সময়-সার-পানি সাশ্রয়ী আমন চাষে লাভবান কৃষকরা
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
০১ নভেম্বর ২০২১, ১৯:০০:৫১ | অনলাইন সংস্করণ
মাত্র ১১০ দিনের ব্যবধানে বিঘাপ্রতি ২৫ মন ধান পেয়ে খুশী সাতক্ষীরার চাষিরা। বিনা-১৭ জাতের এই আমন ধান কাটার পর একই জমিতে রবিশস্য এবং আউশও চাষ করতে পেরেছেন তারা।
সময়, পানি এবং সার সাশ্রয়ী বিনা-১৭ চাষ করে চাষিরা লাভবান হওয়ায় তাদের দেখাদেখি অনেকেই এগিয়ে আসছেন।
রোববার বিকালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার লাবসা ইউনিয়নের দেবনগর গ্রামের মাঠে আয়োজিত এক মাঠ দিবসে এসব তথ্য জানান কৃষকরা। তারা বলেন, আমন চাষে আমাদের সময় লাগে ১৫০ থেকে ১৬০ দিন। অথচ মাত্র ১১০ দিনে বিনা-১৭ জাতের ধান পেয়েও আমরা সরিষা ও মুগ, খেসারি আলু চাষের সময় ও সুযোগ পেয়েছি। এরপর একই জমিতে আউশ ধান লাগিয়ে আমরা লাভবান হয়েছি।
কৃষক ইউসুফ আলী, জাহাঙ্গীর আলম, সমীর সরদার ও নার্গিস বেগম সহ কৃষকরা জানিয়েছেন, বিনা-১৭ জাতের ধান চাষে ৪০ শতাংশ পানি কম লাগে। একইভাবে ইউরিয়া সারও লাগে ৩০ শতাংশ কম। উচ্চ ফলনশীল এই জাতের ধান গাছের প্রতিটি ছড়ায় গড়ে ২৫০-২৬০টি ধান থাকে এবং তা ঝরে যায় না। একইসঙ্গে ধানগাছ গুলো সব সময় খাড়া থাকে। এর চালও সরু বলে উল্লেখ করেন তারা।
কৃষকরা বলেন, অন্যান্য জাতের ধান চাষে যে ফলন আমরা পেয়ে থাকি তার তুলনায় বিনা-১৭ জাতে অনেক বেশি ফলন লাভ করছি। জলাবদ্ধতার শিকার সাতক্ষীরায় পাটচাষের পরই বিনা ধানসহ মোট চারটি ফসল ঘরে তুলবার সময় পেয়েছি আমরা।
সাতক্ষীরার বিনেরপোতা পরমাণু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বাবুল আক্তার বলেন, চলতি মওসুমে সাতক্ষীরা জেলার ১৫০ জন চাষি বিনা ১৭ জাতের ধান চাষ করেছেন দেড় হাজার একর জমিতে। তারা প্রত্যেকেই বিঘাপ্রতি গড়ে ২৫ মন ধান পেয়ে এখন খুশী। এই জাতের ধানের বীজ সরকারিভাবে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এছাড়া অভিজ্ঞ চাষিরাও এই বীজ সংরক্ষণ করে তা অন্যদের মাঝে বিলিবন্টন করে আসছেন।
বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির নীতিকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে বিনা-১৭ জাতের ধান একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মাঠ দিবসের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিনা-১৭ এর উদ্ভাবক ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। এতে আরও বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পরিচালক জিএমএ গফুর, সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নূরুল ইসলাম, খুলনা জেলা উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, মো. নজরুল ইসলাম, মো. ওয়ারেশ কবির প্রমুখ।
মাঠ দিবসে কৃষক আবু মুসা বলেন, আমি বীজ ধান সংরক্ষণ করেছি। যে কোনো কৃষক আমার কাছ থেকে চাহিদা মতো বীজ ধান ক্রয় করতে পারেন। তিনি বিনা-১৭ জাতের ধান চাষে অনেক সাশ্রয় বলে উল্লেখ করেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সময়-সার-পানি সাশ্রয়ী আমন চাষে লাভবান কৃষকরা
