কৃষকের ধান ক্রয়ে ওজনে কারচুপির অভিযোগ

 তোবারক হোসেন খোকন, দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি 
২৯ নভেম্বর ২০২২, ১২:৫৯ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ

চলতি আমন মৌসুমে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ধানের ফড়িয়া, আড়ৎদার ও মহাজনরা সের ও কেজির মারপ্যাঁচে এবং ভেজা ও কাঁচাধানের অজুহাতে ওজনে কারচুপি করে এলাকার কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ধান হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ নিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।

উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ধানের পরিমাপ কেজির ওজনের কথা থাকলেও ধানের বাজারে এখনো চলে সের ওজনের বাটখারার মাপ।

ওই ওজনে ধান কেনা-বেচা না হলেও মেপে নেওয়া হয় কেজির বাটখারায়। আর এখানেই হিসাবের মারপ্যাঁচে কৃষককে ঠকানো হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

মেট্রিক পদ্ধতির ওজন ব্যবহার না করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল-জরিমানার বিধান থাকলেও এ মৌসুমে বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা না করায় ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে।

এলাকার কৃষকরা ধান ব্যবসায়ীদের এসব কারচুপি থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন স্থানে মৌখিক অভিযোগ করেও কোনো ফল পাচ্ছেন না। উপজেলার দুই-চারটি হাট-বাজার ছাড়া প্রায় প্রত্যেক হাটবাজার ও আড়তে কেজির বাটখারার পরিবর্তে সেরের ওজন পরিমাপ করা হয়। কেজি থেকে সেরে পরিবর্তন সহজে সাধারণ কৃষকরা বুঝে ওঠে না। তাই ব্যবসায়ীদের মতানুসারেই ধান বিক্রি করতে হয়।

এ নিয়ে কৃষক হযরত আলী বলেন, ধানের মহাজনরা তাদের ইচ্ছামতো ধান মেপে নেয়। এতে আমাদের বলার কিছুই থাকে না। অনেক কৃষক এতে বাঁধা দিলে তাদের ধান আর নেওয়া হয় না।

ফড়িয়া ধান ব্যবসায়ীর, আড়ৎদার মহাজনরা আমাদের কাছ থেকে ধান কেনার সময় প্রতিমণে কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই কেজি অতিরিক্ত ধান নিয়ে থাকে।

শিবগঞ্জ, ঝাঞ্জাইল, দুর্গাপুর, কুমুদগঞ্জ ও কালিকাপুর বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে এসব কারচুপিতে ধান নেওয়ার সংস্কৃতি চালু আছে এখনো। এসব কারচুপি থেকে বাঁচার জন্য প্রশাসনের সহায়তা কামনাসহ বাজারগুলোতে প্রতিনিয়ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার দাবি জানাচ্ছি।

দুর্গাপুর বাজারের ধান ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সিরাজ আলী জানান, বড় বড় মিলাররা আমাদের কাছ থেকে ভেজা ধানের অজুহাতে প্রতি মণে দুই কেজি ধান বেশি নিয়ে থাকেন।

তাই আমরাও বাজারে ধান কেনার সময় যদি ভেজা ধান হয় তা হলে স্থানীয় কৃষকদের বুঝিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রতি মণে কিছু বাড়তি ধান নিয়ে থাকি। আবার শুকনা ধান কেনার ক্ষেত্রে এমনটি হয় না। তবে দুই-তিন কেজি ধান নেওয়ার অভিযোগ সঠিক না।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল আহসান যুগান্তরকে জানান, ধান কেনার সময় বাজারের ব্যবসায়ীরা ওজনে বেশি নেওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। কৃষকরা যেন ধান বিক্রি করতে এসে না ঠকেন সে বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জেলার খবর
অনুসন্ধান করুন