শ্রীমঙ্গলে নিরাপত্তাহীনতায় এক অসহায় পরিবার
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ২৩:২৩:১৪ | অনলাইন সংস্করণ
শ্রীমঙ্গলে এক অসহায় পরিবারের প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
বিপুল পরিমান সম্পত্তির লোভে পরিবারটিকে একের এক পর হুমকি, মিথ্যা মামলা, উচ্ছেদ ও জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
শহরের বারিধারা আবাসিক এলাকার প্রয়াত ডা. রফিকুন নাহার পারভিনের মেয়ে আসফিয়া শাহরিন আচল (২৯) ও তার ভাই ফাহিম আজাদ বুধবার শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
আসফিয়া শাহরিন আচল বলেন, ১৯৭৩ সালে তার মায়ের দাদা আব্দুল আজিজ মারা যাওয়ার পর ৪৫ একর জমি রেখে যান। ওই জমির কিছু অংশ উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তিতে ভাগ বসান তাদের নানা ও পাঁচ মামা।
এ সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে টাকা চাইছিলেন তারা। এরপর গত তিন বছর থেকে তারা তার মায়ের সম্পত্তি বিক্রি করে প্রায় আড়াই কোটি টাকা তাদের নানা ও মামাদের দিয়েছেন।
তারা হলেন, শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু শহীদ মো. আব্দুল্লাহ, তার ভাই আব্দুছ সালাম, আবু শহীদ আবদুল্লাহর ছেলে এফএম মাহফুজুল হিমেল, আব্দুছ সালামের ছেলে আবিদ হোসেন তানভীর, আব্দুল কাইয়ুম নাহিদ, সরওয়ার হোসেন শাওন ও মেহতাব হোসেন পাপ্পু।
সংবাদ সম্মেলনে আচল জানান,তার মায়ের মৃত্যুর পর ওই সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে তাদের উপর অত্যাচার ও মানসিক নির্যাতন করে যাচ্ছেন তাদের ওই আত্মীয় স্বজনরা।
আশফিয়া শাহরিন আচল সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, তার এক ছোট ভাই ছাড়া তাদের পরিবারে আর কেউ নেই। তাদের এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তারা জমি দখল ও আত্মসাতের মতো জঘন্য কাজে লিপ্ত রয়েছেন। তারা তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত বলেও জানান।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আচলের মামা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন রাহিদ ও অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আচলের মামা আবিদ হোসেন তানভীর যুগান্তরকে বলেন, আমার বড় ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন রাহিদ আমাদের পরিবারের বিপুল পরিমাণ টাকা অত্মসাৎ করে গা ঢাকা দিয়েছেন।
আচল ভূমি বিক্রয় করলে সে কমিশন পায়। সেই কমিশন খাওয়ার লোভে তারই প্ররোচনায় এই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলন করায়। আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তানভীর বলেন, আচল আড়াই কোটি টাকা কোথায় পেলেন সেটাই এখন আমার প্রশ্ন। কীভাবে, কাকে টাকা দিয়েছে সে- তার প্রমাণ দিতে হবে। দেলোয়ার হোসেন রাহিদ পরিবারের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে আচলের নানা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু শহীদ মো. আব্দুল্লাহ বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদে শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও মুরুব্বিয়ানের মধ্যস্থতায় এনিয়ে একটি বৈঠকে আমাদের অংশের ভূমির মূল্য বাবদ আমাদেরকে ৪৮ লাখ টাকা দেয়ার একটি শালিসনামা হয়। কিন্তু আচল টাকা না দিয়ে উল্টো আদালতে মামলা করে।
তিনি আরও জানান, আড়াই কোটি টাকা নেয়া ও হুমকির বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। আচলের জমিতে অন্যদের অংশীদার আছে। আর শহরের বসতবাড়ির জমি আমাদের চার ভাইয়ের নামে আছে। এখন আচল ও ফাহিম এ নিয়ে অন্যের প্ররোচনায় মিথ্যা নাটক সাজাচ্ছে বলে তিনি জানান।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
