আন্তঃস্কুল ফুটবল টুর্নামেন্টে সংঘর্ষে শিক্ষকসহ আহত ১৫

 লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:১৫ এএম  |  অনলাইন সংস্করণ

কুমিল্লার লাকসামে আন্তঃস্কুল ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনার ঘটেছে। এতে শিক্ষকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার বিকালে উপজেলা রহমানিয়া চিরসবুজ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ও বিজরা বাজারে মুদাফরগঞ্জ আলী নওয়াব উচ্চ বিদ্যালয় ও অশ্বদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

খবর পেয়ে আহত শিক্ষার্থীদের বিজরা একটি প্রাইভেট হাসপাতালে দেখতে যান উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ ও বাজার পরিচালনা কমিটির নেতারা। এসময় তারা আহতদের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।

হামলায় আহত হয় মুদাফরগঞ্জ আলী নওয়াব উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহজান সিরাজ, শরীফ ও ছাত্র সাহিদুল ইসলাম, জিহাদ,হিমেল জাহিদসহ অন্তত ১৫ জন।এরমধ্যে জিহাদ ও শাহিদুলকে গুরুতর অবস্থায় লাকসাম সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

এছাড়া আহতদেরকে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, উপজেলার আন্তঃস্কুল ফুটবল টুর্নামেন্টে মঙ্গলবার বিকালে রহমানিয়া চিরসবুজ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মুদাফরগঞ্জ আলী নওয়াব উচ্চ বিদ্যালয় ও অশ্বদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। নির্ধারিত সময়ে অশ্বদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই গোল করে মুদাফরগঞ্জ আলী নওয়াব উচ্চ বিদ্যালয়কে পরাজিত করে। 

পরবর্তী খেলায় অংশ নেওয়ার জন্য অশ্বদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্ররা উল্লাস করতে শুরু করে খেলার মাঠে। এ সময় অশ্বদিয়া স্কুলের এক ছাত্র ও আলী নওয়াব ছাত্রের কথাকাটাকাটি হয়। এতে উভয়পক্ষের বাগবিতণ্ডায় হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনা দেখে রহমানিয়া চিরসবুজ উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ মাইকিং করে বলে দেয় কোনো ছাত্র মাঠ থেকে বাহির না হয় সে জন্য গেটের তালা লাগিয়ে দেয় গেটম্যান। পরে উভয় প্রতিষ্ঠানে খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।

এতে শিক্ষকরা বাধা দিলে দুই শিক্ষকের উপর হামলা করে অশ্বদিয়া স্কুলের ছাত্র ও বহিরাগত শিক্ষার্থীরা। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ কিছুক্ষণের জন্য থেমে থাকে। তবে কিছুক্ষণ পর উভয় পক্ষের উত্তেজনায় আবারও শুরু হয় সংঘর্ষ। এলাকায় ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। 

রহমানিয়া চিরসবুজ উচ্চ বিদ্যালয় প্রিন্সিপাল আবুল খায়ের বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। ছাত্ররা এভাবে হামলায় জড়িয়ে যাবে ভাবতেই পারিনি। এ ঘটনা নিয়ে টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিজরা বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম মিয়া বলেন, খবর পেয়ে বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত আনার জন্য চেষ্টা করে। ছাত্রদের তুচ্ছ ঘটনায় হামলায় উভয় পক্ষই আহত হয়েছে। 

মুদাফরগঞ্জ আলী নওয়াব উচ্চ বিদ্যালয়ের আহত শিক্ষক শাহাজান সিরাজ বলেন, চিরসবুজ বিদ্যালয়ের এক ছাত্র একটা মেয়ের সঙ্গে ধাক্কা খায়। সেটা কেন্দ্র করে ছাত্রদের মধ্যে হামলা সৃষ্টি হয়। এতে আমরা বাধা দিলে বহিরাগত ছাত্র ও লোকজন আমাদের উপর হামলা চালিয়ে আহত করে। 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার প্রসাদ কুমার ভাওয়ালের মোবাইলে বারবার কল করে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

লাকসাম থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন ভুইয়া যুগান্তরকে বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জেলার খবর
অনুসন্ধান করুন