মৃতকে জীবিত দেখিয়ে চাল আত্মসাৎ
সীমাহীন দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, পেশিশক্তির দাপট, ভিজিএফ ও ভিজিডির মাল আত্মাসাৎসহ বিস্তর অভিযোগ উঠেছে ভিতরবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল আলম শফির বিরুদ্ধে। মৃত ব্যক্তির নামে ভিজিএফের চাল আত্মসাৎ করার চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে।
এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান বলেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন ইউএনও। নাগেশ্বরী উপজেলা পষিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, ইউপি সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাবের তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। সরকারি সহায়তা বঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধাসহ ১৪০ জনের লিখিত অভিযোগের তদন্ত সোমবার করা হবে। তারপর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, চেয়ারম্যান শফিউল আলম শফির বিরুদ্ধে অভিযোগ- ঈদের সময় তালিকাভুক্ত দুই হাজার দুস্থ মানুষকে ভিজিএফের চাল না দিয়ে আত্মাসাৎ করেন, মৃত ব্যক্তির নামে ভিজিএফের চাল বরাদ্দ, একই ব্যক্তির নামে এবং একই পরিবারে একাধিক কার্ড প্রদান, অবস্থা সম্পন্ন ব্যক্তির নামে ভিজিএফ বরাদ্দ, ট্যাক্সের টাকা আত্মাসাৎ, বিধি বহির্ভূত হাট ইজারা প্রদান, গেজেট ছাড়াই ইউনিয়নের নাম পরিবর্তন, ছেলের দখলে ইউনিয়ন পরিষদের ২টি রুম নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা ও ইউপি সদস্যদের বসার রুমে অবৈধ ট্যাক্স আদায়কারীদের আবাসনের ব্যবস্থা।
ভিতরবন্দ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য আনিছুর রহমান জানান, সরকারি গেজেট উপেক্ষা করে ইউনিয়ন পরিষদের নাম পরিবর্তন করে ৯নং আলোকিত ভিতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ হিসাবে ঘোষণা এবং প্রচার-প্রচারণা করা। সরকারি গেজেটে প্রকৃত নাম ৯নং ভিতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ। সরকারি বিধি বিধান না মেনে সুকানদিঘী (নয়ারহাট) নামে নতুন হাট ইজারা প্রদান করেন চেয়ারম্যান। অতিরিক্ত ট্যাক্স আদায় করে কোষাগারে জমা না করে ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন চেয়াম্যান শফিউল আলম।
ইউপি ভবনের দ্বিতীয় তলায় চেয়ারম্যানের বড় ছেলে ফয়সাল শামীমকে দুটি রুম বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেখানে টাঙানো হয়েছে ‘আমরাই বাংলাদেশ ইউনিট-২’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের জেলা কার্যালয়ের সাইনবোর্ড। মূলত এখানে ব্যক্তিগত ব্যবসা এবং অতিরিক্ত ফি নিয়ে জন্মনিবন্ধনের কাজ করা হয়।
৯নং ওয়ার্ডের নাউয়াপাড়া ঠিকানায় আবুল হোসেনের পুত্র সাহিনুর রহমানের নামে ৩৩৭৪ ও ৩৭৪০ ক্রমিক নম্বরের পৃথক দুটি ভিজিএফ কার্ড ইস্যু করা হয়।
আব্দুস সোবহান অবস্থা সম্পন্ন কৃষক, তার ৮ বিঘা জমি আছে। অথচ তার স্ত্রী জোসনার নামে ভিজিএফ কার্ড নং ৩০৪৪ দেওয়া হয়েছে।
মন্ডলেরভিটার আমিনুল এবং তার স্ত্রী জামেনার নামে দুটি ভিজিএফ কার্ড দেয়া হয়েছে (২৯২৭ ও ২৯২৮ নম্বর), মোসলেমা ও তার স্বামী জবেদ আলীর নামে অবৈধভাবে দুটি ভিজিএফ কার্ড ইস্যু করা হয়েছে (ক্রমিক নং-৩৩৭৩ ও ৩৭৩৫)। মজিবর রহমানের স্ত্রী ময়না বেগম অভিযোগ করেন, তার কার্ড নম্বর ৫৩১১ অথচ ভিজিএফের চাল তার ভাগ্যে জোটেনি। তালিকায় তার ন্যাশনাল আইডি কার্ড ও মোবাইল নম্বর ভুল ব্যবহার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান শফিউল আলম শফি তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করতে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সবকিছু নিয়ম অনুসারেই করা হয়েছে।
মৃতকে জীবিত দেখিয়ে চাল আত্মসাৎ
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