মাত্র ১১০ দিনের ব্যবধানে বিঘাপ্রতি ২৫ মন ধান পেয়ে খুশী সাতক্ষীরার চাষিরা। বিনা-১৭ জাতের এই আমন ধান কাটার পর একই জমিতে রবিশস্য এবং আউশও চাষ করতে পেরেছেন তারা।
সময়, পানি এবং সার সাশ্রয়ী বিনা-১৭ চাষ করে চাষিরা লাভবান হওয়ায় তাদের দেখাদেখি অনেকেই এগিয়ে আসছেন।
রোববার বিকালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার লাবসা ইউনিয়নের দেবনগর গ্রামের মাঠে আয়োজিত এক মাঠ দিবসে এসব তথ্য জানান কৃষকরা। তারা বলেন, আমন চাষে আমাদের সময় লাগে ১৫০ থেকে ১৬০ দিন। অথচ মাত্র ১১০ দিনে বিনা-১৭ জাতের ধান পেয়েও আমরা সরিষা ও মুগ, খেসারি আলু চাষের সময় ও সুযোগ পেয়েছি। এরপর একই জমিতে আউশ ধান লাগিয়ে আমরা লাভবান হয়েছি।
কৃষক ইউসুফ আলী, জাহাঙ্গীর আলম, সমীর সরদার ও নার্গিস বেগম সহ কৃষকরা জানিয়েছেন, বিনা-১৭ জাতের ধান চাষে ৪০ শতাংশ পানি কম লাগে। একইভাবে ইউরিয়া সারও লাগে ৩০ শতাংশ কম। উচ্চ ফলনশীল এই জাতের ধান গাছের প্রতিটি ছড়ায় গড়ে ২৫০-২৬০টি ধান থাকে এবং তা ঝরে যায় না। একইসঙ্গে ধানগাছ গুলো সব সময় খাড়া থাকে। এর চালও সরু বলে উল্লেখ করেন তারা।
কৃষকরা বলেন, অন্যান্য জাতের ধান চাষে যে ফলন আমরা পেয়ে থাকি তার তুলনায় বিনা-১৭ জাতে অনেক বেশি ফলন লাভ করছি। জলাবদ্ধতার শিকার সাতক্ষীরায় পাটচাষের পরই বিনা ধানসহ মোট চারটি ফসল ঘরে তুলবার সময় পেয়েছি আমরা।
সাতক্ষীরার বিনেরপোতা পরমাণু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বাবুল আক্তার বলেন, চলতি মওসুমে সাতক্ষীরা জেলার ১৫০ জন চাষি বিনা ১৭ জাতের ধান চাষ করেছেন দেড় হাজার একর জমিতে। তারা প্রত্যেকেই বিঘাপ্রতি গড়ে ২৫ মন ধান পেয়ে এখন খুশী। এই জাতের ধানের বীজ সরকারিভাবে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এছাড়া অভিজ্ঞ চাষিরাও এই বীজ সংরক্ষণ করে তা অন্যদের মাঝে বিলিবন্টন করে আসছেন।
বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির নীতিকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে বিনা-১৭ জাতের ধান একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মাঠ দিবসের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিনা-১৭ এর উদ্ভাবক ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। এতে আরও বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পরিচালক জিএমএ গফুর, সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নূরুল ইসলাম, খুলনা জেলা উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, মো. নজরুল ইসলাম, মো. ওয়ারেশ কবির প্রমুখ।
মাঠ দিবসে কৃষক আবু মুসা বলেন, আমি বীজ ধান সংরক্ষণ করেছি। যে কোনো কৃষক আমার কাছ থেকে চাহিদা মতো বীজ ধান ক্রয় করতে পারেন। তিনি বিনা-১৭ জাতের ধান চাষে অনেক সাশ্রয় বলে উল্লেখ করেন।