শ্রীমঙ্গলে নিরাপত্তাহীনতায় এক অসহায় পরিবার
শ্রীমঙ্গলে এক অসহায় পরিবারের প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
বিপুল পরিমান সম্পত্তির লোভে পরিবারটিকে একের এক পর হুমকি, মিথ্যা মামলা, উচ্ছেদ ও জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
শহরের বারিধারা আবাসিক এলাকার প্রয়াত ডা. রফিকুন নাহার পারভিনের মেয়ে আসফিয়া শাহরিন আচল (২৯) ও তার ভাই ফাহিম আজাদ বুধবার শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
আসফিয়া শাহরিন আচল বলেন, ১৯৭৩ সালে তার মায়ের দাদা আব্দুল আজিজ মারা যাওয়ার পর ৪৫ একর জমি রেখে যান। ওই জমির কিছু অংশ উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তিতে ভাগ বসান তাদের নানা ও পাঁচ মামা।
এ সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে টাকা চাইছিলেন তারা। এরপর গত তিন বছর থেকে তারা তার মায়ের সম্পত্তি বিক্রি করে প্রায় আড়াই কোটি টাকা তাদের নানা ও মামাদের দিয়েছেন।
তারা হলেন, শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু শহীদ মো. আব্দুল্লাহ, তার ভাই আব্দুছ সালাম, আবু শহীদ আবদুল্লাহর ছেলে এফএম মাহফুজুল হিমেল, আব্দুছ সালামের ছেলে আবিদ হোসেন তানভীর, আব্দুল কাইয়ুম নাহিদ, সরওয়ার হোসেন শাওন ও মেহতাব হোসেন পাপ্পু।
সংবাদ সম্মেলনে আচল জানান,তার মায়ের মৃত্যুর পর ওই সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে তাদের উপর অত্যাচার ও মানসিক নির্যাতন করে যাচ্ছেন তাদের ওই আত্মীয় স্বজনরা।
আশফিয়া শাহরিন আচল সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, তার এক ছোট ভাই ছাড়া তাদের পরিবারে আর কেউ নেই। তাদের এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তারা জমি দখল ও আত্মসাতের মতো জঘন্য কাজে লিপ্ত রয়েছেন। তারা তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত বলেও জানান।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আচলের মামা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন রাহিদ ও অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আচলের মামা আবিদ হোসেন তানভীর যুগান্তরকে বলেন, আমার বড় ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন রাহিদ আমাদের পরিবারের বিপুল পরিমাণ টাকা অত্মসাৎ করে গা ঢাকা দিয়েছেন।
আচল ভূমি বিক্রয় করলে সে কমিশন পায়। সেই কমিশন খাওয়ার লোভে তারই প্ররোচনায় এই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলন করায়। আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তানভীর বলেন, আচল আড়াই কোটি টাকা কোথায় পেলেন সেটাই এখন আমার প্রশ্ন। কীভাবে, কাকে টাকা দিয়েছে সে- তার প্রমাণ দিতে হবে। দেলোয়ার হোসেন রাহিদ পরিবারের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে আচলের নানা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু শহীদ মো. আব্দুল্লাহ বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদে শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও মুরুব্বিয়ানের মধ্যস্থতায় এনিয়ে একটি বৈঠকে আমাদের অংশের ভূমির মূল্য বাবদ আমাদেরকে ৪৮ লাখ টাকা দেয়ার একটি শালিসনামা হয়। কিন্তু আচল টাকা না দিয়ে উল্টো আদালতে মামলা করে।
তিনি আরও জানান, আড়াই কোটি টাকা নেয়া ও হুমকির বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। আচলের জমিতে অন্যদের অংশীদার আছে। আর শহরের বসতবাড়ির জমি আমাদের চার ভাইয়ের নামে আছে। এখন আচল ও ফাহিম এ নিয়ে অন্যের প্ররোচনায় মিথ্যা নাটক সাজাচ্ছে বলে তিনি জানান।