বাড়ির পাশে জমিতে যুবদল নেতার লাশ

যুগান্তর প্রতিবেদন, নবাবগঞ্জ ঢাকা
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৬ পিএম

ঢাকার নবাবগঞ্জে বাড়ির পাশের জমি থেকে আমজাদ হোসেন (৫২) নামে নবাবগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (৬ জুলাই) ভোর ৫টার দিকে উপজেলার মৃধাকান্দা এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার ভোর ৪টার দিকে চেক জালিয়াতির মামলায় দশ মাসের সাজাসংক্রান্ত পরোয়ানা নিয়ে আমজাদ হোসেনকে গ্রেফতারে তার বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। তাকে না পেয়ে পুলিশ ফিরে যান। পুলিশের গাড়ি চলে গেছে জানতে পেরে আমজাদ ঘর থেকে বের হন। পরিবারের ধারণা তিনি ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে গিয়েছিলেন। তবে ভোর ৫টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন তার বাড়ির পাশে ধনচেখেতে আমজাদকে পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের সদস্যদের খবর দেন।
পরে খবর পেয়ে আমজাদকে উদ্ধার করে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপর স্বজনেরা লাশ বাড়িতে নিয়ে যান। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘হত্যা’র অভিযোগ তুলে বিভিন্ন পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে স্থানীয় বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা ও স্বজনেরা আমজাদের বাড়িতে যান।
এমন সংবাদের খবর পেয়ে পুলিশ আমজাদের বাড়িতে গিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন। আমজাদের নামে রাজনৈতিকসহ অন্তত ২৭টির বেশি মামলা আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। একটি চেক জালিয়াতির মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রায় এক বছরের সাজা পরোয়ানাও ছিল। লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন পুলিশ।
আমজাদের স্ত্রী মাহফুজা বেগম বলেন, সকালে স্বামী বাসা থেকে বের হওয়ার পরে খবর পাই- বাড়ির পাশে তিনি আহত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আমজাদের ভাই জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমার ভাই রাজনীতি করে। তার অনেক প্রতিপক্ষ আছে। পুলিশ তাকে ধরতে আসলেও সে কেন ওখানে গিয়ে পড়ে মারা গেল? এটা আমরা বুঝতে পারছি না।
নিহতের বড় মেয়ে আশা আক্তার বলেন, বাবার মুখে ও চোখের কোণে জখমের চিহ্ন আছে। বাবাকে কেউ হত্যা করেছে কি না, তা এখনো বলতে পারব না।
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, আমজাদ হোসেনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত করাটা জরুরি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
ভোররাতে গ্রেফতার অভিযানের বিষয়ে ওসি বলেন, আমজাদের নামে সাজার পরোয়ানা ছিল। পুলিশ ভোর ৪টায় তাকে ধরতে যায়। বাসার দরজা না খোলায় পুলিশ ফিরে আসে। পরে স্থানীয় লোকজন মোবাইল ফোনে আমজাদের মৃত্যুর খবর জানান।
অভিযানে অংশ নেওয়া এসআই রাজিবুল ইসলাম ও দেলোয়ার হোসেন বলেন, তারা আমজাদের বাড়িতে ঢোকেননি।
এদিকে আমজাদের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঢাকা-১ আসনের সাবেক এমপি ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নানের মেয়ে বিএনপি নেত্রী মেহনাজ মান্নান তার বাড়িতে যান। তিনি নিহতের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, আমজাদ দলের একজন ত্যাগী নেতা ছিলেন। অনেক মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন তিনি। তার এভাবে রহস্যজনক মৃত্যুর কারণ জানতে প্রশাসনের সহযোগিতা চাচ্ছি।