তিন দিন আগে ক্রয় করা অস্ত্রে হত্যা করা হয় তাসফিয়াকে
কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
২০ এপ্রিল ২০২২, ১৭:০৮:২৬ | অনলাইন সংস্করণ
গত ১৩ এপ্রিল নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের মালেকার বাপের দোকান এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয় চার বছরের শিশু তাসফিয়া আক্তার জান্নাত। ওই সন্ত্রাসী রিমন যে আগ্নেয়াস্ত্রটি ব্যবহার করেছিল তা ঘটনার তিনদিন আগে ২১ হাজার টাকায় ক্রয় করা বলে জানিয়েছে র্যাব।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় নোয়াখালী র্যাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, তাসফিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি রিমন (২৩) ও তার সহযোগী সোহেল উদ্দিন (২৪), সুজন (২৬), নাইমুল ইসলাম (২১) এবং আকবর হোসেনর (২৬) অবস্থান নিশ্চিত হয়ে মঙ্গলবার রাতে জেলার সুবর্ণচরের চরক্লার্কে অভিযান চালায় র্যাবের একটি দল। এ সময় ওই সন্ত্রাসীরা র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই রাউন্ড গুলি ছুঁড়লে র্যাবও পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে তারা পিছু হটার চেষ্টা করলে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ৫টি গোলাবারুদ, একটি পিস্তল, একটি পাইপগান ও ৬ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ এপ্রিল বিকেল ৩টার দিকে তাসফিয়াকে নিয়ে বাড়ির পার্শ্ববর্তী মালেকার বাপের দোকান এলাকার বন্ধু স্টোরে যান আবু জাহের। ওই দোকানে গিয়ে তাসফিয়ার জন্য চকলেট, জুস ও চিপস নিয়ে দোকান থেকে বের হওয়ার সময় মহিন, রিমন, আকবর, নাঈমের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একদল সন্ত্রাসী মামুনের দোকানে এসে তুই (আবু জাহের) ওইদিন বৈঠকে ছিলি বলে গালাগালি করে।
এক পর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে পাশে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডারে লেগে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরে তারা দোকান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা পিছন থেকে তাদের লক্ষ্য করে প্রথমে ইট নিক্ষেপ করলে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাসফিয়া পরে তারা বাড়ি যাওয়ার সময় পিছন থেকে আরও দুই রাউন্ড শটগানের গুলি ছুঁড়ে সন্ত্রাসীরা।
এতে তাসফিয়া ও জাহের গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন। পরে গুলিবিদ্ধ তাসফিয়া ও আবু জাহেরকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয় লোকজন। পরে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা নেওয়ার পথে কুমিল্লায় পৌঁছলে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা নানীর কোলে মারা যায় তাসফিয়া।
মাটি কাটার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের সঙ্গে কোনো সংপৃক্ততা ছিল না মাওলনা আবু জাহের বা তার মেয়ে তাসফিয়ার। তবে মাটি কাটা নিয়ে বৈঠকে ছিল এমন অভিযোগে সন্ত্রাসীদের টার্গেট হয় মাওলানা আবু জাহের, আর সেই টার্গেটের শিকার হয়ে প্রাণ হারায় তাসফিয়া।
এ ঘটনায় গত ১৪ এপ্রিল দুপুরে তাসফিয়া হত্যার ঘটনায় তার খালু (খালার স্বামী) হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বাদশা, রিমনসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ্য ও অজ্ঞাত নামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এ পর্যন্ত ৯ জন এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
তিন দিন আগে ক্রয় করা অস্ত্রে হত্যা করা হয় তাসফিয়াকে
গত ১৩ এপ্রিল নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের মালেকার বাপের দোকান এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয় চার বছরের শিশু তাসফিয়া আক্তার জান্নাত। ওই সন্ত্রাসী রিমন যে আগ্নেয়াস্ত্রটি ব্যবহার করেছিল তা ঘটনার তিনদিন আগে ২১ হাজার টাকায় ক্রয় করা বলে জানিয়েছে র্যাব।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় নোয়াখালী র্যাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, তাসফিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি রিমন (২৩) ও তার সহযোগী সোহেল উদ্দিন (২৪), সুজন (২৬), নাইমুল ইসলাম (২১) এবং আকবর হোসেনর (২৬) অবস্থান নিশ্চিত হয়ে মঙ্গলবার রাতে জেলার সুবর্ণচরের চরক্লার্কে অভিযান চালায় র্যাবের একটি দল। এ সময় ওই সন্ত্রাসীরা র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই রাউন্ড গুলি ছুঁড়লে র্যাবও পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে তারা পিছু হটার চেষ্টা করলে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ৫টি গোলাবারুদ, একটি পিস্তল, একটি পাইপগান ও ৬ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ এপ্রিল বিকেল ৩টার দিকে তাসফিয়াকে নিয়ে বাড়ির পার্শ্ববর্তী মালেকার বাপের দোকান এলাকার বন্ধু স্টোরে যান আবু জাহের। ওই দোকানে গিয়ে তাসফিয়ার জন্য চকলেট, জুস ও চিপস নিয়ে দোকান থেকে বের হওয়ার সময় মহিন, রিমন, আকবর, নাঈমের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একদল সন্ত্রাসী মামুনের দোকানে এসে তুই (আবু জাহের) ওইদিন বৈঠকে ছিলি বলে গালাগালি করে।
এক পর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে পাশে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডারে লেগে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরে তারা দোকান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা পিছন থেকে তাদের লক্ষ্য করে প্রথমে ইট নিক্ষেপ করলে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাসফিয়া পরে তারা বাড়ি যাওয়ার সময় পিছন থেকে আরও দুই রাউন্ড শটগানের গুলি ছুঁড়ে সন্ত্রাসীরা।
এতে তাসফিয়া ও জাহের গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন। পরে গুলিবিদ্ধ তাসফিয়া ও আবু জাহেরকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয় লোকজন। পরে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা নেওয়ার পথে কুমিল্লায় পৌঁছলে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা নানীর কোলে মারা যায় তাসফিয়া।
মাটি কাটার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের সঙ্গে কোনো সংপৃক্ততা ছিল না মাওলনা আবু জাহের বা তার মেয়ে তাসফিয়ার। তবে মাটি কাটা নিয়ে বৈঠকে ছিল এমন অভিযোগে সন্ত্রাসীদের টার্গেট হয় মাওলানা আবু জাহের, আর সেই টার্গেটের শিকার হয়ে প্রাণ হারায় তাসফিয়া।
এ ঘটনায় গত ১৪ এপ্রিল দুপুরে তাসফিয়া হত্যার ঘটনায় তার খালু (খালার স্বামী) হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বাদশা, রিমনসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ্য ও অজ্ঞাত নামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এ পর্যন্ত ৯ জন এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।