মুক্তিযোদ্ধা ভাতার পুরো টাকা না দেয়ায় মাকে বের করে দিল ছেলে
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
০৫ মার্চ ২০২১, ২১:০৯:০৫ | অনলাইন সংস্করণ
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের ঘোলদারপাড়া গ্রামে এক মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে তার ছেলে। মুক্তিযোদ্ধা বাবার সম্মানী ভাতার পুরো টাকা হস্তগত করতে না পেরে নিজ মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ছেলে আতাউর রহমান ও পুত্রবধূ লিপি বেগম।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অভিযোগ করা হলে তিনি ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি তদন্ত করে সমাধানের কথা বলেন। কিন্তু তারপরও একমাস ধরে মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন ওই হতভাগী মা।
মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রাবেয়া বেওয়া জানান, দুই বছর আগে তার স্বামী গোলজার হোসেন মারা যান। চার সন্তানকে স্বামীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা বণ্টন করে দিয়ে আসছিলেন তিনি। কিন্তু ছেলে আতাউর রহমান ও পুত্রবধূ লিপি বেগম পুরো টাকা দাবি করে।
সেই টাকা না দেয়ায় রাবেয়া বেওযার উপর চলে মানষিক নির্যাতন। এরই জের ধরে গত ৩০ জানুয়ারি আতাউর রহমান ও তার স্ত্রী লিপি বেগম ঝগড়ার এক পর্যায়ে দরজায় তালা ঝুলিয়ে রাবেয়া বেওয়াকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বাধ্য হয়ে পার্শ্ববর্তী গুনাইগাছ ইউনিয়নের কৃঞ্চমোহন গ্রামে মেয়ে গোলাপী বেগমের বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি।
গত একমাস ধরে অপেক্ষা করেও সন্তানদের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে ইউএনও বরাবর অভিযোগ করেন তিনি। ওই মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রীর আশা- জীবনের শেষ দিনগুলো স্বামীর ভিটায় পার করে দেয়া। সেইসঙ্গে ছেলে ও বউয়ের নির্মম অত্যাচারের বিচার চান তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ছেলে আতাউর রহমান বলেন, আমাকে বঞ্চিত করে টাকা-পয়সা, জমি-জমা সব তিন সন্তানকে ভাগ করে দেন মা। আমি প্রতিবাদ করায় তিনি রাগ করে বোনের বাড়িতে চলে গেছেন। ঘরের জিনিসপত্র যাতে চুরি না যায় এজন্য মায়ের ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছি।
বিষয়টি নিয়ে হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মাস্টার বলেন, ইউএনওর কাছ থেকে নির্দেশনা পেয়েছি। বিট পুলিশিং অফিসারসহ ওই মাকে নিয়ে এসে আমরা সালিশ বৈঠক করব। আশা করছি বিধবা মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু আমরা দিতে পারব।
এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি যেহেতু পারিবারিক তাই সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ঘটনাটির দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা করে দিতে বলা হয়েছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
মুক্তিযোদ্ধা ভাতার পুরো টাকা না দেয়ায় মাকে বের করে দিল ছেলে
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের ঘোলদারপাড়া গ্রামে এক মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে তার ছেলে। মুক্তিযোদ্ধা বাবার সম্মানী ভাতার পুরো টাকা হস্তগত করতে না পেরে নিজ মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ছেলে আতাউর রহমান ও পুত্রবধূ লিপি বেগম।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অভিযোগ করা হলে তিনি ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি তদন্ত করে সমাধানের কথা বলেন। কিন্তু তারপরও একমাস ধরে মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন ওই হতভাগী মা।
মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রাবেয়া বেওয়া জানান, দুই বছর আগে তার স্বামী গোলজার হোসেন মারা যান। চার সন্তানকে স্বামীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা বণ্টন করে দিয়ে আসছিলেন তিনি। কিন্তু ছেলে আতাউর রহমান ও পুত্রবধূ লিপি বেগম পুরো টাকা দাবি করে।
সেই টাকা না দেয়ায় রাবেয়া বেওযার উপর চলে মানষিক নির্যাতন। এরই জের ধরে গত ৩০ জানুয়ারি আতাউর রহমান ও তার স্ত্রী লিপি বেগম ঝগড়ার এক পর্যায়ে দরজায় তালা ঝুলিয়ে রাবেয়া বেওয়াকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বাধ্য হয়ে পার্শ্ববর্তী গুনাইগাছ ইউনিয়নের কৃঞ্চমোহন গ্রামে মেয়ে গোলাপী বেগমের বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি।
গত একমাস ধরে অপেক্ষা করেও সন্তানদের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে ইউএনও বরাবর অভিযোগ করেন তিনি। ওই মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রীর আশা- জীবনের শেষ দিনগুলো স্বামীর ভিটায় পার করে দেয়া। সেইসঙ্গে ছেলে ও বউয়ের নির্মম অত্যাচারের বিচার চান তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ছেলে আতাউর রহমান বলেন, আমাকে বঞ্চিত করে টাকা-পয়সা, জমি-জমা সব তিন সন্তানকে ভাগ করে দেন মা। আমি প্রতিবাদ করায় তিনি রাগ করে বোনের বাড়িতে চলে গেছেন। ঘরের জিনিসপত্র যাতে চুরি না যায় এজন্য মায়ের ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছি।
বিষয়টি নিয়ে হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মাস্টার বলেন, ইউএনওর কাছ থেকে নির্দেশনা পেয়েছি। বিট পুলিশিং অফিসারসহ ওই মাকে নিয়ে এসে আমরা সালিশ বৈঠক করব। আশা করছি বিধবা মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু আমরা দিতে পারব।
এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি যেহেতু পারিবারিক তাই সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ঘটনাটির দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা করে দিতে বলা হয়েছে।