প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় সমাধান না হওয়ায় বিকল্প চিন্তা: বিচারপতি আশরাফুল কামাল
যুগান্তর প্রতিবেদন, বরগুনা
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৫:১৪:৪২ | অনলাইন সংস্করণ
সমাজে ভাল কাজ করতে গেলে অবশ্যই কষ্ট হবে এটাই স্বাভাবিক। তবুও নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে হবে আমাদের। আমাদের জানার ব্যাপারে অনেকটাই ঘাটতি আছে, তাই শিখতে হবে এবং প্রতিদিনই আমরা শিখছি। আর এই শেখার নির্যাস নিয়ে মানুষের সব ধরনের মৌলিক চাহিদা পূরণে সহযোগিতা করব। প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় সমাধান না হওয়ায় বিকল্প চিন্তা এসেছে। তিন লাইনের একটি আইন মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে।
শুক্রবার সকাল ৯টায় বরগুনা পৌরসভার হল রুমে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিআইএমএস) আয়োজিত ওয়ার্কশপ অন মেডিয়েশন এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল এসব কথা বলেন।
বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন- সাবেক জেলা ও দায়রা জজ রোকসানা পারভীন বেনজু, বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা ও দায়রা জজ মো. মশিউর রহমান খান, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ মাহবুব আলম, পুলিশ সুপার মো. আবদুস ছালাম, পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ, কমিউনিটি মেডিয়েশন সেন্টারের (সিএমএস) চেয়ারম্যান সেলিমা সোবাহান খসরু, ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার অনুতোষ বালা, আইনজীবী মো. শাহজাহান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম সিকদার, বরগুনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট সঞ্জীব কুমার দাস, বিমস অ্যাম্বাসেডর বাংলাদেশের অমিয় প্রাপন চৌধুরী।
প্রধান অতিথি বলেন, বর্তমানে যে হারে মামলা বৃদ্ধি পেয়েছে তার তুলনায় নিষ্পত্তি ৩০ বছরের অধিক পিছিয়ে রয়েছে। তাই বুদ্ধিদীপ্ত জ্ঞান দিয়ে সততা ন্যায় ও নিষ্ঠার সাথে এ ধরনের মামলা উত্তরণের উপায় খুঁজতে হবে। মিডিয়েশনের মাধ্যমে সব মামলার সমাধান করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সালিশ আইন ২০০১ সংশোধন করা প্রয়োজন। কল্যাণকর কার্যের মাধ্যমে একটি উন্নত রাষ্ট্রের পরিণত করতে হবে বাংলাদেশকে। তাই অবশ্যই সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজন রয়েছে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নিজেদের স্বার্থে আইন তৈরি করেছিলেন। তরুণ বিচারকদের সুযোগ করে দিলেই দেশের পরিবর্তন করতে পারবে। আমরা যদি কথা না বলি তাহলে জনগণ কিভাবে সুফল ভোগ করবেন। যে যার অবস্থান থেকে মেডিয়েশন বা সমঝোতাকারী হতে হবে। আমাদের দেশ আমাদেরই ভাবতে হবে। আমরা গরিব না। গরিব আমাদের মানসিকতা। এ সব অবশ্যই পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সমাধান হবে এমন বিষয় নিয়ে মামলায় না গিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করারও পরামর্শ দেন প্রধান অতিথি।
বিআইএমএস এর থিম সং দিয়ে আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বিআইএমএসর জেলার আহ্বায়ক ডাক্তার মনিজা।
উদ্বোধনী ও সংগঠনের বিষয়বস্তু তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন বিআইএমএসর চেয়ারম্যান আইনজীবী ও একরিডেটেড মেডিয়েটর পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু।
অতিথিরা সবাই মেডিয়েশন বান্ধব সমাজ গঠন করতে নানা ধরনের পরামর্শমূলক আলোচনা করেন। মেডিয়েশন অথবা সমঝোতা যেভাবে একটি পরিবারকে সুন্দর ও স্বাভাবিক ভাবে বাঁচতে সহযোগিতা করবে, তেমনি মধ্যস্থতাকারীও মানসিক ও মনস্তত্ত্বের পরিস্ফুটিত হবে। বিচার পূর্বক মেডিয়েশন সমাজ জীবনে, রাষ্ট্রীয় জীবনে, এমনকি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আলোচকবৃন্দ।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় সমাধান না হওয়ায় বিকল্প চিন্তা: বিচারপতি আশরাফুল কামাল
