বাবার কোলে শিশুকে গুলি করে হত্যা: ৪ আসামি ৫ দিন করে রিমান্ডে
নোয়াখালী প্রতিনিধি
২১ এপ্রিল ২০২২, ১৯:৩০:১২ | অনলাইন সংস্করণ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের হাজীপুরে বাবার কোলে শিশু তাসফিয়া আক্তার জান্নাতকে গুলি করে হত্যা মামলায় চার আসামিকে ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া মামলার প্রধান আসামি মো. রিমন দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে স্বীকার করায় আদালতে জবানবন্দি নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
রিমান্ডে নেওয়া আসামি হলেন- সুজন, সোহেল উদ্দিন, নাইমুল ইসলাম ও আকবর হোসেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন। সন্ধ্যা থেকে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি সাইফুল ইসলাম ৪ আসামির রিমান্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. সাবজেল হোসেন আদালতে বৃহস্পতিবার সকালে এই ৪ আসামির ৭ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানির পর আদালত ৪ আসামির ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলার সুবর্ণচর উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে র্যা ব-১১ একটি দল তাসফিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি রিমনসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে।
অপরদিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের হাজীপুরে শিশু তাসফিয়া আক্তার জান্নাত হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি বেগমগঞ্জ পুলিশের কাছ থেকে তদন্তের জন্য জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল বিকাল ৪টার দিকে তাসফিয়াকে নিয়ে বাড়ির পার্শ্ববর্তী মালেকার বাপের দোকানেযান প্রবাসী আবু জাহের। ওই দোকানে গিয়ে তাসফিয়ার জন্য চকলেট, জুস ও চিপস নিয়ে দোকান থেকে বের হওয়ার সময় মহিন, রিমন, আকবর, নাঈমের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একদল সন্ত্রাসী মামুনের দোকানে এসে মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের জের ধরে তার ওপর হামলা চালায়।
একপর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে পাশে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডারে লেগে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরে তারা দোকান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা পেছন থেকে তাদের লক্ষ্য করে প্রথমে ইট নিক্ষেপ করলে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাসফিয়া। পরে তারা বাড়ি যাওয়ার সময় পেছন থেকে বেশ কয়েক রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। এতে তাসফিয়া ও জাহের গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
পরে গুলিবিদ্ধ তাসফিয়া ও আবু জাহেরকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় লোকজন। পরে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লায় পৌঁছলে মারা যায় তাসফিয়া।
মাটি কাটার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের সঙ্গে কোনোভাবেই সংপৃক্ততা ছিল না মাওলানা আবু জাহের বা তার মেয়ে তাসফিয়া। তবে মাটি কাটা নিয়ে বৈঠকে ছিল এমন অভিযোগে সন্ত্রাসীদের টার্গেট হয় মাওলানা আবু জাহের, আর সেই টার্গেটের শিকার হয়ে প্রাণ হারায় তাসফিয়া।
এ ঘটনায় ১৪ এপ্রিল দুপুরে তাসফিয়া হত্যার ঘটনায় তার খালু হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বাদশা ও রিমনসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় এ পর্যন্ত ৯ জন এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বাবার কোলে শিশুকে গুলি করে হত্যা: ৪ আসামি ৫ দিন করে রিমান্ডে
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের হাজীপুরে বাবার কোলে শিশু তাসফিয়া আক্তার জান্নাতকে গুলি করে হত্যা মামলায় চার আসামিকে ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া মামলার প্রধান আসামি মো. রিমন দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে স্বীকার করায় আদালতে জবানবন্দি নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
রিমান্ডে নেওয়া আসামি হলেন- সুজন, সোহেল উদ্দিন, নাইমুল ইসলাম ও আকবর হোসেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন। সন্ধ্যা থেকে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি সাইফুল ইসলাম ৪ আসামির রিমান্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. সাবজেল হোসেন আদালতে বৃহস্পতিবার সকালে এই ৪ আসামির ৭ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানির পর আদালত ৪ আসামির ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলার সুবর্ণচর উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে র্যা ব-১১ একটি দল তাসফিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি রিমনসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে।
অপরদিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের হাজীপুরে শিশু তাসফিয়া আক্তার জান্নাত হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি বেগমগঞ্জ পুলিশের কাছ থেকে তদন্তের জন্য জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল বিকাল ৪টার দিকে তাসফিয়াকে নিয়ে বাড়ির পার্শ্ববর্তী মালেকার বাপের দোকানে যান প্রবাসী আবু জাহের। ওই দোকানে গিয়ে তাসফিয়ার জন্য চকলেট, জুস ও চিপস নিয়ে দোকান থেকে বের হওয়ার সময় মহিন, রিমন, আকবর, নাঈমের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একদল সন্ত্রাসী মামুনের দোকানে এসে মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের জের ধরে তার ওপর হামলা চালায়।
একপর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে পাশে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডারে লেগে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরে তারা দোকান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা পেছন থেকে তাদের লক্ষ্য করে প্রথমে ইট নিক্ষেপ করলে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাসফিয়া। পরে তারা বাড়ি যাওয়ার সময় পেছন থেকে বেশ কয়েক রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। এতে তাসফিয়া ও জাহের গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
পরে গুলিবিদ্ধ তাসফিয়া ও আবু জাহেরকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় লোকজন। পরে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লায় পৌঁছলে মারা যায় তাসফিয়া।
মাটি কাটার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের সঙ্গে কোনোভাবেই সংপৃক্ততা ছিল না মাওলানা আবু জাহের বা তার মেয়ে তাসফিয়া। তবে মাটি কাটা নিয়ে বৈঠকে ছিল এমন অভিযোগে সন্ত্রাসীদের টার্গেট হয় মাওলানা আবু জাহের, আর সেই টার্গেটের শিকার হয়ে প্রাণ হারায় তাসফিয়া।
এ ঘটনায় ১৪ এপ্রিল দুপুরে তাসফিয়া হত্যার ঘটনায় তার খালু হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বাদশা ও রিমনসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় এ পর্যন্ত ৯ জন এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।