সাংবাদিক হাসসান আতিকের ওপর হামলার ৪৮ ঘণ্টা পরও অধরা আসামি

যুগান্তর প্রতিবেদন, টাঙ্গাইল
প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৫, ১০:৪৭ পিএম
-6848618e69012.jpg)
ফাইল ছবি
দৈনিক সময়ের আলোর নিউজ এডিটর কবি ও লেখক হাসসান আতিকের ওপর হামলার ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরও আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
ঈদুল আজহার পরদিন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আতিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার বাঘিল পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় স্বামীকে রক্ষা করতে গেলে হামলায় আহত হন তার স্ত্রীও।
এ ঘটনায় রোববার বাসাইল থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন হাসসান আতিক। এতে প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যদের আসামি করা হয়েছে। তবে মামলার দুদিন পেরিয়ে গেলেও কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক হাসসান আতিক।
তবে বাসাইল থানার ওসি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) জানিয়েছেন, আসামি গ্রেফতারে তারা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছেন। শিগগির তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্তকারী কমকর্তা বাসাইল থানার উপ-পরিদর্শক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত করার পর তারা অভিযান পরিচালনা করবেন। এর আগে রোববার আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করতে না পারায় অভিযান পরিচালনা করতে পারেননি বলে জানান তিনি।
সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনাটিকে পুলিশ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে মামলার দুদিন পেরিয়ে গেলেও আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক আতিক। তিনি বলেন, অতীতেও আনোয়ারের দ্বারা আমি ও আমার পরিবার মিথ্যা মামলাসহ একাধিক হয়রানির শিকার হয়েছি।
মামলা ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আতিকের গ্রামের বাড়ি ঘেঁষে আনোয়ার হোসেন প্রথমে অনুমোদনহীন ধান ভাঙানোর মিল করেছিলেন। পরে সেখানে মসলা ভাঙানোর মেশিন বসান তিনি। অবৈধভাবে স্থাপন করা ওই মিল থেকে বাতাসে মরিচের গুঁড়া ও মসলার ঝাঁঝ পুরো বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তার পরিবারের সদস্যরা অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করছেন। মসলা মিলের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে আনোয়ার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মিলটি চালু রাখেন। যখনই মিলটি বন্ধ করার কথা বলা হতো তখনই নানা ধরনের হুমকি দিতেন আনোয়ার ও তার পরিবারের সদস্যরা।
সর্বশেষ গত রোববার বিকালে আতিকের এক বছরের শিশু সন্তান মরিচের ঝাঁঝ সহ্য করতে না পেরে প্রচণ্ড কান্নাকাটি করতে থাকে। আনোয়ারকে মিলটি কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখতে অনুরোধ করেন আতিক। কিন্তু এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন আনোয়ার। অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে তুলে ধরতে আতিক মোবাইল ফোনে আনোয়ারের আচরণের ভিডিও ধারণ করতে যান। এ সময় আনোয়ার লোহার রেঞ্জ দিয়ে হামলা করেন আতিকের ওপর। পরে তার সঙ্গে হামলায় যুক্ত হন তার স্ত্রী ও মা। এ সময় আতিকের স্ত্রী বাধা দিতে গেলে তার ওপরও হামলা করেন তারা। খবর পেয়ে আতিকের পরিবারের অন্য সদস্য ও স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আহত দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
বাসাইল থানার ওসি জালাল উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনাটিকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। আসামি গ্রেফতারে কোনো ঘাটতি রাখা হবে না। খুব শিগগরিই আসামিদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানান তিনি।