
নগরীর মুসলমানপাড়ায় তালাবওয়ালা জামে মসজিদের ২২৬ ফুট উচ্চ মিনারটি খুলনা বিভাগের সর্বোচ্চ মিনার। দূর-দূরান্ত থেকেই দৃষ্টি কাড়ে মিনারটি। মসজিদটির রয়েছে চারটি গম্বুজ। মসজিদ প্রাঙ্গণের সঙ্গে রয়েছে জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা। দৃষ্টিনন্দন মসজিদটি দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করার জন্য প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম নানাভাবে সৌন্দর্য বাড়ানো হয়েছে।
মসজিদের প্রাঙ্গণে সুপারি, নারকেল গাছ, ক্যাকটাস, ঝাউগাছ ও অর্কিডে দিয়ে গাছ লাগানো। ভেতরে রয়েছে আর্ন্তজাতিকমানের লাইট, ফিটিংস এবং কাঠের কারুকার্য।
মসজিদের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, নানান শিল্পকলায় সৌন্দর্য বাড়ানো হয়েছে মসজিদটির। রাতের বেলার আলোকসজ্জায় নজর কাড়ে সবার। মসজিদের রয়েছে দৃষ্টিনন্দন শাহিগেট। সব থেকে আকর্ষণীয় বিষয় হলো মসজিদের ভেতরে বিভিন্ন পশুর চামড়ায় খোদাই করা কুরআনের বাণী। মসজিদটির বাইরে ও ভেতরে সর্বত্রই সাদা টাইলসে মোড়ানো। ভেতরের চিত্রের মতো মসজিদের বাইরের চিত্রও আকর্ষণীয়। রাস্তার পাশে মসজিদের বাউন্ডারি ওয়ালের গাঁ ঘেষে প্লাস্টিকের ড্রামে সারিবদ্ধ ঝাউগাছের কারণে বাইরের সৌন্দর্য বাড়ছে। এছাড়া যারা দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে পারে না তাদের জন্য মসজিদের ভেতরে রয়েছে নারকেলের গাছ দিয়ে তৈরি করা সুন্দর বসার ব্যবস্থা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৬৭ সালে খুলনা মহানগরীর মুসলমানপাড়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় ‘জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা’। এ মাদ্রাসার দৃষ্টিনন্দন মসজিদ তালাবওয়ালা জামে মসজিদ। আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরির (রহ.) অনুপ্রেরণায় বিশিষ্ট সমাজসেবক মরহুম হাজি আবদুল হাকিম জমাদ্দারের পৃষ্ঠপোষকতায় মাওলানা মুজিবুর রহমান (রহ.) এটি প্রতিষ্ঠা করেন।
এ মসজিদ নির্মাণকাজ, নির্মাণশৈলী এবং চারপাশের পরিবেশের জন্য দর্শনার্থীদের কাছে বিখ্যাত। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা এখানে নামাজ পড়তে আসেন।
স্থানীয় বাসিন্দা চিকিৎসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ মাদ্রাসা ও মসজিদটি খুলনার নজর কেড়েছে। পদ্মার এপারে নামকরা ও দৃষ্টিনন্দন মসজিদ তালাবওয়ালা মসজিদটি। দূর-দূরান্ত থেকে অনেক পর্যটক এটা দেখতে আসে। এখানে সুন্দর মিনার, গম্বুজ ও গেট আছে।
মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজ হোসেন জানান, মাদ্রাসার শিক্ষার মান অনেক ভালো। মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে মসজিদটি আরও সুন্দর। বিভিন্ন পশুর চামড়ায় হাদিস লেখা আছে। যারা বসতে পারে না তাদের জন্য বসার চেয়ার রয়েছে।
যশোর থেকে আসা রেজওয়ান জানান, আমি একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। এখানে এসেছি ট্রেনিংয়ের জন্য। অনেক স্থানে আমরা নামাজ পড়ি। মাদ্রাসা প্রাঙ্গণের মসজিদে নামাজ পড়তে ভালো লেগেছে। জুমার দিন ছাড়াও মসজিদে অনেক মুসল্লি।
মসজিদটির পেশ ইমাম ও মাদ্রাসার শিক্ষক মো. ইমাম হুসাইন বলেন, এটা অনেক পুরাতন এবং ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসা ও মসজিদ। বর্তমানে এগুলো দেখভাল করছেন মো. আব্দুল জব্বার জমাদ্দার। মাদ্রাসার গেট ও মিনার সৌন্দর্য বর্ধন তারই অবদান। প্রায় দুই হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন। এখানে দূর-দূরান্ত থেকে নামাজ পড়তে আসেন মুসল্লিরা।