শিশুর ওপর বাবার বর্বরতা, ভিডিও করলেন সৎমা!
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ছয় বছরের কন্যাশিশু স্বর্ণা আক্তার পিতা ইকবাল মিয়ার হাতে নির্মম লাঠিপেটার শিকার হয়েছে। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে গলায় চেপে ধরে। ওমা! ও বাবা! বলে চিৎকার করলেও মন গলেনি পিতার। আর এ নির্যাতনের ভিডিও করেন শিশুটির সৎমা।
এমন হিংস্রতা ও মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পৌর এলাকার শিমুলতলী বাগরাইট মহল্লায়। এ ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ পাওয়ার পর আঁতকে উঠে মানুষের মন। নিন্দার ঝড় উঠে সবমহলে পাষন্ড পিতার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাচ্ছেন এলাকাবাসী। ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসনও নড়েচড়ে উঠেছে।
বাগরাইট গ্রামের মৃত নাজিম উদ্দিনের ছেলে ইকবাল বিয়ে করেছেন দুটি। তিনি পেশায় একজন শ্রমিক। প্রথম স্ত্রীর নাম হালিমা। তার চার সন্তানের মধ্যে এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে ও মেয়ে বাড়িতে থাকে না। বাড়িতে শুধু ছোট দুই মেয়ে থাকে।
পারিবারিক কলহ ও বনিবনা না হওয়াতে দুই বছর আগে প্রথম স্ত্রী হালিমার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। চার সন্তান রয়ে যায় পিতার কাছে। এরপর কিছুদিন দেশে থেকে প্রবাসে চলে যায় হালিমা। এর মধ্যে রাবেয়া নামের এক নারীকে বিয়ে করে ইকবাল। আগের সংসারের সন্তানদের ভালো ভাবে নিতে পারছিলেন না দ্বিতীয় স্ত্রী রাবেয়া। ফলে সংসারে এ নিয়ে কলহ তৈরি হতো প্রায় সময়। শিশুদের মারধর করা হত হরহামেশাই।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি করা গত রমজানের ১৫ তারিখের দিকে। ভিডিওটি রোববার সন্ধ্যায় প্রকাশ পায় এবং সবার নজরে আসে। ওই দিন তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মারধরের শিকার হয় শিশুটি। আর এটি ঠাণ্ডা মাথায় বসে ভিডিও করেন সৎমা রাবেয়া। ভিডিওটি প্রবাসে থাকা শিশুর মায়ের কাছে পাঠানো হয় তাদের স্বার্থগত চাওয়া পাওয়ার জন্য।
শিশুটির পিতা ইকবালের ফুফু প্রতিবেশী নাজমা আক্তার বলেন, ওই দিন পাশের বাড়ি থেকে মারধরের শব্দ শুনতে পাই। রাতেও তাদের বাড়ি থেকে হৈচৈ শুনি। পরদিন সকালে জেনেছি মারধর করা হয়েছে। ইকবাল চড়া মেজাজের মানুষ। প্রায় সময়ই ছোটখাটো বিষয় নিয়ে সন্তানদের মারধর করে। আমাদের খারাপ লাগে।
বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শিশুটি ভয়ে তটস্থ হয়ে আছে। শিশু স্বর্ণা জানায়, সব সময় তাকে মারপিট করা হয়। শরীরে আঘাতের দাগ রয়েছে। ভয়ে সব সময় চুপচাপ থাকে সে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য গেলে অভিযুক্ত পিতা ইকবাল ও তার স্ত্রী রাবেয়াকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
ইকবালের ছোট ভাই রাসেল মিয়া জানান, স্বর্ণাকে অমানুষিক অত্যাচারের কথা আমি জানতাম না। ভিডিও প্রকাশ হবার পরে জেনেছি। আমার ভাই ইকবাল খুব রাগী মানুষ। পিতা কর্তৃক শিশু কন্যা নির্যাতনের ঘটনা সামান্য কারণে শিশু কন্যাকে বর্বরোচিত ও মধ্যযুগীয় কায়দায় বেধড়ক লাঠিপেটার ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে উঠেছে।
‘নরপিশাচ’ শিরোনামে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা এমন একটি ভিডিও চিত্রের সূত্র ধরে পুলিশ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পৌর সদরের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নির্যাতনকারী পিতা ইকবাল হোসেনকে খুঁজছে।
কটিয়াদী পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিঠু জানান, নির্যাতনের এমন ভিডিও চিত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর থেকে পুলিশ তাকে খুঁজছে।
কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম শাহাদাত হোসেন জানান, পুলিশ সুপারের মাধ্যমে ভিডিওটি পেয়ে গত রাত থেকেই শিশু নির্যাতনকারী ইকবালকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে। শিশুটির পিতা ও সৎ মাকে খুঁজা হচ্ছে। গোয়েন্দা টিমসহ একাধিক টিম কাজ করছে।
শিশুর ওপর বাবার বর্বরতা, ভিডিও করলেন সৎমা!
