রাজবাড়ীতে নিজের তৈরি উড়োজাহাজ উড়িয়ে সাড়া ফেলেছে কিশোর রাহুল
হেলাল মাহমুদ, রাজবাড়ী
প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১০:২৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নিজে উড়োজাহাজ বানিয়ে- তা আকাশে উড়িয়ে সাড়া ফেলেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির প্রত্যন্ত বারমল্লিকা গ্রামের ২ নম্বর ওয়ার্ডের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র রাহুল শেখ (১৫)।
জানা যায়- ছোট বেলা থেকে রাহুলের স্বপ্ন ছিল একদিন সে বড় বিজ্ঞানী হবে। সেই স্বপ্নের প্রথম ধাপেই নিজের হাতে উড়োজাহাজ বানিয়ে ফেলেছে। উড়োজাহাজের নাম দিয়েছে- বাংলাদেশ বিমান ৭৮৭ ‘অচিন পাখি’। যা সফলভাবে আকাশে ওড়াতেও সক্ষম হয়েছে সে। মাত্র চার দিনের কঠোর পরিশ্রমে উড়োজাহাজ তৈরি করে সে এখন ভাইরাল। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নারী-পুরুষসহ মানুষজন তার বাড়িতে উড়োজাহাজ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। রাহুলের এই সাফল্য শিক্ষক, সহপাঠী ও এলাকাবাসীকে অবাক করে দিয়েছে।
রাহুল বালিয়াকান্দি উপজেলার বারমল্লিকা গ্রামের কৃষক শামসুল শেখের ছেলে। সে স্থানীয় রামদিয়া বেনীমাধব বিপিনচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।
বুধবার বিকালে রাহুলের পরিবারের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, রামদিয়া বেনীমাধব বিপিনচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র রাহুলের বাবা মো.শামসু শেখ একজন কৃষক। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে রাহুল ছোট। মাত্র ১৫ হাজার টাকা খরচে তৈরি এই উড়োজাহাজের পেছনে রাহুলের ছিল অদম্য ইচ্ছাশক্তি, ইউটিউব থেকে শেখা জ্ঞান, আর প্রচুর ধৈর্য। প্রথম মডেলটির ওজন বেশি হওয়ায় উড়তে ব্যর্থ হলে অনেকে হাসাহাসি করলেও সে দমে যায়নি। দিনরাত পরিশ্রমের পর অবশেষে নিজের হাতে বানানো উড়োজাহাজটি আকাশে ওড়াতে সক্ষম হয় রাহুল। ছোট-খাটো নানা গ্যাজেট বানানোর কারণে রাহুল এখন গ্রামে ‘ক্ষুদে বিজ্ঞানী’ হিসেবে পরিচিত।
উড়োজাহাজ তৈরি করা রাহুল বলে, মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এবং নিজে কিছু টাকা জমিয়ে মোটর, ব্যাটারি ও রিমোট কন্ট্রোলসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কিনে মাত্র চার দিনে আমি বিমানটি নিজের হাতে তৈরি করেছি। বিমানটি আকাশে উড়তে দেখে আমার মন ভরে যাচ্ছে। আমার বিমান দেখতে অনেক মানুষ ভিড় করছেন। এতে আমি অনেক খুশি।
রাহুলের প্রতিবেশী জামান সেখ বলেন, রাজবাড়ী জেলার মধ্যে একমাত্র রাহুল এমন একটি বিমান তৈরি করেছে। ও আমাদের জেলার গর্ব। ওর জন্য অনেক দোয়া করি, ও অনেক বড় হোক।
রাহুলের মা আলেয়া বেগম বলেন, আমার ছেলে দিনরাত পরিশ্রম করে বিমানটি তৈরি করেছে। প্রতিদিনই বিমানটি দেখতে বাড়ির ওপর অনেক লোকজন আসে। আমার কাছে অনেক ভালো লাগছে। আমার ছেলে ভবিষ্যতে আরও অনেক বড় কিছু আবিষ্কার করবে এই দোয়া করি।
রাহুলের বাবা শামসুল শেখ বলেন, আমি কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমার দুই ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে রাহুল সবার ছোট। ও শুধু বিমানই নয়, আমার ছেলে ফ্যান-লাইটসহ অনেক কিছু বানিয়েছে। এসব জিনিস তৈরির প্রতি ওর ঝোঁক বেশি। আমিও চাই এই লাইনেই ও নিজের মতো করে বড় হোক। আমার পক্ষ থেকে যতদূর সহযোগিতা করার আমি করব।
