‘মায়ের অনৈতিক ব্যবসা সহ্য করতে না পেরে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলাম’
নোয়াখালী প্রতিনিধি
০১ মার্চ ২০২১, ২২:৪৯:৩৭ | অনলাইন সংস্করণ
বেগমগঞ্জের আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের ইয়ারপুর গ্রামের নির্যাতিতা মাদ্রাসাছাত্রীকে (১৭) পুলিশ উদ্ধার করে আদালতে পাঠায়। আদালতে নির্যাতিতার ২২ ধারা জবানবন্দি ও ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বেগমগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মায়ের দায়ের করা মামলা সম্পূর্ণ নতুন মোড় নেয়।
নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সূত্র জানায়, বেগমগঞ্জ থানার ইয়ারপুর গ্রামের মাদ্রাসাছাত্রীকে (১৭) অপহরণ, ধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগে তার মা বিউটি আক্তারের দায়ের করা করা মামলায় পুলিশ শনিবার রাতে ভিকটিমকে ঢাকা সাভার এলাকার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করে।
উদ্ধার হওয়ার পর রোববার বিকালে তাকে নোয়াখালী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভিকটিমের ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন নোয়াখালী অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সোনিয়া আক্তার এবং পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ মামলায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নবনীতা গুহ।
ভিকটিম তার জবানবন্দিতেই জানান, তার একটু বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই সে দেখে আসছেন- তার মা এলাকার লোকজনের সঙ্গে কুকাজ করতেন। একটু বড় হলে তার মা টাকার বিনিময়ে মানুষের সঙ্গে তাকে কুকাজ করতে বাধ্য করত। খারাপ কাজ করতে লোকজনদের সঙ্গে চৌমুহনী মাইজদীর হোটেলে যেতে রাজি না হলে তার মা তাকে ঘরের ভিতর শিকল দিয়ে বেঁধে রাখত।
ভিকটিম জানায়, তাকে কেহ অপহরণ করেনি এ অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সে দুবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। এবার সে পালিয়ে গেলে পুলিশ তাকে ধরে এনেছে।
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে জবানবন্দি দিয়ে বের হওয়ার পর এ প্রতিনিধির জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, মা তার জীবন শেষ করেছে। সে তার মায়ের ফাঁসি চায়।
গ্রেফতারকৃতদের নাম ধরে জিজ্ঞাসা করলে ভিকটিম বলে এরা আমার মায়েরও খদ্দের। এরা মাকে টাকা দিয়ে আমাকে নষ্ট করেছে। তাকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলার কথা সে স্বীকার করে বলেন, তার মায়ের নির্দেশে তারা তার বিবস্ত্র ছবি তুলেছে। যেন আমি কখনো কারো কাছে না বলি।
২২ ধারা ও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আদালত তাকে নিরাপদ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে তার মা বিউটি আক্তার রিপোর্ট লেখার সময়ও বাদী হিসেবে বেগমগঞ্জ পুলিশের নিকট নিরাপদ হেফাজতে রয়েছে।
সোমবার চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত জিআইজি (ক্রাইম) মো. জাকির হোসেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
তবে পুলিশের (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) একটি সূত্র জানায়, তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হতে পারে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
‘মায়ের অনৈতিক ব্যবসা সহ্য করতে না পেরে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলাম’
বেগমগঞ্জের আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের ইয়ারপুর গ্রামের নির্যাতিতা মাদ্রাসাছাত্রীকে (১৭) পুলিশ উদ্ধার করে আদালতে পাঠায়। আদালতে নির্যাতিতার ২২ ধারা জবানবন্দি ও ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বেগমগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মায়ের দায়ের করা মামলা সম্পূর্ণ নতুন মোড় নেয়।
নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সূত্র জানায়, বেগমগঞ্জ থানার ইয়ারপুর গ্রামের মাদ্রাসাছাত্রীকে (১৭) অপহরণ, ধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগে তার মা বিউটি আক্তারের দায়ের করা করা মামলায় পুলিশ শনিবার রাতে ভিকটিমকে ঢাকা সাভার এলাকার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করে।
উদ্ধার হওয়ার পর রোববার বিকালে তাকে নোয়াখালী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভিকটিমের ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন নোয়াখালী অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সোনিয়া আক্তার এবং পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ মামলায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নবনীতা গুহ।
ভিকটিম তার জবানবন্দিতেই জানান, তার একটু বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই সে দেখে আসছেন- তার মা এলাকার লোকজনের সঙ্গে কুকাজ করতেন। একটু বড় হলে তার মা টাকার বিনিময়ে মানুষের সঙ্গে তাকে কুকাজ করতে বাধ্য করত। খারাপ কাজ করতে লোকজনদের সঙ্গে চৌমুহনী মাইজদীর হোটেলে যেতে রাজি না হলে তার মা তাকে ঘরের ভিতর শিকল দিয়ে বেঁধে রাখত।
ভিকটিম জানায়, তাকে কেহ অপহরণ করেনি এ অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সে দুবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। এবার সে পালিয়ে গেলে পুলিশ তাকে ধরে এনেছে।
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে জবানবন্দি দিয়ে বের হওয়ার পর এ প্রতিনিধির জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, মা তার জীবন শেষ করেছে। সে তার মায়ের ফাঁসি চায়।
গ্রেফতারকৃতদের নাম ধরে জিজ্ঞাসা করলে ভিকটিম বলে এরা আমার মায়েরও খদ্দের। এরা মাকে টাকা দিয়ে আমাকে নষ্ট করেছে। তাকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলার কথা সে স্বীকার করে বলেন, তার মায়ের নির্দেশে তারা তার বিবস্ত্র ছবি তুলেছে। যেন আমি কখনো কারো কাছে না বলি।
২২ ধারা ও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আদালত তাকে নিরাপদ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে তার মা বিউটি আক্তার রিপোর্ট লেখার সময়ও বাদী হিসেবে বেগমগঞ্জ পুলিশের নিকট নিরাপদ হেফাজতে রয়েছে।
সোমবার চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত জিআইজি (ক্রাইম) মো. জাকির হোসেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
তবে পুলিশের (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) একটি সূত্র জানায়, তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হতে পারে।