২৪ জুলাই ২০২২, ২১:২২:১৪ | অনলাইন সংস্করণ
সীমাহীন দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, পেশিশক্তির দাপট, ভিজিএফ ও ভিজিডির মাল আত্মাসাৎসহ বিস্তর অভিযোগ উঠেছে ভিতরবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল আলম শফির বিরুদ্ধে। মৃত ব্যক্তির নামে ভিজিএফের চাল আত্মসাৎ করার চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে।
এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান বলেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন ইউএনও। নাগেশ্বরী উপজেলা পষিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, ইউপি সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাবের তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। সরকারি সহায়তা বঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধাসহ ১৪০ জনের লিখিত অভিযোগের তদন্ত সোমবার করা হবে। তারপর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, চেয়ারম্যান শফিউল আলম শফির বিরুদ্ধে অভিযোগ- ঈদের সময় তালিকাভুক্ত দুই হাজার দুস্থ মানুষকে ভিজিএফের চাল না দিয়ে আত্মাসাৎ করেন, মৃত ব্যক্তির নামে ভিজিএফের চাল বরাদ্দ, একই ব্যক্তির নামে এবং একই পরিবারে একাধিক কার্ড প্রদান, অবস্থা সম্পন্ন ব্যক্তির নামে ভিজিএফ বরাদ্দ, ট্যাক্সের টাকা আত্মাসাৎ, বিধি বহির্ভূত হাট ইজারা প্রদান, গেজেট ছাড়াই ইউনিয়নের নাম পরিবর্তন, ছেলের দখলে ইউনিয়ন পরিষদের ২টি রুম নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা ও ইউপি সদস্যদের বসার রুমে অবৈধ ট্যাক্স আদায়কারীদের আবাসনের ব্যবস্থা।
ভিতরবন্দ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য আনিছুর রহমান জানান, সরকারি গেজেট উপেক্ষা করে ইউনিয়ন পরিষদের নাম পরিবর্তন করে ৯নং আলোকিত ভিতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ হিসাবে ঘোষণা এবং প্রচার-প্রচারণা করা। সরকারি গেজেটে প্রকৃত নাম ৯নং ভিতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ। সরকারি বিধি বিধান না মেনে সুকানদিঘী (নয়ারহাট) নামে নতুন হাট ইজারা প্রদান করেন চেয়ারম্যান। অতিরিক্ত ট্যাক্স আদায় করে কোষাগারে জমা না করে ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন চেয়াম্যান শফিউল আলম।
ইউপি ভবনের দ্বিতীয় তলায় চেয়ারম্যানের বড় ছেলে ফয়সাল শামীমকে দুটি রুম বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেখানে টাঙানো হয়েছে ‘আমরাই বাংলাদেশ ইউনিট-২’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের জেলা কার্যালয়ের সাইনবোর্ড। মূলত এখানে ব্যক্তিগত ব্যবসা এবং অতিরিক্ত ফি নিয়ে জন্মনিবন্ধনের কাজ করা হয়।
৯নং ওয়ার্ডের নাউয়াপাড়া ঠিকানায় আবুল হোসেনের পুত্র সাহিনুর রহমানের নামে ৩৩৭৪ ও ৩৭৪০ ক্রমিক নম্বরের পৃথক দুটি ভিজিএফ কার্ড ইস্যু করা হয়।
আব্দুস সোবহান অবস্থা সম্পন্ন কৃষক, তার ৮ বিঘা জমি আছে। অথচ তার স্ত্রী জোসনার নামে ভিজিএফ কার্ড নং ৩০৪৪ দেওয়া হয়েছে।
মন্ডলেরভিটার আমিনুল এবং তার স্ত্রী জামেনার নামে দুটি ভিজিএফ কার্ড দেয়া হয়েছে (২৯২৭ ও ২৯২৮ নম্বর), মোসলেমা ও তার স্বামী জবেদ আলীর নামে অবৈধভাবে দুটি ভিজিএফ কার্ড ইস্যু করা হয়েছে (ক্রমিক নং-৩৩৭৩ ও ৩৭৩৫)। মজিবর রহমানের স্ত্রী ময়না বেগম অভিযোগ করেন, তার কার্ড নম্বর ৫৩১১ অথচ ভিজিএফের চাল তার ভাগ্যে জোটেনি। তালিকায় তার ন্যাশনাল আইডি কার্ড ও মোবাইল নম্বর ভুল ব্যবহার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান শফিউল আলম শফি তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করতে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সবকিছু নিয়ম অনুসারেই করা হয়েছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023