কিশোরগঞ্জ ব্যুরো ও কটিয়াদী প্রতিনিধি
২৯ মে ২০২৩, ২২:৫৯:৫০ | অনলাইন সংস্করণ
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ছয় বছরের কন্যাশিশু স্বর্ণা আক্তার পিতা ইকবাল মিয়ার হাতে নির্মম লাঠিপেটার শিকার হয়েছে। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে গলায় চেপে ধরে। ওমা! ও বাবা! বলে চিৎকার করলেও মন গলেনি পিতার। আর এ নির্যাতনের ভিডিও করেন শিশুটির সৎমা।
এমন হিংস্রতা ও মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পৌর এলাকার শিমুলতলী বাগরাইট মহল্লায়। এ ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ পাওয়ার পর আঁতকে উঠে মানুষের মন। নিন্দার ঝড় উঠে সবমহলে পাষন্ড পিতার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাচ্ছেন এলাকাবাসী। ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসনও নড়েচড়ে উঠেছে।
বাগরাইট গ্রামের মৃত নাজিম উদ্দিনের ছেলে ইকবাল বিয়ে করেছেন দুটি। তিনি পেশায় একজন শ্রমিক। প্রথম স্ত্রীর নাম হালিমা। তার চার সন্তানের মধ্যে এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে ও মেয়ে বাড়িতে থাকে না। বাড়িতে শুধু ছোট দুই মেয়ে থাকে।
পারিবারিক কলহ ও বনিবনা না হওয়াতে দুই বছর আগে প্রথম স্ত্রী হালিমার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। চার সন্তান রয়ে যায় পিতার কাছে। এরপর কিছুদিন দেশে থেকে প্রবাসে চলে যায় হালিমা। এর মধ্যে রাবেয়া নামের এক নারীকে বিয়ে করে ইকবাল। আগের সংসারের সন্তানদের ভালো ভাবে নিতে পারছিলেন না দ্বিতীয় স্ত্রী রাবেয়া। ফলে সংসারে এ নিয়ে কলহ তৈরি হতো প্রায় সময়। শিশুদের মারধর করা হত হরহামেশাই।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি করা গত রমজানের ১৫ তারিখের দিকে। ভিডিওটি রোববার সন্ধ্যায় প্রকাশ পায় এবং সবার নজরে আসে। ওই দিন তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মারধরের শিকার হয় শিশুটি। আর এটি ঠাণ্ডা মাথায় বসে ভিডিও করেন সৎমা রাবেয়া। ভিডিওটি প্রবাসে থাকা শিশুর মায়ের কাছে পাঠানো হয় তাদের স্বার্থগত চাওয়া পাওয়ার জন্য।
শিশুটির পিতা ইকবালের ফুফু প্রতিবেশী নাজমা আক্তার বলেন, ওই দিন পাশের বাড়ি থেকে মারধরের শব্দ শুনতে পাই। রাতেও তাদের বাড়ি থেকে হৈচৈ শুনি। পরদিন সকালে জেনেছি মারধর করা হয়েছে। ইকবাল চড়া মেজাজের মানুষ। প্রায় সময়ই ছোটখাটো বিষয় নিয়ে সন্তানদের মারধর করে। আমাদের খারাপ লাগে।
বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শিশুটি ভয়ে তটস্থ হয়ে আছে। শিশু স্বর্ণা জানায়, সব সময় তাকে মারপিট করা হয়। শরীরে আঘাতের দাগ রয়েছে। ভয়ে সব সময় চুপচাপ থাকে সে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য গেলে অভিযুক্ত পিতা ইকবাল ও তার স্ত্রী রাবেয়াকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
ইকবালের ছোট ভাই রাসেল মিয়া জানান, স্বর্ণাকে অমানুষিক অত্যাচারের কথা আমি জানতাম না। ভিডিও প্রকাশ হবার পরে জেনেছি। আমার ভাই ইকবাল খুব রাগী মানুষ। পিতা কর্তৃক শিশু কন্যা নির্যাতনের ঘটনা সামান্য কারণে শিশু কন্যাকে বর্বরোচিত ও মধ্যযুগীয় কায়দায় বেধড়ক লাঠিপেটার ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে উঠেছে।
‘নরপিশাচ’ শিরোনামে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা এমন একটি ভিডিও চিত্রের সূত্র ধরে পুলিশ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পৌর সদরের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নির্যাতনকারী পিতা ইকবাল হোসেনকে খুঁজছে।
কটিয়াদী পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিঠু জানান, নির্যাতনের এমন ভিডিও চিত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর থেকে পুলিশ তাকে খুঁজছে।
কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম শাহাদাত হোসেন জানান, পুলিশ সুপারের মাধ্যমে ভিডিওটি পেয়ে গত রাত থেকেই শিশু নির্যাতনকারী ইকবালকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে। শিশুটির পিতা ও সৎ মাকে খুঁজা হচ্ছে। গোয়েন্দা টিমসহ একাধিক টিম কাজ করছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023