‘গাড়িতে হাত পা বেঁধে চোখে কালো চশমা পরিয়ে দিতো’
যুগান্তর প্রতিবেদন, সাভার
০১ মার্চ ২০২১, ২১:৫১:২৫ | অনলাইন সংস্করণ
গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলার হাইওয়ে সড়কের পাশের বাজার ও বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রাইভেটকারে যাত্রী ওঠাতো অপহরণকারীরা। এরপর গাড়ির ভেতরে তাদের হাত পা বেঁধে মারধর করে চোখে কালো চশমা পরিয়ে দিতো।
চশমার ভিতরে কালো টেপ মারা থাকতো, যেন অপহৃতরা বাহিরের কিছু দেখতে না পারে। এরপর তাদের কাছে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে আদায় করা হতো মুক্তিপণ। আর মুক্তিপণ না পেলে ভুক্তভোগীদের হত্যা করে সড়কের পাশে লাশ ফেলে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করতো অপহরণকারীরা।
সাভারে পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের সিকিউরিটি ইনচার্জ ফজলুল হক হত্যাকাণ্ডে তিন আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে সোমবার দুপুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিদর্শক নাজমুল হাসান এসব বিষয় নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- পাবনা জেলার আমিনপুর থানার টাংবাড়ি গ্রামের সাত্তার শেখের ছেলে মাসুম শেখ (৩৫), খুলনা জেলার সোনাডাঙ্গা থানার রায়েরমহল গ্রামের মৃত শেখ কিসলু রহমানের ছেলে মোহাম্মদ জনি (৩২) ও পাবনা জেলার সুজানগর থানার উদয়পুর মিয়াবাড়ি গ্রামের মৃত আশু মিয়ার ছেলে আব্দুর রব মিয়া (৪২)। তারা সবাই রাজধানীর মিরপুরে বসবাস করতেন।
নিহত ফজুলল হক মানিকগঞ্জের শিবালয় এলাকার বাসিন্দা তিনি সাভারে পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের সিকিউরিটি ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করতেন।
ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্য মতে- গত ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের উথুলি বাস স্ট্যান্ড থেকে রাজধানীর মতিঝিল পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ফজলুলকে প্রাইভোটকারে ওঠায় আসামিরা। পরে তার কাছে থাকা মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নিতে চাইলে ফজলুল হক বাঁধা দেন। এ সময় তার হাত পা বেঁধে কালো চশমা পরিয়ে দেয় অপহরণকারীরা।
তার চিৎকার চেঁচামেচি ঠেকাতে অপহরণকারীরা গলায় মাফলার পেঁচিয়ে দুইজন দুই দিকে টেনে ধরলে ফজলুল মারা যান। ফজলুলের লাশ সাভারের কমলাপুর এলাকার গোলাপ গ্রামে ফেলে তারা মিরপুরের দিকে চলে যায়। পরদিন স্থানীয়দের খবরে সাভার থানা পুলিশ ফজলুলের লাশ উদ্ধার করে।
ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক নাজমুল হাসান বলেন, ফজলুল হক হত্যার ঘটনার তদন্তভার ডিবি পুলিশের হাতে আসলে ২৭ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণ ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়। গ্রেফতার আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
‘গাড়িতে হাত পা বেঁধে চোখে কালো চশমা পরিয়ে দিতো’
গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলার হাইওয়ে সড়কের পাশের বাজার ও বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রাইভেটকারে যাত্রী ওঠাতো অপহরণকারীরা। এরপর গাড়ির ভেতরে তাদের হাত পা বেঁধে মারধর করে চোখে কালো চশমা পরিয়ে দিতো।
চশমার ভিতরে কালো টেপ মারা থাকতো, যেন অপহৃতরা বাহিরের কিছু দেখতে না পারে। এরপর তাদের কাছে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে আদায় করা হতো মুক্তিপণ। আর মুক্তিপণ না পেলে ভুক্তভোগীদের হত্যা করে সড়কের পাশে লাশ ফেলে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করতো অপহরণকারীরা।
সাভারে পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের সিকিউরিটি ইনচার্জ ফজলুল হক হত্যাকাণ্ডে তিন আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে সোমবার দুপুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিদর্শক নাজমুল হাসান এসব বিষয় নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- পাবনা জেলার আমিনপুর থানার টাংবাড়ি গ্রামের সাত্তার শেখের ছেলে মাসুম শেখ (৩৫), খুলনা জেলার সোনাডাঙ্গা থানার রায়েরমহল গ্রামের মৃত শেখ কিসলু রহমানের ছেলে মোহাম্মদ জনি (৩২) ও পাবনা জেলার সুজানগর থানার উদয়পুর মিয়াবাড়ি গ্রামের মৃত আশু মিয়ার ছেলে আব্দুর রব মিয়া (৪২)। তারা সবাই রাজধানীর মিরপুরে বসবাস করতেন।
নিহত ফজুলল হক মানিকগঞ্জের শিবালয় এলাকার বাসিন্দা তিনি সাভারে পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের সিকিউরিটি ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করতেন।
ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্য মতে- গত ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের উথুলি বাস স্ট্যান্ড থেকে রাজধানীর মতিঝিল পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ফজলুলকে প্রাইভোটকারে ওঠায় আসামিরা। পরে তার কাছে থাকা মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নিতে চাইলে ফজলুল হক বাঁধা দেন। এ সময় তার হাত পা বেঁধে কালো চশমা পরিয়ে দেয় অপহরণকারীরা।
তার চিৎকার চেঁচামেচি ঠেকাতে অপহরণকারীরা গলায় মাফলার পেঁচিয়ে দুইজন দুই দিকে টেনে ধরলে ফজলুল মারা যান। ফজলুলের লাশ সাভারের কমলাপুর এলাকার গোলাপ গ্রামে ফেলে তারা মিরপুরের দিকে চলে যায়। পরদিন স্থানীয়দের খবরে সাভার থানা পুলিশ ফজলুলের লাশ উদ্ধার করে।
ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক নাজমুল হাসান বলেন, ফজলুল হক হত্যার ঘটনার তদন্তভার ডিবি পুলিশের হাতে আসলে ২৭ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণ ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়। গ্রেফতার আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান তিনি।