানে এসে মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীকে ডেকে বিস্তারিত জানাই। সোমবার দুপুরে গ্রামের লোকজন পুলিশকে খবর দেন।
ওই গ্রামের নুরউদ্দিন জানান, বিষয়টি জানার পর আমরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে বিস্তারিত খুলে বলি। এরপর কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ এসে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডা. সাবির হোসেন সরকার জানান, শিশুটির সারা শরীরে ও তার গোপনাঙ্গে ক্ষতের চিহ্ন মারাত্মক। তাই কাল বিলম্ব না করে পুলিশের মাধ্যমে শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ও সেল (ওসিসি) ওয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে দন্ত চিকিৎসক কান্তা বেগমের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি জানান, মেয়েটি টাকা চুরি করেছে। ওর মাকে ডেকে আনলে মেয়েটির মা তাকে মেরেছে আমরা মারিনি বা নির্যাতন করিনি।
তবে নির্যাতনের শিকার আঁখি মনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে- ওই দাঁতের ডাক্তার, ডাক্তারের স্বামী রেজাউল বারী, তার মা খালেদা বেগম তাকে নির্যাতন করে ও প্রস্রাবের স্থানে গরম ছ্যাঁকা দেয়।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মফিজুল হক বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে আঁখি মনি নামের মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। মেয়েটিকে রংপুর জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে চিকিৎসকের পরামর্শে রংপুর মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ও সেল (ওসিসি) ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে নির্যাতিত শিশু গৃহকর্মীকে উদ্ধার করল পুলিশ
৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে নির্যাতনের শিকার গুরুতর জখম ১২ বছরের এক শিশু গৃহকর্মীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার বিকালে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের মেলাবর গ্রামের নিজ বাড়ি হতে ওই গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শিশুটির শরীরের গোপনাঙ্গের ক্ষত মারাত্মক হওয়ায় তাকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তাকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ও সেল (ওসিসি) ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।
শিশুটি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের মেলাবর গ্রামের তালিকাভুক্ত ভিক্ষুক মৃত বাছেদ আলী ফকিরের মেয়ে আঁখি মনি।
আঁখি মনির মা শিরিনা খাতুন অভিযোগে জানান, ডালিম চন্দ্র রায় নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে তার মেয়ে দুই বছর থেকে গৃহকর্মীর কাজ করত রংপুর শহরের আদর্শপাড়া মহল্লার দন্ত চিকিৎসক কান্তা বেগম এবং রেজাউল বারী দম্পতির বাসায়। রেজাউল বারী সরকারি চাকরি করেন নওগাঁয়। শনিবার ডালিম চন্দ্র রায় আমাকে নিয়ে যান রংপুরের দন্ত চিকিৎসক কান্তা বেগমের বাসায়। সেখানে গেলে তারা জানায়- আমার মেয়ে টাকা চুরি করেছে। তাই তারা তাকে আর বাসায় রাখবে না।
তিনি জানান, এ সময় তার মেয়ে সেখানে বলে সে টাকা চুরি করেনি। তবুও বাড়ির লোকজন তাকে শারীরিক নির্যাতন ও গোপনাঙ্গে গরম ছ্যাঁকা দিয়েছে। এ অবস্থায় ওই দন্ত চিকিৎসক কান্তা বেগম ও তার স্বামী রেজাউল বারী ৩০০ টাকার একটি সাদা স্ট্যাম্পে আমার স্বাক্ষর নিয়ে মেয়েকে আমার হাতে তুলে দেন। আমি মেয়েকে নিয়ে গ্রামে ফিরে আসি। এখানে এসে মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীকে ডেকে বিস্তারিত জানাই। সোমবার দুপুরে গ্রামের লোকজন পুলিশকে খবর দেন।
ওই গ্রামের নুরউদ্দিন জানান, বিষয়টি জানার পর আমরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে বিস্তারিত খুলে বলি। এরপর কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ এসে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডা. সাবির হোসেন সরকার জানান, শিশুটির সারা শরীরে ও তার গোপনাঙ্গে ক্ষতের চিহ্ন মারাত্মক। তাই কাল বিলম্ব না করে পুলিশের মাধ্যমে শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ও সেল (ওসিসি) ওয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে দন্ত চিকিৎসক কান্তা বেগমের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি জানান, মেয়েটি টাকা চুরি করেছে। ওর মাকে ডেকে আনলে মেয়েটির মা তাকে মেরেছে আমরা মারিনি বা নির্যাতন করিনি।
তবে নির্যাতনের শিকার আঁখি মনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে- ওই দাঁতের ডাক্তার, ডাক্তারের স্বামী রেজাউল বারী, তার মা খালেদা বেগম তাকে নির্যাতন করে ও প্রস্রাবের স্থানে গরম ছ্যাঁকা দেয়।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মফিজুল হক বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে আঁখি মনি নামের মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। মেয়েটিকে রংপুর জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে চিকিৎসকের পরামর্শে রংপুর মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ও সেল (ওসিসি) ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।