বিয়েবাড়িতে উপস্থিত প্রেমিকা, এর পর যত কাণ্ড
বরিশালে বিয়েবাড়িতে প্রেমিকার উপস্থিতির খবর পেয়ে পালিয়ে গেছে বর। আর প্রেমিকার কাণ্ড দেখে ও অভিযোগ শুনে খোদ কনের পরিবারই বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা বাতিল করে দিয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে বরিশাল শহরতলীর চরআবদানি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক দিন আগে তাদের গ্রামের ১৮ বছরের এক মেয়ের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী মহাবাজ এলাকার ইউনিয়ন ভূমি অফিসসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা দিপু মল্লিকের ছেলে মৃদুলের বিয়ে ঠিক হয়। যথানিয়মে শুক্রবার কনের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জুমার নামাজের পর বিয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করার পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়া শেষে কনেকে বরের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নেয় পরিবার।
কিন্তু জুমার নামাজের আগে বর মৃদুলের বাড়ির পাশের এক মেয়ে তার বোন ও মাকে নিয়ে কনের বাড়িতে হাজির হয়। এ সময় ওই মেয়ে নিজেকে বর মৃদুলের প্রেমিকা বলে দাবি করে, কনেকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা করার পাশাপাশি হই-হুল্লোড় বাধিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা এসে ওই মেয়ের অভিযোগ শুনে এবং কনের পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের কার্যক্রম বাতিল করে দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মারুফ হোসেন জানান, জুমার নামাজের আগ মুহূর্তের ঘটনা। বর-কনে পক্ষের প্রায় সব অতিথি এসে গেছে বিয়েবাড়িতে। কেউ জুমার নামাজের জন্য মসজিদে গেছে, কেউ বাহিরে ঘোরাঘুরি করছে। নামাজ আদায় শেষে বিয়ের আনুষ্ঠানিক সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রেমিকা দাবি করা ওই মেয়ে বর মৃদুলের স্বজনদের সামনেই দীর্ঘ সাত থেকে সাড়ে ৭ বছরের প্রেমের নানান ঘটনা প্রমাণসহ বলতে থাকেন। এসব শুনে ও দেখে উপস্থিত সবার চক্ষু চড়কগাছ।
এদিকে কনের বাড়িতে প্রেমিকার আসার পর থেকেই মৃদুলের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এক কথায় মৃদুল পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে সার্বিক দিক বিবেচনা করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা কনের বাবা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে আলোচনা করে বিয়ের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
কনের বাবা জাহাঙ্গীর বলেন, তার মেয়েকে মৃদুলের সঙ্গে বিয়ে না দেওয়ার কথা বরপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে বরপক্ষের লোকজনসহ কিছু অতিথি না খেয়েই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
যদিও দরিদ্র কনের বাবা এক-দেড়শ মেহমানের খাবারের আয়োজন করেছিলেন।
চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল খান বলেন, এমন ছেলের সঙ্গে বিয়ে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কনের বাবা। সঙ্গে সঙ্গে বিয়ের কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। যদিও কনের কোনো দোষ ছিল না, বর ও তার পরিবার পেছনের এসব বিষয়গুলো গোপন রেখে বিয়ের আয়োজন এগিয়ে নিয়ে যায়।
এদিকে সুবিচার পেতে মৃদুলের প্রেমিকাকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয়রা। তখন ওই মেয়ে ও তার পরিবার থানায় মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বিয়েবাড়িতে উপস্থিত প্রেমিকা, এর পর যত কাণ্ড
বরিশালে বিয়েবাড়িতে প্রেমিকার উপস্থিতির খবর পেয়ে পালিয়ে গেছে বর। আর প্রেমিকার কাণ্ড দেখে ও অভিযোগ শুনে খোদ কনের পরিবারই বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা বাতিল করে দিয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে বরিশাল শহরতলীর চরআবদানি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক দিন আগে তাদের গ্রামের ১৮ বছরের এক মেয়ের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী মহাবাজ এলাকার ইউনিয়ন ভূমি অফিসসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা দিপু মল্লিকের ছেলে মৃদুলের বিয়ে ঠিক হয়। যথানিয়মে শুক্রবার কনের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জুমার নামাজের পর বিয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করার পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়া শেষে কনেকে বরের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নেয় পরিবার।
কিন্তু জুমার নামাজের আগে বর মৃদুলের বাড়ির পাশের এক মেয়ে তার বোন ও মাকে নিয়ে কনের বাড়িতে হাজির হয়। এ সময় ওই মেয়ে নিজেকে বর মৃদুলের প্রেমিকা বলে দাবি করে, কনেকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা করার পাশাপাশি হই-হুল্লোড় বাধিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা এসে ওই মেয়ের অভিযোগ শুনে এবং কনের পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের কার্যক্রম বাতিল করে দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মারুফ হোসেন জানান, জুমার নামাজের আগ মুহূর্তের ঘটনা। বর-কনে পক্ষের প্রায় সব অতিথি এসে গেছে বিয়েবাড়িতে। কেউ জুমার নামাজের জন্য মসজিদে গেছে, কেউ বাহিরে ঘোরাঘুরি করছে। নামাজ আদায় শেষে বিয়ের আনুষ্ঠানিক সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রেমিকা দাবি করা ওই মেয়ে বর মৃদুলের স্বজনদের সামনেই দীর্ঘ সাত থেকে সাড়ে ৭ বছরের প্রেমের নানান ঘটনা প্রমাণসহ বলতে থাকেন। এসব শুনে ও দেখে উপস্থিত সবার চক্ষু চড়কগাছ।
এদিকে কনের বাড়িতে প্রেমিকার আসার পর থেকেই মৃদুলের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এক কথায় মৃদুল পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে সার্বিক দিক বিবেচনা করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা কনের বাবা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে আলোচনা করে বিয়ের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
কনের বাবা জাহাঙ্গীর বলেন, তার মেয়েকে মৃদুলের সঙ্গে বিয়ে না দেওয়ার কথা বরপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে বরপক্ষের লোকজনসহ কিছু অতিথি না খেয়েই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
যদিও দরিদ্র কনের বাবা এক-দেড়শ মেহমানের খাবারের আয়োজন করেছিলেন।
চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল খান বলেন, এমন ছেলের সঙ্গে বিয়ে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কনের বাবা। সঙ্গে সঙ্গে বিয়ের কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। যদিও কনের কোনো দোষ ছিল না, বর ও তার পরিবার পেছনের এসব বিষয়গুলো গোপন রেখে বিয়ের আয়োজন এগিয়ে নিয়ে যায়।
এদিকে সুবিচার পেতে মৃদুলের প্রেমিকাকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয়রা। তখন ওই মেয়ে ও তার পরিবার থানায় মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।