সমাজে ভাল কাজ করতে গেলে অবশ্যই কষ্ট হবে এটাই স্বাভাবিক। তবুও নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে হবে আমাদের। আমাদের জানার ব্যাপারে অনেকটাই ঘাটতি আছে, তাই শিখতে হবে এবং প্রতিদিনই আমরা শিখছি। আর এই শেখার নির্যাস নিয়ে মানুষের সব ধরনের মৌলিক চাহিদা পূরণে সহযোগিতা করব। প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় সমাধান না হওয়ায় বিকল্প চিন্তা এসেছে। তিন লাইনের একটি আইন মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে।
শুক্রবার সকাল ৯টায় বরগুনা পৌরসভার হল রুমে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিআইএমএস) আয়োজিত ওয়ার্কশপ অন মেডিয়েশন এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল এসব কথা বলেন।
বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন- সাবেক জেলা ও দায়রা জজ রোকসানা পারভীন বেনজু, বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা ও দায়রা জজ মো. মশিউর রহমান খান, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ মাহবুব আলম, পুলিশ সুপার মো. আবদুস ছালাম, পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ, কমিউনিটি মেডিয়েশন সেন্টারের (সিএমএস) চেয়ারম্যান সেলিমা সোবাহান খসরু, ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার অনুতোষ বালা, আইনজীবী মো. শাহজাহান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম সিকদার, বরগুনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট সঞ্জীব কুমার দাস, বিমস অ্যাম্বাসেডর বাংলাদেশের অমিয় প্রাপন চৌধুরী।
প্রধান অতিথি বলেন, বর্তমানে যে হারে মামলা বৃদ্ধি পেয়েছে তার তুলনায় নিষ্পত্তি ৩০ বছরের অধিক পিছিয়ে রয়েছে। তাই বুদ্ধিদীপ্ত জ্ঞান দিয়ে সততা ন্যায় ও নিষ্ঠার সাথে এ ধরনের মামলা উত্তরণের উপায় খুঁজতে হবে। মিডিয়েশনের মাধ্যমে সব মামলার সমাধান করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সালিশ আইন ২০০১ সংশোধন করা প্রয়োজন। কল্যাণকর কার্যের মাধ্যমে একটি উন্নত রাষ্ট্রের পরিণত করতে হবে বাংলাদেশকে। তাই অবশ্যই সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজন রয়েছে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নিজেদের স্বার্থে আইন তৈরি করেছিলেন। তরুণ বিচারকদের সুযোগ করে দিলেই দেশের পরিবর্তন করতে পারবে। আমরা যদি কথা না বলি তাহলে জনগণ কিভাবে সুফল ভোগ করবেন। যে যার অবস্থান থেকে মেডিয়েশন বা সমঝোতাকারী হতে হবে। আমাদের দেশ আমাদেরই ভাবতে হবে। আমরা গরিব না। গরিব আমাদের মানসিকতা। এ সব অবশ্যই পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সমাধান হবে এমন বিষয় নিয়ে মামলায় না গিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করারও পরামর্শ দেন প্রধান অতিথি।
বিআইএমএস এর থিম সং দিয়ে আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বিআইএমএসর জেলার আহ্বায়ক ডাক্তার মনিজা।
উদ্বোধনী ও সংগঠনের বিষয়বস্তু তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন বিআইএমএসর চেয়ারম্যান আইনজীবী ও একরিডেটেড মেডিয়েটর পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু।
অতিথিরা সবাই মেডিয়েশন বান্ধব সমাজ গঠন করতে নানা ধরনের পরামর্শমূলক আলোচনা করেন। মেডিয়েশন অথবা সমঝোতা যেভাবে একটি পরিবারকে সুন্দর ও স্বাভাবিক ভাবে বাঁচতে সহযোগিতা করবে, তেমনি মধ্যস্থতাকারীও মানসিক ও মনস্তত্ত্বের পরিস্ফুটিত হবে। বিচার পূর্বক মেডিয়েশন সমাজ জীবনে, রাষ্ট্রীয় জীবনে, এমনকি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আলোচকবৃন্দ।