ঝড়-বৃষ্টি হলেই শঙ্কা বাড়ে নুরভানুর
জীর্ণ কুঠিরে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছেন নুরভানু বেগম। বৃষ্টি হলেই চাল গলিয়ে শরীর ভিজে যায় তাদের। আর ঝড় হলেই বাড়ি উড়ে যাওয়ার শঙ্কা।
অসুস্থ হোটেল শ্রমিক স্বামী মতিয়ার রহমান কাজ করলে দুবেলা পেটপুরে খাবার জোটে। যেদিন কাজে যেতে পারেন না সেদিন দুর্দিন চলে ওই পরিবারটিতে। এই অসহায় পরিবারটি বসবাস করছে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের ক্বারীপাড়া গ্রামে।
নুরভানু বেগম জানান, অনেক আর্জি নিয়ে চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে গিয়েছি। ওরা খালি ঘুরায়। সবাই বলে টাকা দিলে সরকারি ঘর মিলবে। কিন্তু আমরা খাবারই পায় না। তাদেরকে দেওয়ার টাকা পাব কই।
ওই গ্রামের প্রতিবেশী মনজিলা ও হাবিবুর বলেন, মতিয়ার অচল মানুষ। ঠিকমতো কাজকর্ম করতে পারে না। নিদারুন কষ্টে চলছে তাদের সংসার। ঝড়-তুফান আসলে পরিবারটি আতংকে থাকে। কখন ঝড়ে ঝুপড়ি ঘর উড়ে নিয়ে যায়। সরকার এতো ঘর দিল অথচ এই পরিবারটি কিছুই পেল না। একবার আমরা সবাই মিলে মেম্বার-চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু টাকার জন্য তারা ঘর পেল না। ঘর নিতে হলে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছিল তারা। ফলে তাদের ভাগ্যে ঘর জোটেনি।
নুরভানুর স্বামী মতিয়ার রহমান বলেন, আমার সম্বল হলো দুই শতক জমি। সেখানে খড়ের ঘর ছিল। সেটা পঁচে গেছে। পরে এলাকার লোকজন মিলে টিনের ছাপড়া ঘর করে দিয়েছে। সেই ছাপড়ারও যায় যায় অবস্থা। শীতে বাতাস ঢোকে। ঝড়-বৃষ্টি হলে ছাপড়া দিয়ে টুপটুপ করি গায়ে পানি পড়ে।
সরেজমিন নুরভানুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বেহাল অবস্থা। যদিও এটিকে ঘর বলা যায় কিনা। দুই শতক জমির ওপর জরাজীর্ণ ঝুপড়িঘরটির ভেতরে বাঁশের ফালি দিয়ে টং (মাচা) তৈরি করে সেখানে রাত কাটায় পরিবারটি। একদিকে চাটাই আর পেছন দিকে পুরনো কাপড়ের আবরণ দিয়ে বেড়া তৈরি করা হয়েছে। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে মানবেতরভাবে জীবনযাপন করছে পরিবারটি।
সরকার ভূমিহীন ও আশ্রয়হীনদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করে দিলেও এই অসহায় পরিবারটি থেকে গেছে বাহিরে। তবে সরকারি ঘর না পেলেও এ নিয়ে আক্ষেপ নেই নুরভানুর।
বিষয়টি নিয়ে হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শায়খুল ইসলাম নয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ঘরের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। এবার বরাদ্দ পেলে নুরভানুর বিষয়টি দেখা হবে।
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার জানান, পরিবারটির নামে নিজস্ব জমি থাকায় নিয়মানুয়ায়ী আশ্রয়ণের ঘর বরাদ্দ পাবেন না। তবে তাদের ঘরের সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করা যাবে।
ঝড়-বৃষ্টি হলেই শঙ্কা বাড়ে নুরভানুর
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
০৮ জুন ২০২২, ১৫:৪৬:২৩ | অনলাইন সংস্করণ
জীর্ণ কুঠিরে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছেন নুরভানু বেগম। বৃষ্টি হলেই চাল গলিয়ে শরীর ভিজে যায় তাদের। আর ঝড় হলেই বাড়ি উড়ে যাওয়ার শঙ্কা।
অসুস্থ হোটেল শ্রমিক স্বামী মতিয়ার রহমান কাজ করলে দুবেলা পেটপুরে খাবার জোটে। যেদিন কাজে যেতে পারেন না সেদিন দুর্দিন চলে ওই পরিবারটিতে। এই অসহায় পরিবারটি বসবাস করছে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের ক্বারীপাড়া গ্রামে।
নুরভানু বেগম জানান, অনেক আর্জি নিয়ে চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে গিয়েছি। ওরা খালি ঘুরায়। সবাই বলে টাকা দিলে সরকারি ঘর মিলবে। কিন্তু আমরা খাবারই পায় না। তাদেরকে দেওয়ার টাকা পাব কই।
ওই গ্রামের প্রতিবেশী মনজিলা ও হাবিবুর বলেন, মতিয়ার অচল মানুষ। ঠিকমতো কাজকর্ম করতে পারে না। নিদারুন কষ্টে চলছে তাদের সংসার। ঝড়-তুফান আসলে পরিবারটি আতংকে থাকে। কখন ঝড়ে ঝুপড়ি ঘর উড়ে নিয়ে যায়। সরকার এতো ঘর দিল অথচ এই পরিবারটি কিছুই পেল না। একবার আমরা সবাই মিলে মেম্বার-চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু টাকার জন্য তারা ঘর পেল না। ঘর নিতে হলে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছিল তারা। ফলে তাদের ভাগ্যে ঘর জোটেনি।
নুরভানুর স্বামী মতিয়ার রহমান বলেন, আমার সম্বল হলো দুই শতক জমি। সেখানে খড়ের ঘর ছিল। সেটা পঁচে গেছে। পরে এলাকার লোকজন মিলে টিনের ছাপড়া ঘর করে দিয়েছে। সেই ছাপড়ারও যায় যায় অবস্থা। শীতে বাতাস ঢোকে। ঝড়-বৃষ্টি হলে ছাপড়া দিয়ে টুপটুপ করি গায়ে পানি পড়ে।
সরেজমিন নুরভানুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বেহাল অবস্থা। যদিও এটিকে ঘর বলা যায় কিনা। দুই শতক জমির ওপর জরাজীর্ণ ঝুপড়িঘরটির ভেতরে বাঁশের ফালি দিয়ে টং (মাচা) তৈরি করে সেখানে রাত কাটায় পরিবারটি। একদিকে চাটাই আর পেছন দিকে পুরনো কাপড়ের আবরণ দিয়ে বেড়া তৈরি করা হয়েছে। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে মানবেতরভাবে জীবনযাপন করছে পরিবারটি।
সরকার ভূমিহীন ও আশ্রয়হীনদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করে দিলেও এই অসহায় পরিবারটি থেকে গেছে বাহিরে। তবে সরকারি ঘর না পেলেও এ নিয়ে আক্ষেপ নেই নুরভানুর।
বিষয়টি নিয়ে হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শায়খুল ইসলাম নয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ঘরের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। এবার বরাদ্দ পেলে নুরভানুর বিষয়টি দেখা হবে।
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার জানান, পরিবারটির নামে নিজস্ব জমি থাকায় নিয়মানুয়ায়ী আশ্রয়ণের ঘর বরাদ্দ পাবেন না। তবে তাদের ঘরের সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করা যাবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023