স্বর্ণের চেইন চুরির অপবাদে নারীকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল
ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:০৫:৫৬ | অনলাইন সংস্করণ
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় স্বামী পরিত্যক্ত এক নারীকে স্বর্ণের চেইন চুরির অপবাদে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর চাঁদপুর পুলিশ সুপারের নির্দেশে মোফাচ্ছের ও ইয়াছিন নামে তার দুই সহোদরকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার রাতে তাদের উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের রুস্তমপুর গ্রামের আমিন উদ্দিন বেপারিবাড়ি থেকে আটক করা হয়।
সোমবার দুপুরে তাদের চাঁদপুর আদালতে পাঠায় পুলিশ।
এ ব্যাপারে রোববার বিকালে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
ঘটনাটি গত ২৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের রুস্তমপুর গ্রামের আমিন উদ্দিন বেপারিবাড়িতে ঘটে। বর্তমানে গুরুতর আহতাবস্থায় চাঁদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আহত তাসলিমা বেগম।
জানা যায়, প্রায় চার মাস আগে রুস্তমপুর গ্রামের আমিন উদ্দিন বেপারিবাড়ির কাউসার আলমের নববিবাহিত স্ত্রী মুক্তা বেগমের গলার স্বর্ণের চেইন হারিয়ে যায়। সপ্তাহখানেক পর হারিয়ে যাওয়া চেইনটি কাউছারের বসতঘরের পাশ থেকে খুঁজে পাওয়া যায়। এই চেইনটি হারিয়ে যাওয়াকে চুরি হিসেবে চিহ্নিত করে একই বাড়ির তাসলিমা বেগমকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিলেন অভিযুক্ত কাউছার ও তার পরিবারের সদস্যরা।
ওই ঘটনার জের ধরেই গত ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে কাউছার আলমের ছোট দুই ভাই মোফাচ্ছের, ইয়াসিন ও তাদের মা শামসুন্নাহারের সহায়তায় তাসলিমাকে তার বসতঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।
ঘটনার শিকার তাসলিমা বেগম জানান, বিনাকারণেই ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে বাড়ির উঠোনে তার ওপর হামলা চালানো হয়। তিনি চুরির কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
তাসলিমা বেগমের বড় বোন আমেনা বেগম জানান, চেইন চুরির মিথ্যা অভিযোগ তুলে কাউছার আলমের ছোট দুই ভাই ইয়াসিন ও মোফাচ্ছের এবং তাদের মা শামসুন্নাহার এমন পৈচাশিক নির্যাতন চালান তাসলিমার ওপর।
এদিকে ঘটনার ব্যাপারে কাউছার আলম জানান, তার মায়ের ওপর হামলার ঘটনায় তার ছোট দুই ভাই তাসলিমাকে মারধর করেছে।
কাউসার আলমের স্ত্রী মুক্তা বেগম জানান, তার গলার স্বর্ণের চেইনটি হারিয়ে যায়, পরে চেইনটি খুঁজে পেয়েছেন।
রোববার দুপুরে নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ। এ জন্য ফরিদগঞ্জ থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি।
ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশ পরির্দশক (তদন্ত) মো. বাহার মিয়া জানান, এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় রোববার একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত মোফাচ্ছের ও ইয়াসিন নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের বিষয়ে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
স্বর্ণের চেইন চুরির অপবাদে নারীকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় স্বামী পরিত্যক্ত এক নারীকে স্বর্ণের চেইন চুরির অপবাদে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর চাঁদপুর পুলিশ সুপারের নির্দেশে মোফাচ্ছের ও ইয়াছিন নামে তার দুই সহোদরকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার রাতে তাদের উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের রুস্তমপুর গ্রামের আমিন উদ্দিন বেপারিবাড়ি থেকে আটক করা হয়।
সোমবার দুপুরে তাদের চাঁদপুর আদালতে পাঠায় পুলিশ।
এ ব্যাপারে রোববার বিকালে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
ঘটনাটি গত ২৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের রুস্তমপুর গ্রামের আমিন উদ্দিন বেপারিবাড়িতে ঘটে। বর্তমানে গুরুতর আহতাবস্থায় চাঁদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আহত তাসলিমা বেগম।
জানা যায়, প্রায় চার মাস আগে রুস্তমপুর গ্রামের আমিন উদ্দিন বেপারিবাড়ির কাউসার আলমের নববিবাহিত স্ত্রী মুক্তা বেগমের গলার স্বর্ণের চেইন হারিয়ে যায়। সপ্তাহখানেক পর হারিয়ে যাওয়া চেইনটি কাউছারের বসতঘরের পাশ থেকে খুঁজে পাওয়া যায়। এই চেইনটি হারিয়ে যাওয়াকে চুরি হিসেবে চিহ্নিত করে একই বাড়ির তাসলিমা বেগমকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিলেন অভিযুক্ত কাউছার ও তার পরিবারের সদস্যরা।
ওই ঘটনার জের ধরেই গত ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে কাউছার আলমের ছোট দুই ভাই মোফাচ্ছের, ইয়াসিন ও তাদের মা শামসুন্নাহারের সহায়তায় তাসলিমাকে তার বসতঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।
ঘটনার শিকার তাসলিমা বেগম জানান, বিনাকারণেই ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে বাড়ির উঠোনে তার ওপর হামলা চালানো হয়। তিনি চুরির কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
তাসলিমা বেগমের বড় বোন আমেনা বেগম জানান, চেইন চুরির মিথ্যা অভিযোগ তুলে কাউছার আলমের ছোট দুই ভাই ইয়াসিন ও মোফাচ্ছের এবং তাদের মা শামসুন্নাহার এমন পৈচাশিক নির্যাতন চালান তাসলিমার ওপর।
এদিকে ঘটনার ব্যাপারে কাউছার আলম জানান, তার মায়ের ওপর হামলার ঘটনায় তার ছোট দুই ভাই তাসলিমাকে মারধর করেছে।
কাউসার আলমের স্ত্রী মুক্তা বেগম জানান, তার গলার স্বর্ণের চেইনটি হারিয়ে যায়, পরে চেইনটি খুঁজে পেয়েছেন।
রোববার দুপুরে নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ। এ জন্য ফরিদগঞ্জ থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি।
ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশ পরির্দশক (তদন্ত) মো. বাহার মিয়া জানান, এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় রোববার একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত মোফাচ্ছের ও ইয়াসিন নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের বিষয়ে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।