Logo
Logo
×

সারাদেশ

সেই ওসিকে প্রত্যাহারে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম

Icon

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ০৭:৩৩ পিএম

সেই ওসিকে প্রত্যাহারে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা থানার ওসি মাহমুদুন-নবীকে প্রত্যাহারের ৭২ ঘণ্টা (তিন দিনের) আলটিমেটাম দিয়েছেন উপজেলা বিএনপি ও কৃষক দলের নেতারাসহ এলাকাবাসী। প্রত্যাহার না হলে রেলপথ ও সড়কপথ অবরোধ করে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি নেতারা।

তাদের দাবি, ‘চাহিদামতো টাকা না পেয়ে’ মামলায় অনেক নিরীহ মানুষকে জড়ানো হয়েছে, এমনকি ‘আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে হামলার’ অভিযোগে দায়ের মামলাটিতে বিএনপির লোকজনকেও আসামি করা হয়েছে। তাই বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলাগুলোর সুষ্ঠু সমাধান না করা হয় তাহলে ৭২ ঘণ্টা পর অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।

সোমবার দুপুরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের হাতীবান্ধা ফিলিং স্টেশনের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় ৩ শতাধিক মানুষ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ব্যক্তিরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। 

বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- হাতীবান্ধা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আফজাল হোসেন মিয়া, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নুরন্নবী খন্দকার কাজল, সদস্য সচিব সোহেল তালুকদার, ছাত্রদলের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল নোমান, মৎস্যজীবী দলের সভাপতি ওবায়দুল হক, কৃষক দলের আহ্বায়ক আমিনুর রহমান, সদস্য সচিব মতিউর রহমান মতি প্রমুখ।

এ নিয়ে গতকাল সোমবার দৈনিক যুগান্তরে ‘ওসি টাকা ছাড়া দুনিয়াত আর কিছু দেখে না’ এমন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এর পরে ওসিকে নিয়ে সারা জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম নেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয় ওসিকে নিয়ে। তার দ্রুত প্রত্যাহারসহ শাস্তির দাবি তোলেন।

বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ওসি ও বাদীর যোগসাজশে মামলা রেকর্ড করে আমাদের কৃষক দলের ইউনিয়ন সভাপতিসহ নিরীহ অনেক মানুষকে আসামি করা হয়েছে। শুধু তাই নয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া রেকর্ডটি প্রমাণ করে মামলার বাদী ও ওসি টাকার জন্য মামলা বাণিজ্যে মেতেছেন। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যদি ওসিকে প্রত্যাহার করা না হয়, তাহলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আমিনুর রহমান বলেন, ওসি ও বাদীর যোগসাজশে মামলা রেকর্ড করে আমাদের কৃষক দলের ইউনিয়ন সভাপতিসহ নিরীহ অনেক মানুষকে আসামি করা হয়েছে। একজন মানুষ হামলার শিকার হয়েছে, এ ঘটনায় এতগুলো লোককে আসামি করার কোনো মানে হয় না। আমরা মনে করছি ওসির পরামর্শে মামলা থানায় হয়েছে। আমরা ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছি। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যদি ওসিকে প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেব।

এই মামলার বাদী ও সাংবাদিক আব্দুর রহিম বলেন, গত ১৮ জুলাই হাতীবান্ধা কৃষি ব্যাংকের সামনে আওয়ামী লীগের একটি মিছিলের ভিডিও ধারণ করার সময় হামলার শিকার হয়েছি। ওই সময় যাদের চিনেছি তাদের নাম দিয়ে আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এ ঘটনায় আর কোনো আমার মন্তব্য নেই। 

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুন-নবী বলেন, থানায় যেকোনো মানুষের নামে অভিযোগ হতে পারে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আসামি গ্রেফতার হয়। এর আগেই আমার বিষয়ে মানববন্ধনে যারা অভিযোগ তুলছেন সেটি সম্পন্ন ভিত্তিহীন। 

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাই হাতীবান্ধা কৃষি ব্যাংকের সামনে আওয়ামী লীগের একটি মিছিলের ভিডিও ধারণ করার সময় হামলার শিকার হন সাংবাদিক আব্দুর রহিম। এ ঘটনায় গত ৩ মার্চ ৪৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে হাতীবান্ধা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু তদন্ত ছাড়া ওসি ওই দিনই মামলাটি নথিভুক্ত করেন। সেই মামলায় বিএনপির পদধারী ২৩ নম্বর আসামি মমিনুর ইসলাম মমিন উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি ও ৪৫ নম্বর আসামি সাহিনুর রহমান ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড কৃষক দলের সভাপতি। 

এছাড়া অনেক নিরীহ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলাকে কেন্দ্র করে মামলার বাদীর একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেই রেকর্ডে হাতীবান্ধা থানার ওসির মামলা বাণিজ্যের কথোপকথন ভাইরাল হয়। এরপর থেকে উপজেলা শহরজুড়ে চলে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম