মা-ছেলে হত্যার রহস্য উদঘাটন

 কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি  
২৫ মে ২০২২, ০৯:৪৬ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ
গ্রেফতার
ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে চাঞ্চল্যকর মা ও ৫ বছর বয়সী শিশু হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে জামালপুর র‌্যাব-১৪। ছায়া তদন্তের মাধ্যমে এই ক্লু-লেস এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আটক করতে সমর্থ হয় তারা। 

বুধবার দুপুরে রৌমারী অফিসার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের জট খুলে সাংবাদিকদের সামনে ঘটনার বর্ণনা দেন জামালপুর র‌্যাব-১৪, সিপিসি-১ এর কোম্পানি কমান্ডর স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন হাফসা খাতুনের ভাসুর চান মিয়া (৪৩)। এ সময় তাকে সহযোগিতা করে হাফসার কথিত উকিল বাবা জাকির হোসেন ওরফে জফিয়াল (২৮)। পারিবারিক কলহের জেরে নিজের ছোটভাইয়ের স্ত্রী হাফসা খাতুন (২৭) ও তার ৫ বছর বয়সী ছেলে হাবীবকে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করে চান মিয়া। এ সময় তাকে সহযোগিতা করে জাকির হোসেন। 

হত্যাকাণ্ডের পর উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যায় চান মিয়া। এ ঘটনার পর নিহত হাফসা আক্তারের বাবা হারুন উর রশীদ বাদী হয়ে রৌমারী থানায় অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মা ও শিশুসন্তান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় র‌্যাবের জামালপুর ক্যাম্পের প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ছায়া তদন্ত শুরু করে। 

তারা বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও ঘটনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে আসামি জাকির হোসেন জফিয়ালকে শনাক্ত করতে সমর্থ হয়। এরপর তাকে ট্র্যাকিং করে পালানোর সময় জামালপুর জেলার বকসীগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে চান মিয়াকেও রৌমারীর শৌলমারী থেকে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
 
তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন ভিকটিম হাফসা আক্তার তার অসুস্থ্য ৫ বছর বয়সী ছেলে হাবীবকে কুড়িগ্রামে ডাক্তার দেখানোর পর চিকিৎসা শেষে রৌমারীতে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে রৌমারী বাজার হতে প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র ও একটি ফ্লাক্স কিনে শ্বশুর বাড়িতে যান। সেখান থেকে ছেলেকে নিয়ে তার বাবার বাড়ি সদর ইউনিয়নের নতুন বন্দর গ্রামে যাওয়ার সময় জনৈক আব্দুর সবুর মিয়ার পুকুরের পূর্ব পাড়ে ওঁৎ পেতে থাকা চান মিয়া ও জাকির হোসেন হাফসা আক্তার ও তার শিশু সন্তানকে আটক করে। সেখানেই নির্মমভাবে দুজনের গলা কেটে হত্যা করা হয়। 

শিশুটি ঘটনাস্থলে মারা গেলেও গুরুতর আহত হাফসা আক্তারকে প্রথমে রৌমারী স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। পারিবারিক কলহের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে গলা কেটে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়। 
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন- র‌্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্পের স্কোয়াড কমান্ডর এএসপি এমএম সবুজ রানা। 

উল্লেখ্য, গত ২১ মে শনিবার সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নতুনবন্দর নামক এলাকায় এক পুকুর পাড়ে ধানখেত থেকে গলাকাটা অবস্থায় হাফসা আক্তার এবং তার পাঁচ বছর বয়সী শিশু সন্তান হাবীবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে হাফসা আক্তারের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত হাফসা আক্তারের বাবা হারন উর রশীদ বাদী হয়ে রৌমারী থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 


 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জেলার খবর
অনুসন্ধান করুন