২২ দিন ধরে খোলা অকাশের নিচে মমতাজ
শামীম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)
০৪ মার্চ ২০২১, ২১:২৩:১৯ | অনলাইন সংস্করণ
আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে মমতাজ বেগমের (৩৫) মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু। সবকিছু হারিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব।
গত ২২ দিন ধরে স্বামী ও অবুঝ দুটি সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে তিনি আহাজারি করছেন। কিন্তু অদ্যাবধি তাদের পাশে সেভাবে কেউ দাঁড়ায়নি।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ছাহের মণ্ডলপাড়ায় রান্নাঘরের চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
মমতাজ বেগম ওই গ্রামের দরিদ্র রিকশাচালক আলমাস শেখের স্ত্রী। আগুনে তার থাকার ২টি ছাপড়া ঘর, ১টি রান্নাঘর, ৪টি ছাগল, এনজিও আশা থেকে নেয়া ঋণের ৫০ হাজার টাকা, ধান, চাল, স্বামী -স্ত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র, বাচ্চাদের জন্ম নিবন্ধন সনদ, কাপড়-চোপড় ও গাছপালা ভস্মীভূত হয়ে যায়।
স্থানীয়রা গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয় কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে এলেও সরু রাস্তার কারণে জামতলা হাইস্কুলের পাশ দিয়ে মমতাজের বাড়িতে যেতে পারেনি।
খবর পেয়ে স্থানীয় পুরুষ ও নারী ইউপি সদস্য এসে মমতাজকে ৫শ টাকা করে সাহায্য করে যান। ইউপি চেয়ারম্যান আসেননি। তবে ১০ কেজি চালসহ কিছু ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়ে দেন।
৪ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, ৫ শতকের শূন্যভিটায় দুই সন্তান নিয়ে কান্নাকাটি করছেন মমতাজ। স্বামী ফরিদপুর শহরে রিকশা চালান। আশপাশের লোকজন যে যা দেয় তাই খেয়ে অতি কষ্টে তাদের দিনরাত কাটছে। রাতে পাশের একটি বাড়ির রান্নাঘরে গিয়ে সন্তান দুটিকে নিয়ে ঘুমান।
এ সময় তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, এক বছর আগে অনেক ধারদেনা করে বড় মেয়েটিকে বিয়ে দেই। কোনোভাবেই দেনা পরিশোধ করতে পারছিলাম না। তাই পাওনাদারদের চাপে আগুন লাগার আগেরদিন আশা এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেই। কাউকে একটি টাকাও দিতে পারিনি। এর মধ্যেই সব শেষ হয়ে গেল। এখন আমাদের কী হবে, কীভাবে এত টাকা শোধ দেব?
এ নিয়ে কথা বলতে উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ফকিরের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওনা যায়নি। মোবাইল বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানাননি। তবে খোঁজ নিয়ে ওই অসহায় পরিবারটির জন্য সম্ভাব্য সব কিছুই করার চেষ্টা করব।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
২২ দিন ধরে খোলা অকাশের নিচে মমতাজ
আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে মমতাজ বেগমের (৩৫) মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু। সবকিছু হারিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব।
গত ২২ দিন ধরে স্বামী ও অবুঝ দুটি সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে তিনি আহাজারি করছেন। কিন্তু অদ্যাবধি তাদের পাশে সেভাবে কেউ দাঁড়ায়নি।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ছাহের মণ্ডলপাড়ায় রান্নাঘরের চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
মমতাজ বেগম ওই গ্রামের দরিদ্র রিকশাচালক আলমাস শেখের স্ত্রী। আগুনে তার থাকার ২টি ছাপড়া ঘর, ১টি রান্নাঘর, ৪টি ছাগল, এনজিও আশা থেকে নেয়া ঋণের ৫০ হাজার টাকা, ধান, চাল, স্বামী -স্ত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র, বাচ্চাদের জন্ম নিবন্ধন সনদ, কাপড়-চোপড় ও গাছপালা ভস্মীভূত হয়ে যায়।
স্থানীয়রা গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয় কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে এলেও সরু রাস্তার কারণে জামতলা হাইস্কুলের পাশ দিয়ে মমতাজের বাড়িতে যেতে পারেনি।
খবর পেয়ে স্থানীয় পুরুষ ও নারী ইউপি সদস্য এসে মমতাজকে ৫শ টাকা করে সাহায্য করে যান। ইউপি চেয়ারম্যান আসেননি। তবে ১০ কেজি চালসহ কিছু ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়ে দেন।
৪ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, ৫ শতকের শূন্যভিটায় দুই সন্তান নিয়ে কান্নাকাটি করছেন মমতাজ। স্বামী ফরিদপুর শহরে রিকশা চালান। আশপাশের লোকজন যে যা দেয় তাই খেয়ে অতি কষ্টে তাদের দিনরাত কাটছে। রাতে পাশের একটি বাড়ির রান্নাঘরে গিয়ে সন্তান দুটিকে নিয়ে ঘুমান।
এ সময় তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, এক বছর আগে অনেক ধারদেনা করে বড় মেয়েটিকে বিয়ে দেই। কোনোভাবেই দেনা পরিশোধ করতে পারছিলাম না। তাই পাওনাদারদের চাপে আগুন লাগার আগেরদিন আশা এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেই। কাউকে একটি টাকাও দিতে পারিনি। এর মধ্যেই সব শেষ হয়ে গেল। এখন আমাদের কী হবে, কীভাবে এত টাকা শোধ দেব?
এ নিয়ে কথা বলতে উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ফকিরের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওনা যায়নি। মোবাইল বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানাননি। তবে খোঁজ নিয়ে ওই অসহায় পরিবারটির জন্য সম্ভাব্য সব কিছুই করার চেষ্টা করব।