নারীর আসক্তিতে প্রাণ গেল ইজিবাইকচালকের
পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলন
হবিগঞ্জ ও চুনারুঘাট প্রতিনিধি
২২ ডিসেম্বর ২০২০, ১৩:১৭:৫০ | অনলাইন সংস্করণ
হবিগঞ্জে ইজিবাইকচালকের লাশ উদ্ধারের প্রায় দেড় বছর পর হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। নারীর আসক্তিতে প্রাণ গেছে ওই চালকের বলে জানায় পুলিশ।
নিহত ইজিবাইকচালকের নাম মো. আলমগীর। তিনি মাধবপুর উপজেলার বনগাঁও গ্রামের রহমত আলীর ছেলে।
সোমবার রাতে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্যা।
তিনি জানান, গ্রেফতার তিন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
আসামিরা আদালতকে জানিয়েছে, নিহত আলমগীরের নারীর আসক্তির সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইজিবাইক ছিনতাই করতে এমন লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা।
আসামিরা হলো- মাধবপুর উপজেলার উত্তর বেজুরা গ্রামের ছফন উদ্দিনের ছেলে মুসলিম মিয়া, খড়কী গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে রুকন মিয়া ও বানিয়াচং উপজেলার জাতুকর্নপাড়া গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে সোহেল মিয়া।
তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গহিন অরণ্যথেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার কোনো পরিচয় না পাওয়ায় আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়।
এ সময় নিহতের চুল ও দাঁত রেখে ডিএনএ পরীক্ষা করে রাখা হয়। পরে পুলিশ জানতে পারে মাধবপুর উপজেলার বনগাঁও গ্রামের রহমত আলীর এক ছেলে নিখোঁজ হয়েছে। এর পর তার ডিএনএ পরীক্ষা করলে দুটি মিলে যায়। পরে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মুসলিম মিয়া, রুকন মিয়া ও সোহেল মিয়াকে আটক করে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় রুকন মিয়া ও সোহেল মিয়া। আর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূরুল হুদার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মুসলিম মিয়া। এতে তারা ঘটনার আদ্যোপান্ত স্বীকার করেন।
গ্রেফতারকৃতদের দেয়া স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্যা জানান, নিহত আলমগীরের নারী আসক্তি ছিল। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা আলমগীরকে বলে, সাতছড়িয়ে এক নারী আছে। তাদের কথামতো ইজিবাইক নিয়ে তারা সাতছড়িতে যায়।
সেখানে গহিন অরণ্যে গিয়ে নারী কোথায় আছে জানতে চান আলমগীর। এ সময় আসামিরা রশি দিয়ে তার গলা পেঁচিয়ে হত্যা করে লাশ গহিন অরণ্যে ফেলে রাখে। এর পর ইজিবাইকটি নিয়ে তারা বানিয়াচংয়ে এক ব্যক্তির কাছে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। নগদ পায় ১০ হাজার টাকা। এ থেকে ৪ হাজার টাকা রাখে সোহেল মিয়া এবং মুসলিম ও রুকন মিয়াকে ৩ হাজার করে টাকা দেয়।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলন
নারীর আসক্তিতে প্রাণ গেল ইজিবাইকচালকের
হবিগঞ্জে ইজিবাইকচালকের লাশ উদ্ধারের প্রায় দেড় বছর পর হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। নারীর আসক্তিতে প্রাণ গেছে ওই চালকের বলে জানায় পুলিশ।
নিহত ইজিবাইকচালকের নাম মো. আলমগীর। তিনি মাধবপুর উপজেলার বনগাঁও গ্রামের রহমত আলীর ছেলে।
সোমবার রাতে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্যা।
তিনি জানান, গ্রেফতার তিন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
আসামিরা আদালতকে জানিয়েছে, নিহত আলমগীরের নারীর আসক্তির সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইজিবাইক ছিনতাই করতে এমন লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা।
আসামিরা হলো- মাধবপুর উপজেলার উত্তর বেজুরা গ্রামের ছফন উদ্দিনের ছেলে মুসলিম মিয়া, খড়কী গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে রুকন মিয়া ও বানিয়াচং উপজেলার জাতুকর্নপাড়া গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে সোহেল মিয়া।
তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গহিন অরণ্য থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার কোনো পরিচয় না পাওয়ায় আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়।
এ সময় নিহতের চুল ও দাঁত রেখে ডিএনএ পরীক্ষা করে রাখা হয়। পরে পুলিশ জানতে পারে মাধবপুর উপজেলার বনগাঁও গ্রামের রহমত আলীর এক ছেলে নিখোঁজ হয়েছে। এর পর তার ডিএনএ পরীক্ষা করলে দুটি মিলে যায়। পরে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মুসলিম মিয়া, রুকন মিয়া ও সোহেল মিয়াকে আটক করে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় রুকন মিয়া ও সোহেল মিয়া। আর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূরুল হুদার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মুসলিম মিয়া। এতে তারা ঘটনার আদ্যোপান্ত স্বীকার করেন।
গ্রেফতারকৃতদের দেয়া স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্যা জানান, নিহত আলমগীরের নারী আসক্তি ছিল। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা আলমগীরকে বলে, সাতছড়িয়ে এক নারী আছে। তাদের কথামতো ইজিবাইক নিয়ে তারা সাতছড়িতে যায়।
সেখানে গহিন অরণ্যে গিয়ে নারী কোথায় আছে জানতে চান আলমগীর। এ সময় আসামিরা রশি দিয়ে তার গলা পেঁচিয়ে হত্যা করে লাশ গহিন অরণ্যে ফেলে রাখে। এর পর ইজিবাইকটি নিয়ে তারা বানিয়াচংয়ে এক ব্যক্তির কাছে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। নগদ পায় ১০ হাজার টাকা। এ থেকে ৪ হাজার টাকা রাখে সোহেল মিয়া এবং মুসলিম ও রুকন মিয়াকে ৩ হাজার করে টাকা দেয়।