
রাজশাহীর মাঠজুড়ে এখন চলছে বোরো ধানকাটার উৎসব। ব্যস্ত রয়েছেন কৃষক। ইতোমধ্যে ২৫ শতাংশ জমির ধান মাঠ থেকে ঘরে তুলেছেন চাষিরা। করছেন মাড়াই। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় হয়েছে এবার রাজশাহীতে বোরোর বাম্পার ফলন। দামও ভালো। ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত এ অঞ্চলের কৃষক। তবে এখনও কৃষকদের মনে আতঙ্ক। তারা বলছেন, এখনও ৭৫ শতাংশ আধাপাকা ধান জমিতে রয়েছে। শিলাবৃষ্টি হলে ব্যাপক ক্ষতি হবে।
জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার কাদিপুর গ্রামের কৃষক আজমল হক। ছয় বিঘা জমিতে
বোরো আবাদ করেছেন তিনি। আজমল হক বলেন, ‘দুই বিঘা জমির ধান কাটার পর মাড়াই করেছি। ফলন
হয়েছে ৪৯ মণ। আশা করছি আরও চার বিঘা জমিতে একই ধরণের ফলন হবে। প্রতিবিঘা জমির আবাদে
খরচ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা। ধানের দামও ভালো আছে। এবার ধান চাষে লাভ হবে।’
পবা উপজেলা ভালাম এলাকার কৃষক আব্দুল আলিম বলেন, ‘তিন বিঘা জমিতে ৭৩
মণ ধান হয়েছে। আরও চার বিঘা জমির ধান মাঠে রয়েছে। এবার ফলন ভালো হয়েছে। শিলাবৃষ্টি
না হলে ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারবো। তাই চেষ্টা করছি, দ্রুত ধান কেটে বাড়িতে আনার। ধান
কেটে ঘরে তুলতে পারলেই সব দুশ্চিন্তা দূর হবে।’
তানোর উপজেলার ধানতৈড় গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ বিঘা জমির
মধ্যে দুই বিঘার ধান কেটেছি। মাড়াইয়ের পর শুকিয়ে বিক্রি করেছি। মুণ্ডুমালা বাজারে এক
হাজার ৫০০ টাকা করে প্রতিমণ ধান বিক্রি করেছি। গত বছরের চেয়ে ধানের দাম এবার বেশি।
ফলনও ভালো পাচ্ছি।’
অন্য মৌসুমের মত এবারও পদ্মার চরে এক হাজার ৭৬২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের
চাষ হয়েছে। এছাড়া পবার চরে ৮৩৭ হেক্টর, গোদাগাড়ীর চরে ৮০০ হেক্টর ও বাঘার চরে ১২৫ হেক্টর
জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চরেও বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রাজশাহীর উপপরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, ‘এবার
জেলায় ৬৮ হাজার ২৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে চাষিরা ২৫ শতাংশ জমির ধান
ঘরে তুলেছেন। মাড়াইয়ের পর বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ২৪ থেকে ২৫ মণ। ফলন ভালো হয়েছে। দামও
ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা। বৃষ্টি হলে তেমন সমস্যা হবে না। তবে শিলাবৃষ্টি হলে ধানের ক্ষতি
হবে। তাই পাকা ধান মাঠে না রাখার বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’