বখাটেদের ধাওয়ায় বাড়ি ফিরে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
যশোর ব্যুরো
২৮ মার্চ ২০২৩, ২২:৫৫:৪৩ | অনলাইন সংস্করণ
যশোরের ঝিকরগাছায় উত্ত্যক্তের শিকার এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার স্কুলের কোচিং থেকে ফিরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। বখাটেদের ধাওয়ায় সে বাড়ি ফিরেই আত্মহত্যা করে বলে জানা গেছে।
মৃত অনি রায় (১৩) ঝিকরগাছা পৌর সদরের মিস্ত্রীপাড়া এলাকার প্রবাসী গৌতম রায়ের মেয়ে। সে ঝিকরগাছা বিএম হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
পরিবারের দাবি, ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে তাদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
অনি রায়ের ভাই অর্ঘ্য রায় জানান, প্রতিদিনের মতো তার বোন স্কুলে কোচিংয়ের জন্য যায়। কোচিং থেকে ফিরে কাউকে কিছু না বলেই নিজের ঘরে গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। তবে মৃত্যুর আগে সে তার এক বান্ধবীকে কল দিয়েছিল কিন্তু সে ফোন রিসিভ করেনি।
অর্ঘ্য দাবি করেন, তার বোন স্কুল থেকে ফেরার পথে কিছু বখাটে তাকে উত্ত্যক্ত করে। স্কুল থেকে ফেরার পথে কয়েকজন তার পিছু নিয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী উর্মি নামের এক মেয়ে জানান, অনি অনেক জোরে জোরে দৌড়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল আর তিনটা ছেলে তার পিছু নিয়েছিল। এদিকে হাসপাতালে নেওয়ার পরে নিহতের ভাই অর্ঘ্যের সঙ্গে তিন যুবকের ঝগড়া বাধে। তার দাবি, ওই তিন যুবকই অনি রায়কে উত্ত্যক্ত করত। তাদের মধ্যে একজন হাসপাতাল রোড এলাকার জামাল ফার্মেসির মালিকের ছেলে সাকিব। সে বিএম হাইস্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
ঝিকরগাছা বিএম হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ জানান, অনি রায় স্কুলে কোচিং করতে এসেছিল। স্কুল থেকে সে স্বাভাবিকভাবে বের হয়েছে। এরপর বাসায় ফিরে আত্মহত্যা করে। পথে কি হয়েছে সেটি এখনো জানা যায়নি। তবে উত্ত্যক্তের যে অভিযোগ এসেছে এবং সন্দেহভাজন যে নামগুলো পাওয়া গেছে, সেগুলো প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন ঘটনা তদন্ত করছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে। ফলে অনির মৃত্যুর পেছনে যাই থাকুক তা বের হয়ে আসবে।
এছাড়া অনির মৃত্যুর ঘটনায় যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত ও শাস্তির দাবিতে বুধবার স্কুলের আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হবে।
ঝিকরগাছা থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা এএসআই রুমা রায় জানান, মঙ্গলবার অনি রায়ের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। নিহতের ভাই একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ঘটনা তদন্ত করছে।
ঝিকরগাছা থানার ওসি সুমন ভক্ত জানান, অনি রায় নিজ ঘরে মায়ের শাড়িয়ে গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বখাটেদের ধাওয়ায় বাড়ি ফিরে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
যশোরের ঝিকরগাছায় উত্ত্যক্তের শিকার এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার স্কুলের কোচিং থেকে ফিরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। বখাটেদের ধাওয়ায় সে বাড়ি ফিরেই আত্মহত্যা করে বলে জানা গেছে।
মৃত অনি রায় (১৩) ঝিকরগাছা পৌর সদরের মিস্ত্রীপাড়া এলাকার প্রবাসী গৌতম রায়ের মেয়ে। সে ঝিকরগাছা বিএম হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
পরিবারের দাবি, ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে তাদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
অনি রায়ের ভাই অর্ঘ্য রায় জানান, প্রতিদিনের মতো তার বোন স্কুলে কোচিংয়ের জন্য যায়। কোচিং থেকে ফিরে কাউকে কিছু না বলেই নিজের ঘরে গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। তবে মৃত্যুর আগে সে তার এক বান্ধবীকে কল দিয়েছিল কিন্তু সে ফোন রিসিভ করেনি।
অর্ঘ্য দাবি করেন, তার বোন স্কুল থেকে ফেরার পথে কিছু বখাটে তাকে উত্ত্যক্ত করে। স্কুল থেকে ফেরার পথে কয়েকজন তার পিছু নিয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী উর্মি নামের এক মেয়ে জানান, অনি অনেক জোরে জোরে দৌড়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল আর তিনটা ছেলে তার পিছু নিয়েছিল। এদিকে হাসপাতালে নেওয়ার পরে নিহতের ভাই অর্ঘ্যের সঙ্গে তিন যুবকের ঝগড়া বাধে। তার দাবি, ওই তিন যুবকই অনি রায়কে উত্ত্যক্ত করত। তাদের মধ্যে একজন হাসপাতাল রোড এলাকার জামাল ফার্মেসির মালিকের ছেলে সাকিব। সে বিএম হাইস্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
ঝিকরগাছা বিএম হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ জানান, অনি রায় স্কুলে কোচিং করতে এসেছিল। স্কুল থেকে সে স্বাভাবিকভাবে বের হয়েছে। এরপর বাসায় ফিরে আত্মহত্যা করে। পথে কি হয়েছে সেটি এখনো জানা যায়নি। তবে উত্ত্যক্তের যে অভিযোগ এসেছে এবং সন্দেহভাজন যে নামগুলো পাওয়া গেছে, সেগুলো প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন ঘটনা তদন্ত করছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে। ফলে অনির মৃত্যুর পেছনে যাই থাকুক তা বের হয়ে আসবে।
এছাড়া অনির মৃত্যুর ঘটনায় যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত ও শাস্তির দাবিতে বুধবার স্কুলের আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হবে।
ঝিকরগাছা থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা এএসআই রুমা রায় জানান, মঙ্গলবার অনি রায়ের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। নিহতের ভাই একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ঘটনা তদন্ত করছে।
ঝিকরগাছা থানার ওসি সুমন ভক্ত জানান, অনি রায় নিজ ঘরে মায়ের শাড়িয়ে গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।