রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলে আবারও রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সাপের ভয়ে ক্ষেতে কাজ করতে যেতে পারছেন না শ্রমিকরা। ফলে জমির ফসল তোলা, ফসল পরিচর্যা ও গবাদি পশুর খাবার (ঘাস) সংগ্রহ করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চরাঞ্চলের কয়েক হাজার কৃষক। 

জানা গেছে, গত তিন সপ্তাহ ধরে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের চর মজলিশপুর, চর মহিদাপুর এলাকায় কয়েক দিনে তিনজনকে রাসেল ভাইপার সাপ কামড় দিয়েছে। এদের মধ্যে দুজন ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং একজন সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন। এ নিয়ে পদ্মা তীরবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন।

চরাঞ্চলের বাসিন্দা আলমাস শেখ জানান, আমার ছেলে সাগর শেখ দুদিন আগে ভুট্টা ক্ষেতে ওষুধ দিতে গিয়েছিল। সেখান থেকে তাকে রাসেল ভাইপার সাপ ছোবল দেয়। আমরা তাকে দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে  ভর্তি করেছি। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে।

চর মজলিসপুরের বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, তার ছেলে শুরুর শেখকে তিন সপ্তাহ আগে মিষ্টি কুমড়া খেতে রাসেল ভাইপার ছোবল দেয়। সেখান থেকে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, ১৫ দিন পরে কিছুটা সুস্থ হলে বাসায় নিয়ে এসেছি। তবে এখনো সে পরিপূর্ণ সুস্থ হয়নি।

কৃষকরা জানান, গত বছর রাসেল ভাইপার সাপের আতঙ্ক দেখা দিয়েছিল, তবে মাঝের কিছুটা সময় এ সাপের আতঙ্ক কম ছিল। সেটা আবার বেড়েছে। সাপ আতঙ্কে মাঠে কাজের লোক পাওয়া যাচ্ছে না। এতে গৃহস্থ্যরা ফসল কেটে ঘরে আনতে পারছেন না।  

স্থানীয়রা জানান, চরাঞ্চলে শত শত বিঘা জমিতে ভুট্টা, বাদাম, তিল, আমন ও আউশ ধানের চাষ করা হয়। কিন্তু ফসলের জমিতে বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার দেখা দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কয়েক হাজার কৃষক। শ্রমিক সংকটে ফসল কাটা ও পরিচর্যা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান বলেন, রাসেল ভাইপার নিয়ে আমরা দ্রুত চরাঞ্চলে সচেতনতামূলক উঠোন বৈঠকের আয়োজন করব। পাশাপাশি স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সমন্বয়ে ওই এলাকার বাসিন্দাদের সুরক্ষার জন্য গামবুট, হ্যান্ড গ্লাভসসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।